রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪  |   ১৯ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ২৫ আগস্ট ২০২১, ০০:০০

জ্ঞানতাপস ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্

ফারজানা সুমাইয়া

জ্ঞানতাপস ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্
অনলাইন ডেস্ক

ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ ছিলেন উপমহাদেশের একজন প্রথিতযশা ভাষাশাস্ত্রী। তিনিই সর্বপ্রথম বাংলা ভাষাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বিবেচিত করার যুক্তি প্রদান করেন। বর্তমানের বিভক্ত ভারতীয় উপমহাদেশের মুসলিম জাগরণ এবং বাঙালির চেতনা বিকাশের অগ্রদূত হিসেবে স্বীকৃত হয়েছিলেন তিনি।

গত ১০ জুলাই ছিলো এই ‘চলন্ত এনসাইক্লোপিডিয়া’র ৫২তম জন্মবার্ষিকী। বাংলা ভাষার উৎকর্ষ সাধনে ভূমিকা রাখায় তাকে বলা হত ‘চলন্ত এনসাইক্লোপিডিয়া’। কীর্তিমান এই ভাষাতত্ত্ববিদ ১৮৮৫ সালে অবিভক্ত ভারতের চব্বিশ পরগনা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মফিজউদ্দীন আহমদ। পিতা ছিলেন পীর গোরাচাঁদের দরগাহর খাদেম। এই পেশাই অবলম্বন হওয়ার কথা ছিলো মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ কিন্তু ব্যতিক্রমী শহীদুল্লাহ্ সেই পেশা থেকে বের হয়ে ভাষা ও জ্ঞানচর্চায় ব্রতী হন। ছোটবেলা থেকেই ছিলো বিভিন্ন ভাষা শিক্ষার প্রতি প্রবল আগ্রহ। হাওড়া জেলা স্কুল থেকে এন্ট্রাস পাস করার পর তিনি প্রেসিডেন্সি কলেজে পড়েন। কলকাতা মাদ্রাসার একটি ইউনিট তখন তার সাথে যুক্ত ছিলো সেখান থেকে এফএ (বর্তমান এইচএসসি) পাস করার পর ১৯১০ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। এমএ পাস করার পর জার্মানিতে গিয়েছিলেন ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্। সেখানে জার্মানি, ফরাসিসহ বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় ভাষাও শিখেছিলেন তিনি। দেশে থাকাকালীন বাংলা ভাষার পাশাপাশি ইংরেজি, উর্দু, আরবি ও ফরাসি ভাষায় দক্ষতা অর্জন করেন। ১৯২৮ সালে প্যারিসের সরবোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন। পরবর্তীতে ১৯২১ সাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার কাজ চালিয়ে যান।

জ্ঞানতাপস নামেই পরিচিত মহান এই ভাষাশাস্ত্রী। বহুভাষাবিদ মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্্ বাংলা সাহিত্যের বহু জটিল সমস্যার সমাধান করেন। তিনি নিজের কীর্তির প্রমাণ রেখেছেন ভাষাবিজ্ঞানের বিশেষ ক্ষেত্রে। বাংলা একাডেমি থেকে বের করা ‘আঞ্চলিক ভাষার অভিধান’ তার সম্পাদিত এক বিশেষ কীর্তি। যে কাজের জন্যে অসামান্য কৃতিত্বের দাবিদার হয়ে ওঠেন তিনি। বাংলা সাহিত্যের প্রথম নিদর্শন ‘চর্যাপদ’ যে বাংলায় রচিত তা প্রথম তিনিই প্রমাণ করেন এবং চর্যাপদের ধর্মতত্ত্ব নিয়ে বিশেষ আলোচনা চালান। ভাষা ক্ষেত্রে তার বিচরণ অবিস্মরণীয়। যার ইতিহাস আমরা পাই তার জীবনী থেকেই। ১৮টি ভাষায় জ্ঞাত ছিলেন তিনি। জীবদ্দশায় বহু মূল্যবান উপাধিতে ভূষিত হন এই কীর্তিমান। পাকিস্তান সরকার কর্তৃক ‘প্রাইড অফ পারফম্যান্স’। ফরাসি সরকার কর্তৃক ‘নাইট অফ দি অর্ডারস অফ আর্ট লেটার্স’ উল্লেখযোগ্য।

১৯৬৯ সালের ১৩ জুলাই ঢাকায় জীবনাবসান ঘটে উপমহাদেশের জাগরণী এই শিক্ষাবিদের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ‘ঢাকা হল’ এবং বর্তমান ‘শহীদুল্লাহ্ হল’-এ শায়িত হন ভাষাবিজ্ঞানী ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়