শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৬ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ২০ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০৮

পুলিশ কঠোর ব্যবস্থা না নিলে মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিরল হয়ে যাবে

অনলাইন ডেস্ক
পুলিশ কঠোর ব্যবস্থা না নিলে মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিরল হয়ে যাবে

মাদকের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলেই যেখানে কেউ রেহাই পায় না, সে স্থানটি হচ্ছে ফরিদগঞ্জ। প্রায়শই আমরা ফরিদগঞ্জে মাদকসেবী ও ব্যবসায়ীদের হাতে মাদকের বিরুদ্ধে অবস্থানগ্রহণকারীদের আহত হবার সংবাদ পাই। গতকালও চাঁদপুর কণ্ঠে ছাপা হয়েছে এমন একটি সংবাদ। 'ফরিদগঞ্জে মাদক বিক্রি ও সেবনে বাধা দেয়ায় কুপিয়ে আহত' শিরোনামের সংবাদটিতে লিখা হয়েছে, ফরিদগঞ্জে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে মাদক সেবনকারীরা। মাদক বিক্রি ও সেবনে বাধা দেয়ায় বিদেশ ফেরত মোকলেছুর রহমান (৫৪)কে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়েছে। ১৪ অক্টোবর সোমবার রাতে উপজেলার পাইকপাড়া উত্তর ইউনিয়নের পশ্চিম ভাওয়াল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। স্থানীয় বাসিন্দা ও মোকলেছুর রহমানের স্বজনরা জানান, স্থানীয় মাছুম পাটওয়ারী (২১), রনি (২৫), সৈকত (২৪) ও খলিলুর রহমান (২২)সহ ৭/৮ জন যুবক পশ্চিম ভাওয়াল গ্রামে প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি ও সেবন করে আসছিলো। সোমবার রাতে মোকলেছুর রহমানের বাড়ির পাশে কিছু লোক মাদক সেবন করছিলো। এ সময় তাদের অন্য স্থানে যেতে বলেন মোকলেছ। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা সেখান থেকে চলে যায়। পরে আরো কয়েকজন মাদকসেবী একত্রিত হয়ে রামদা ও দেশীয় অস্ত্রসহ অতর্কিত হামলা চালিয়ে মোকলেছের মাথায়, হাতে ও পায়ে কোপায়। এ সময় তার ডাক-চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে হামলাকারী মাছুমকে আটক করলেও অন্যরা পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা রক্তাক্ত অবস্থায় মোকলেছকে উদ্ধার করে চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে পুলিশ মাছুমকে তার বাবা শাহাদাত পাটওয়ারীর জিম্মায় রেখে আসেন এবং পরের দিন ১৫ অক্টোবর মঙ্গলবার সকালে থানায় নিয়ে আসতে বলেন। সে আলোকে মাছুমের বাবা তাকে পরদিন থানায় নিয়ে যান এবং মোকলেছুর রহমানের দায়ের করা মামলায় মাছুমকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। মামলা নং- ১১ তারিখ ১৫-১০-২০২৪ খ্রিঃ।

পাইকপাড়া উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের ৫নং ওয়ার্ড সদস্য রায়হানুল কবির বলেন, মাদক সেবনে বাধা দেয়ায় মাছুম পাটওয়ারী, রনি, সৈকত ও খলিলুর রহমানসহ আরো কয়েকজন মিলে মোকলেছকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। তারা প্রতিনিয়ত এলাকায় মাদক বিক্রি ও সেবন এবং কিশোর গ্যাং তৈরি করে এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে আসছে। ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ হানিফ সরকার বলেন, খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। এ ঘটনায় নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং প্রধান আসামি মাছুম পাটওয়ারীকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

উপরোল্লিখিত ঘটনার আলোকে তিক্ত হলেও এই সত্য উচ্চারণ করা দরকার যে, পুলিশ সুপার সংবাদ সম্মেলনে এবং থানার ওসি মতবিনিময় সভায় মাদকের বিরুদ্ধে 'জিরো টলারেন্স' ঘোষণা দিলেই কোনো এলাকায় মাদক বন্ধ হয়ে যায় না। সেজন্যে মাদকবিরোধী ব্যাপক প্রচারণা ও সচেতনতামূলক ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করতে হয়। এক্ষেত্রে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, কমিউনিটি পুলিশিং, বিট পুলিশিং, যুব ও সমাজসেবামূলক সংগঠনকে সম্পৃক্ত করে কিংবা কাজে লাগিয়ে মাদকের বিরুদ্ধে সমন্বিত ও সম্মিলিত প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তুলতে হয়। এমনটি করলে মাদকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যক্তির একক প্রতিবাদও ফল দেয়, মাদকসেবী ও ব্যবসায়ীরা যতো শক্তিশালী হোক না কেনো, প্রতিবাদকারীর বিরুদ্ধে কোনো কিছু করার সাহস পায় না, যেহেতু চার পাশের পরিবেশ তাদের অনুকূলে থাকে না। মাদকের বিরুদ্ধে শক্তিশালী ক্ষেত্র তৈরি না করে মাদকের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স ঘোষণা দেয়া এবং তাতে কোনো ব্যক্তি উদ্বুদ্ধ হয়ে মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলে ফরিদগঞ্জের মোকলেছের মতো মার খেতে হবে, জীবন বিপন্ন করতে হবে। এমতাবস্থায় পুলিশ তার দায়িত্ব মোটেও এড়াতে পারে না। যেভাবেই হোক, পুলিশকে নিতে হবে কঠোর ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থা না নিলে মাদকের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস ক্রমশ বিরল ঘটনায় পরিণত হবে।

চাঁদপুর জেলা পুলিশকে একটা বিষয়ে ভেবে দেখতে হবে যে, ফরিদগঞ্জে কেন বারবার মাদকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে গিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তি মার খাচ্ছে?--নিশ্চয়ই সেখানে মাদকের ব্যাপকতা-বিস্তার প্রকাশ্য ও অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। এটি দেখে প্রতিবাদী চেতনায় বেশি উজ্জীবিত ব্যক্তিমাত্রই পরিণাম ভেবেও চুপ থাকতে পারেন না। কাজেই মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশকে অন্যান্য উপজেলার চেয়ে ফরিদগঞ্জের দিকেই বেশি মনোনিবেশ করতে হবে বলে আমরা মনে করি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়