প্রকাশ : ১৭ আগস্ট ২০২১, ১৫:৫১
প্রশংসায় ভাসছেন জেলা শিক্ষা অফিসার সাহাব উদ্দীন
কচুয়া উপজেলার উত্তর শিবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক প্রয়াত খালেদা আক্তার গত ১৮ জুন ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন (ইন্না.....রাজিউন)। মৃত্যুর পর তার স্বামী জালাল উদ্দীন পেনশনের প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র সংগ্রহ করে ৯ আগষ্ট সোমবার কচুয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসার এএইচএম শাহরিয়ার রসুলের কাছে জমা দেয়। খবর শুনে জেলা শিক্ষা অফিসার সাহাব উদ্দীন উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে প্রক্রিয়াকরণ শেষ করে ফাইলটি দ্রুত চাঁদপুর জেলা শিক্ষা অফিসে প্রেরণের জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। নির্দেশ পেয়ে প্রক্রিয়াকরণ শেষে ১২ আগষ্ট বৃহস্পতিবার ফাইলটি জেলা শিক্ষা অফিসে প্রেরণ করা হয়। তিন দিন সরকারি বন্ধ থাকার কারনে ১৬ আগষ্ট এক কর্মদিবসের মধ্যেই সকল প্রক্রিয়াকরণ শেষে পেনশন আবেদন মঞ্জুর করেন। ওই দিন বিকেলে বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতি কচুয়া উপজেলা শাখার সভাপতি ওমর খৈয়াম বাগদাদী রুমি ও সহকারী শিক্ষক প্রয়াত খালেদা আক্তারের স্বামী এবং সন্তানদের নিকট পেনশন মঞ্জুরের আদেশ কপি তুলে দেন।
|আরো খবর
এতে তিনি মানবিক শিক্ষা অফিসার হিসেবে ভূষিত হয়েছে। তাঁর কতর্ব্য পরায়ণ দায়িত্ব পালনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন মহল অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি মানবিক শিক্ষা অফিসার হিসেবে প্রশংসার জোয়ারে ভাঁসছেন। এছাড়া তিনি প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের অফিসিয়াল সমস্যা দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধান করে প্রশংসিত হয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এক প্রতিক্রিয়ায় জেলা শিক্ষা অফিসার সাহাব উদ্দীন জানান, এটা আমার কর্ম জীবনের দায়িত্ব। দীর্ঘদিন ধরেই প্রয়াত সহকারী শিক্ষিকা ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে ভূগছিলেন। আক্রান্ত হওয়ার খবর পেয়ে তার এবং তার পরিবারের সাথে সব-সময় যোগাযোগ রেখেছি। তার মৃত্যুর দিন রাত ৩ টায় অক্সিজেন প্রয়োজন হলে এক সহকারী শিক্ষক নেতার মাধ্যমে তা পৌছানোর ব্যবস্থা করেছি। এই মর্মাহত ঘটনা আমার জীবনেও ঘটতে পারতো।আমি আমার দায়িত্ববোধ থেকেই এসকল কাজ করেছি। আমি গত সোমবার তার দুই সন্তানদের দেখে জরিয়ে ধরে কান্না থামাতে পারিনি। আমি তাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করছি।
এব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসার এএইচএম শাহরিয়ার রসুলের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, কচুয়া উপজেলার উত্তর শিবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক প্রয়াত খালেদা আক্তার ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে তার পরিবারকে সমবেদনা জানাই। এবং তার স্বামী জালাল উদ্দীনকে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রয়াত খালেদার পেনশনের জন্য প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র নিয়ে আবেদন করার জন্য অনুরোধ জানাই। গত ৯ আগষ্ট প্রয়াত খালেদার পেনশনের আবেদন আমার হাতে আসলে জেলা শিক্ষা অফিসারের নির্দেশে দ্রুত সময়ে সকল প্রক্রিয়াকরণ শেষে আমি ১২ আগষ্ট জেলা শিক্ষা অফিসে প্রেরণ করি।
এছাড়া তিনি আরো জানান, অসুস্থকালীন সময়ে তিনি যে ছুটি কাটিয়েছিল আজ ১৭ আগষ্ট (মঙ্গলবার) তা পাশ করে একাউন্টস অফিসে প্রেরণ করেছি।প্রয়াত খালেদার স্বামী জামাল হোসেন জানান, কচুয়া উপজেলা ও জেলা শিক্ষা অফিসার স্যারদের নিকট আমি কৃতজ্ঞ। আমার স্ত্রী অসুস্থ থাকার সময়ও সবসময় খোঁজখবর নিয়েছেন।আমার স্ত্রীর জীবন সন্ধিক্ষণে শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে অক্সিজেন দেওয়া প্রয়োজন এমন খবরে তিনি রাত ৩ টার দিকে সহকারী শিক্ষক নেতা ওমর খৈয়াম বাগদাদী রুমিকে দিয়ে আমার স্ত্রীর জন্য অক্সিজেন সিলিন্ডার প্রেরণ করেন। পাশাপাশি দ্রুত সময়ের মধ্যে পেনশন আবেদন মঞ্জুর হওয়ায় মহান আল্লাহ তালার নিকট তাদের দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্য কামনা করেছি। এবং বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতি কচুয়া উপজেলা শাখার সভাপতি ওমর খৈয়াম বাগদাদী রুমি আমার স্ত্রী অসুস্থ হওয়ার পর থেকে আমাদের সাথে সব-সময় যোগাযোগ রেখেছেন এবং সহযোগীতা করেছেন। আমি তাঁর নিকটও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতি কচুয়া উপজেলা শাখার সভাপতি ওমর খৈয়াম বাগদাদী রুমি জানান, এক কর্মদিবসের মধ্যে আমার সহকর্মী প্রয়াত শিক্ষক খালেদা আক্তারের পেনশন আবেদন মঞ্জুর করায় আমি কৃতজ্ঞচিত্তে চাঁদপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সাহাব উদ্দীন স্যার এবং কচুয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসার এএইচএম শাহরিয়ার রসুল স্যার চাঁদপুরের ইতিহাসে এমন উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপনের জন্য মহান আলাহর কাছে স্যারদের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।