প্রকাশ : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:০৬
হাইমচরের হাফেজ হুমাইরার জন্যে নিরন্তর শুভ কামনা
নীলনদ আর পিরামিডের দেশ মিশরের নতুন রাজধানী ‘প্রশাসনিক কায়রো’তে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করলেন হুমাইরা মাসউদ নামের এক তরুণী। দেশটিতে অনুষ্ঠিত ৩১তম আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় বিশ্বের ৬০টি দেশের প্রতিযোগীদের মাঝে অনারবদের জন্যে নির্ধারিত গ্রুপে পঞ্চম স্থান অর্জন করলেন তিনি। বুধবার (১১ ডিসেম্বর ২০২৪) দেশটির ‘গ্র্যান্ড মসজিদে’ অনুষ্ঠিত চূড়ান্ত প্রতিযোগিতার ফলাফলে দ্বিতীয় গ্রুপের বিজয়ীদের মধ্যে ঘোষণা করা হয় বাংলাদেশী তরুণী হুমাইরার নামটিও।
হাফেজ হুমাইরা অনারবদের জন্যে নির্ধারিত গ্রুপটিতে পঞ্চম স্থান অধিকার করে পুরস্কার হিসেবে পেয়েছেন দুই লাখ মিশরীয় পাউন্ড, বাংলাদেশি মুদ্রায় পাঁচ লাখ টাকা। এই গ্রুপে প্রথম স্থান অর্জনকারী নাইজেরিয়ান তরুণী ফাতেমা আবু বকর পেয়েছেন ছয় লাখ মিশরীয় পাউন্ড, বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৫ লাখ টাকা। বিজয়ী হুমায়রার হাতে পুরস্কার তুলে দেন মিশরের ওয়াকফ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ডক্টর ওসামা আল-আজহারী। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন কায়রোর গভর্নর ড. ইব্রাহিম সাবের, সাবেক মুফতি ড. শাওকি আল্লাম, সুদানের সাবেক ওয়াকফ মন্ত্রী ডক্টর মোহাম্মদ মুস্তফা আল-ইয়াকুতি, প্রতিযোগিতার বিচারক বৃন্দ ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বরা।
চাঁদপুর জেলার হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী গ্রামের মাসউদ আজীজের কন্যা হুমাইরা ২০১০ সালে জর্ডানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায় ২য় স্থান অধিকার করেছিলেন। তিনি নারায়ণগঞ্জের উম্মে আইমান (রা.) আন্তর্জাতিক বালিকা মাদ্রাসা থেকে হেফজ, জামিয়া ইব্রাহিমিয়া আমিনিয়া মহিলা মাদ্রাসা থেকে দাওরা হাদীসে উত্তীর্ণ হয়ে মিশরের বিখ্যাত আজহার ইনস্টিটিউটে সানুবি (উচ্চ মাধ্যমিক) অধ্যয়নরত।
হাইমচরের প্রত্যন্ত এলাকার বাসিন্দা মাসউদ আজীজ তাঁর কন্যা হুমাইরাকে কোরআনে হাফেজ বানানো থেকে শুরু করে ধর্মীয় শিক্ষায় দেশে অবস্থিত আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়িয়ে তাঁর মেধার যথার্থ বিকাশে পিতা হিসেবে যে ভূমিকা রেখেছেন, যে বিনিয়োগ করেছেন, সেটা একবিন্দুও বিফলে যায়নি। হাফেজ হুমাইরা আন্তর্জাতিক পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে ইতোমধ্যে দ্বিতীয় ও পঞ্চম হবার যে কৃতিত্ব দেখিয়েছেন, সেটা অসাধারণ। তিনি বর্তমানে মিশরে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে পড়ছেন। তাঁর শিক্ষা জীবনের বাকি সময়টাতে তিনি যথার্থ প্রণোদনা ও প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় প্রথম হবার সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা তাঁর জন্যে চাঁদপুর জেলাবাসীর পক্ষে নিরন্তর শুভ কামনা করছি।