সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪  |   ২১ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   প্রাইভেটকারের ধাক্কায় বুয়েট শিক্ষার্থী নিহত: ডোপ টেস্টে ধরা পড়ল মাদকাসক্তি
  •   সাতক্ষীরায় ব্যবসায়ীর ২৩ লাখ টাকা ছিনতাই: স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ
  •   চাকা পাংচার হওয়ায় এনজিও কর্মকর্তার মৃত্যু
  •   বরগুনায় টিকটক নিয়ে পারিবারিক কলহ: স্ত্রীকে হত্যা, স্বামী আত্মহত্যার চেষ্টা
  •   মানব পাচারের চক্রের বিরুদ্ধে বিজিবির সফল অভিযান: কিশোরী উদ্ধার, তিন আটক

প্রকাশ : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৩৩

মোটরসাইকেল নয়, এটা যেনো মৃত্যু কিনে হাতে তুলে দেয়া--

অনলাইন ডেস্ক
মোটরসাইকেল নয়, এটা যেনো মৃত্যু কিনে হাতে তুলে দেয়া--

চাঁদপুর কণ্ঠে গতকাল মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় দুটি পৃথক স্থানে তিন যুবকের মৃত্যুর খবর ছাপা হয়েছে। 'ফরিদগঞ্জে অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ : ফরিদগঞ্জের সুবিদপুরে নিহত ২' শিরোনামের খবরটিতে এমরান হোসেন লিটন লিখেছেন, ফরিদগঞ্জে সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে ইকবাল খান ও শাহাদাত হোসেন নামে দুই যুবক নিহত হয়েছেন। শনিবার (২২ ডিসেম্বর ২০২৪) দুপুর ১২ টার দিকে ফরিদগঞ্জ উপজেলার সুবিদপুর ইউনিয়নের বদরপুর রাস্তার মাথায় ওয়াপদা রাস্তার ওপর এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ইকবাল খান (১৯) মুলপাড়া হাজী বাড়ির খাজে আহমদ খানের দ্বিতীয় ছেলে। ইকবাল খান একজন ছাত্র এবং তিনি মূলপাড়া কারিগরি কলেজে অধ্যয়নরত ছিলেন। অন্যদিকে গুরুতর আহত শাহাদাত হোসেন (১৯) মুলপাড়া মজুমদার বাড়ির ওবায়দুল হক মজুমদারের ছোট ছেলে। তার অবস্থা বেশি গুরুতর হওয়ায় তাকে ঢাকায় রেফার করা হয়। কিন্তু তার বড়ো ভাই হাবিব মজুমদার কাচপুর ব্রিজ থেকে ফোন করে জানিয়েছেন, তার ভাই শাহাদাত হোসেনও মারা গেছেন এবং তাকে নিয়ে বর্তমানে চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে চলে আসছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ইকবাল খান ও শাহাদাত হোসেন একই মোটরসাইকেলে করে একতা বাজার থেকে পূর্ব দিকে মুন্সিরহাট বাজারের দিকে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে বদরপুর রাস্তার মাথায় গেলে একপাশে ছিলো যন্ত্র দানব ট্রাক্টর, অপর পাশে অটোবাইক। এমতাবস্থায় পূর্ব দিক থেকে পশ্চিম দিকে আসা সিএনজি অটোরিকশার সাথে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে ইকবাল ও শাহাদাত দুর্ঘটনার শিকার হন। স্থানীয়রা দুজনকে উদ্ধার করে চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্মরত চিকিৎসক ইকবাল খানকে মৃত ঘোষণা করেন। আর শাহাদাতের অবস্থা গুরুতর দেখে তাকে ঢাকায় রেফার করেন। দুর্ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

'রায়পুরে সড়ক দুুর্ঘটনায় ফরিদগঞ্জের কিশোরের মৃত্যু' শিরোনামের খবরটিতে প্রবীর চক্রবর্তী লিখেছেন, মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় তানজীম আবদুল্লাহ (১৮) নামে এক কিশোরের করুণ মৃত্যু হয়েছে। নিহত কিশোরের বাড়ি ফরিদগঞ্জ উপজেলার ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নের হর্ণি দুর্গাপুর গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের শাহজাহানের ছেলে ও স্থানীয় হর্ণি দুগাপুর সিনিয়র মাদ্রাসার আলিম ২য় বর্ষের ছাত্র। শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেলে লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার বাসাবাড়ি এলাকার কালু পাটোয়ারীর বাড়ির সামনে লক্ষ্মীপুর-রায়পুর সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করে নিহত তানজীমের ভাই শাহাদাত শনিবার (২১ ডিসেম্বর ২০২৪) সকালে জানান, শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর ২০২৪) বিকেলে রায়পুর উপজেলার বাসাবাড়ি এলাকার কালু পাটোয়ারীর বাড়ির সামনে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি অটোরিকশাকে সাইড দিতে গিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কে পড়ে গেলে গুরুতর আহত হন তানজীম। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তার মৃত্যু হয় বলে জানান কর্মরত চিকিৎসক ডা. কমলাশীষ রায়। তিনি আরো বলেন, পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে। কারো বিরুদ্ধে আমার পরিবারের কোনো অভিযোগ নেই।

ইদানিং মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় কিশোর-যুবকের প্রাণহানির সংবাদ যেনো মামুলি ঘটনায় পরিণত হয়েছে। পিতা প্রবাসী বা অবস্থাপন্ন হলেই হলো, তার কিশোর-যুবক বয়সী পুত্র মোটরসাইকেল কেনার বায়না ধরবেই। যে পিতা বা মাতা এমন বায়না পূরণ করেন, তারা যেনো মৃত্যুকেই কিনে হাতে তুলে দেন। মোটরসাইকেল পেলেই হলো, প্রায় সকল কিশোর-যুবক রাস্তায় বেপরোয়া গতিতে সেটা চালাবেই। কেননা এটাকে তারা ফ্যাশন/বীরত্ব প্রকাশের মতো কিছু একটা ভাবে। আর এতেই অনেকে ভবে থাকতে পারে না। ভবলীলা সাঙ্গ করে তারা চলে যায় পরপারে। বাংলাদেশ আইনমান্যতার সংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ কোনো দেশ নয়। এখানকার রাস্তায় বা সড়কে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন করে অনায়াসে পার পাওয়া যায়। সেজন্যে বেপরোয়া গতির মোটরসাইকেল চালানো যুবকরা ট্রাফিকের কাছে পার পেলেও মৃত্যুদূত আজরাইলের কাছে পার পায় না। নিশ্চিত পরপারই হয় তাদের অসময়ের গন্তব্য, কিংবা চিরস্থায়ী ঠিকানা। এটা রোধে আমাদের পুত্রবৎসল পিতা/মাতাকে স্নেহ/মমতা/ আবেগ প্রকাশের সস্তা প্রক্রিয়া থেকে বেরিয়ে আসতেই হবে, অন্যথায় তাদের পুত্রদের মোটরসাইকেলের বলি হতেই হবে, যেটা থেকে মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা অতীব ক্ষীণ।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়