প্রকাশ : ০৭ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০
তাওবার পদ্ধতি ও কবুল হওয়ার শর্তাবলি
মাহে রমজানের মাগফিরাত অংশ চলছে। মাগফিরাত মানে ক্ষমা। অর্থাৎ মু’মিন বান্দা বিগত দিনের পাপরাশির জন্যে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইবে, মাফ চাইবে। আর আল্লাহর ক্ষমা পেতে হলে তাওবা করতে হবে। তাওবা শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো প্রত্যাবর্তন করা, অনুতপ্ত হয়ে ফিরে আসা। আর শরীয়তের পরিভাষায় দ্বীনের আলোকে নিন্দনীয় ও অপছন্দনীয় কার্যকলাপ বর্জন করতঃ শরয়ী পছন্দনীয় ও প্রশংসনীয় কর্মকাণ্ডের প্রতি ধাবিত-আকৃষ্ট হওয়াকে তাওবা বলা হয়।
|আরো খবর
তাওবা অনেক বড় ইবাদত। আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের অতীব পছন্দনীয় আমল এই তাওবা। আম্বিয়ায়ে কেরাম আলাইহিমুস সালামের সুন্নাত হচ্ছে অধিক হারে তাওবা-ইস্তেগফার করা। আল্লাহপাকের নিকট আনুগত্য, বিনয়-নম্রতা, নির্ভরশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটানো এবং সকল প্রকার অহংবোধ ও আমিত্ব বিলোপের উৎকৃষ্ট মাধ্যম এই তাওবা-ইস্তেগফার। এ জন্যে কুরআন কারীমের অসংখ্য আয়াতে এবং হাদীসের অগণিত রেওয়ায়েতে তাওবা-ইস্তেগফারের প্রতি বান্দাকে উদ্বুদ্ধকরণ, তাগিদ প্রদান এবং অপরিসীম ফজিলত, বরকত ও উপকারিতা বিশদভাবে বর্ণিত হয়েছে বারবার।
আল্লাহর দরবারে তাওবা-ইস্তেগফার কবুল হওয়ার মৌলিক শর্ত হলো : গুনাহ্গার বান্দা তার কৃত অপরাধ ও পাপাচারের জন্যে আন্তরিকভাবে দুঃখিত, লজ্জিত, অনুতপ্ত ও মর্মাহত হবে এবং পুনরায় ওই পাপাচারে লিপ্ত না হওয়ার দৃঢ় অঙ্গীকারাবদ্ধ হবে। বিশ্ববিখ্যাত হাদীস শাস্ত্রবিদ মোল্লা আলী ক্বারী (রঃ) মেরকাত শরহে মেশকাতের মধ্যে উল্লেখ করেন, তাওবা কবুল হওয়ার রুকন তথা বাধ্যতামূলক শর্ত হলো তিনটি- (১) কৃত পাপাচারের উপর লজ্জিত-অনুতপ্ত হওয়া, (২) জীবনে আর ওই পাপে লিপ্ত না হওয়ার ইস্পাত কঠিন শপথ গ্রহণ করা, (৩) সাধ্যানুসারে কৃত গুণাহ্ সমূহের কাজা-কাফ্ফারা আদায় করে দেয়া। হাক্কুল্লাহ্ তথা নামাজ, রোজা, হজ্জ্ব, জাকাত ইত্যাদি অনাদায়ী থাকলে কাজা আদায় করে ফেলা এবং বান্দার হক পরিশোধ করে দেয়া, বান্দার উপর জুলুম নির্যাতনের জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করা। এ সবকিছু তাওবা কবুল হওয়ার জন্যে অপরিহার্য শর্ত।