বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫  |   ২৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:১৪

নিষ্কৃতি

বিমল কান্তি দাশ
নিষ্কৃতি

এই মহাবিশ্ব প্রপঞ্চ কবে কখন কী সন্ধানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তার কিন্তু কোনো ঐতিহাসিক ব্যাখ্যা নেই। মানুষ নামক জীবশ্রেষ্ঠ প্রাণীর জীবাশ্ম সর্ব প্রথম ৬ থেকে ২ মিলিয়ন বছর আগে উত্তর আফ্রিকায় পাওয়া গিয়েছিল। আধুনিক মানুষ (হোমো স্যাপিয়েন্স) হলো হোমোমিনা উপজাতির, যেমন শিম্পাঞ্জি, গরিলা ও বনমানুষের প্রাকৃতিক উন্নত সংস্কার মাত্র। প্রচলিত বৈজ্ঞানিক বিগ ব্যাং তত্ত্ব অনুযায়ী, প্রায় ১০.৭৮৭+০.০২০ বিলিয়ন বছর আগে এই মহাবিশ্ব প্রসারিত হতে হতে আধুনিক ধরাধামের উদ্ভব ঘটে। এখানে সাতটি মহাদেশ এবং জাতিসংঘ কর্তৃক স্বীকৃত দেশের সংখ্যা ১৯৩। এ ছাড়া এ মহাবিশ্বের মাঝে মানুষ এবং পৃথিবী নামক গ্রহটির সৃষ্টির আদি তত্ত্বের ওপরে বিজ্ঞানভিত্তিক কোনো যুক্তি-তথ্য প্রযুক্তি আমার এই ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র জ্ঞানাতীত। তবে এর পেছনে মতান্তরে ধর্মীয় মতবাদ রয়েছে।

জানা যায়, আদি মানব গোষ্ঠী ছিলো অনাবৃত। ক্রমে এদের মধ্যে লজ্জার অনুভূতি জন্মালে গাছের ছাল-বাকল দিয়ে তা নিবারিত হতো। সৃষ্টির আদিকাল থেকেই একজন পূর্ণাঙ্গ মানুষ চৌদ্দটি ইন্দ্রিয় নিয়ে জন্মায়। যেমন : চক্ষু, কর্ণ, নাসিকা, জিহ্বা, ত্বক এই পাঁচটি উপলব্ধি বা জ্ঞানেন্দ্রিয়; বাক, পানি, পাদ, পায়ু, উপস্থ এই পাঁচটি কর্মেন্দ্রিয়; মন, বুদ্ধি, অহংকার, চিত্ত এই চারটি অন্তরিন্দ্রিয়। এর যে কোনোটির অভাবই হলেই প্রতিবন্ধী বা বিকলাঙ্গ।

সৃষ্টি তত্ত্বের বিভিন্নতার রহস্যে দশ পর্বের প্রাণীর মধ্যে কর্ডেটা পর্বের প্রাণীরাই উৎকৃষ্ট। তবে উৎকৃষ্টতম প্রাণী হলো হোমো সেপিয়েন্স তথা মানুষ। এরা পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানের বিভিন্ন জলবায়ু এবং ভূপ্রকৃতির প্রভাবে আর চারটি অন্তরিন্দ্রিয়ের প্রভাবে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন হয়ে থাকে। তবে আদি যুগের আর্য সমাজের ঋষিগণ যে মৌন থেকে অন্তর্র্দশন করে যেসব চির সত্য সনাতনী বাণী রেখে গিয়েছেন তা-ই সমগ্র মানব সমাজের জন্যে চির কল্যাণকর। আর চির অকল্যাণকর কাম-ক্রোধ-লোভ-মোহ-মদ-মাৎসর্য এ গুলোই অ-সনাতনী। প্রাচীন মতে মানব বৈশিষ্ট্য তিন গুণের সমাহার, যেমন সত্ত্ব গুণ হলো ধর্মীয় উন্নত জ্ঞানের প্রকাশ; রজঃ গুণ হলো অহংকার বা গর্ব, আর ত্বম গুণ হলো ক্ষুধা এবং যৌনতার চাহিদা মিটানো। যা হোক সনাতনী চিন্তাধারা হলো ইহলৌকিক এবং পারলৌকিক জীবনশৈলী। মতান্তরে সনাতনের পরে খ্রিস্টপূর্ব ৬২৩ অব্দে গৌতম বুদ্ধ কর্তৃক প্রচারিত বৌদ্ধ মতবাদের মূলনীতি হলো কর্মাযোগ এবং নির্বাণ লাভ। আর অষ্টাঙ্গিক মার্গ ও জন্মান্তর বাদ। ত্রিপিটক হলো মূল গ্রন্থ। তারপর যীশুখ্রিস্ট যিনি খ্রিস্টান ধর্মের প্রবর্তক। সর্বশেষে আবির্ভাব হলেন হযরত মুহাম্মদ (সা.), যিনি ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক। মানব নৈতিকতার মৌলিক পাথেয় হলো জ্ঞান অর্জন করা ।

সকল মানব সন্তান নির্বিশেষে একই কৌশলে মাতৃগর্ভে আসে, আবার সকলেই অজ্ঞাত অজুহাতে প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে পঞ্চভূতে বিলীন হয়ে যায়। তাহলে জাগতিক অসহিষ্ণু হানাহানি, অসভ্যতা-অমানবিকতা-বিষাক্ত অতৃপ্ততা পাশবিক মাত্র। এ থেকে মুক্তি পাওয়ার একমাত্র পথ হলো সকল রাজনৈতিক দলই তার দলের উপদল বিলুপ্ত করে দেওয়া। তা হলেই অযাচিত সামাজিক অস্থিরতা থাকবে না। আর প্রারম্ভিক প্রাথমিক স্তরের শিক্ষায় একান্তই মানবিক নৈতিকতার শিক্ষা সংযুক্ত করলে কিশোর সন্ত্রাসী সমাজে থাকবে না নিশ্চিত।

আমাদের সমাজে সকল স্তরেই মানবতার বিকাশ ঘটুক।

লেখক : কবি ও প্রবন্ধকার; অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র শিক্ষক, বলাখাল যোগেন্দ্র নারায়ণ উচ্চ বিদ্যালয় ও কারিগরি কলেজ, হাজীগঞ্জ, চাঁদপুর।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়