প্রকাশ : ০৩ আগস্ট ২০২১, ২০:১১
করোনা থেকে মুক্তি পেতে মসজিদে মসজিদে সবিনা খতম
দেশের অন্যান্য জেলার ন্যায় চাঁদপুরেও করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। হাসপাতালে রোগী রাখার ঠাঁই নেই। চারদিকে থেকে শুধু এম্বুলেন্সের আওয়াজ শুনতে পারছি। যেন করোনা মহামারীতে মৃত্যুর মিছিল শুরু হয়ে গেছে। এভাবেই কান্না কন্ঠে কথা গুলো বলে উঠলেন চাঁদপুর শহরের মিশন রোডস্থ শাহী জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা আব্দূল্লাহ আল মামুন।
|আরো খবর
তিনি আরো জানান, করোনা মহামারী ও বিভিন্ন বালা-মসিবত থেকে মুক্তি পেতে মুসল্লিদের উদ্বুদ্ধ করেছি নিজ নিজ ভাবে খতমে ইউনুস পড়তে। দোয়ায়ে ইউনুস ১ লক্ষ ২৫ হাজার বার পড়তে হয়। তাই মুসল্লিরা নিজ ভাবে আমল করছেন। আমরা আগামী শুক্রবারে এ খতমের বকশিয়া দেবো। এছাড়া ইশার নামাজের পর ২ পাড়া করে সবিনা খতমের আমল শুরু করেছি।
বঙ্গবন্ধু সড়কস্থ মোহাম্মদীয়া জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা আব্দুল মান্নান জানান, আমাদের মসজিদেও সবিনা খতম শুরু করেছি তিন দিন হলো। হাফেজ সাহেব প্রতিদিন ইশার নামাজের পর ২ পাড়া করে পড়েন। আগামী ১৫ আগস্ট এ কোরআন খতম সম্পন্ন হবে। আল-হেলাল জামে মসজিদের উপদেষ্টা মোঃ রেহান উদ্দিন মাস্টার এ প্রতিনিধিকে জানান, গত কয়েক দিন যাবত ইশার নামাজের পর বিভিন্ন মসজিদে কোরআন তেলাওয়াত এর আওয়াজ শুনতে পাই। পরে জানতে পারলাম করোনা মহামারী থেকে রক্ষা পেতে সবিনা খতম পড়া হচ্ছে। আমাদের মসজিদের হাফেজ সাহেবকে দিয়ে আমরাও সবিনা খতম শুরু করেছি। অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা মোঃ ইসমাইল হোসাইন ও হুমায়ূন কবির জানান, রাতে কোরআন তেলাওয়াতের আওয়াজ শুনে খুব ভালো লেগেছে। যেনো মিষ্টি মধুর তেলাওয়াত শুনে শৈশবে হারিয়ে গেছি। ছোটবেলায় এ রকম বাড়ি-বাড়ি সবিনা খতমের আওয়াজ শুনতাম।
জেলা ওলামা লীগের সভাপতি মাওলানা মোঃ আব্দুল কাদের তার নিজস্ব ফেসবুক আইডি থেকে কোরআন তেলাওয়াত কারী হাফেজ দের ধন্যবাদ জানিয়ে এভাবে একটি পোস্ট দেন। ওই পোস্টে অনেকেই ধন্যবাদ জানিয়েছেন। আর তিনি তাঁর পোস্টে লিখেছেন, করোনা থেকে চাঁদপুরবাসী ও দেশের জনগননের মুক্তির লক্ষ্যে চাঁদপুর শহরের মসজিদের ইমাম সাহেবদের ভুমিকা প্রশংসনীয়। সপ্তাহ ব্যাপী রাত্রে মাইকে কোরান পড়া ও মুসল্লীদের নিয়ে খতমে ইউনুছ পড়া শুরু করেছেন। আগামী জুমায় দোয়া হবে আল্লাহ পাক কবুল করুক । আমিন । ছুম্মা আমিন।
জেলা জাতীয় ইমাম সমিতির সভাপতি মাওলানা মোঃ সাইফুদ্দিন খন্দকারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অতিতে এ দেশে যখন বিভিন্ন মহামারী হতো, হক্কানী পীর-মশায়েখ, আলেম-ওলামায়ে কেরাম খতমে ইউনুস, খতমে কোরআন ও আজানের আমল করতেন। যারা সবিনা খতম মসজিদে পড়ছে এটা একটা ভালো আমল। এছাড়া এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনের বলা হয়েছে 'আর যখন কোরআন পাঠ করা হয়, তখন তাতে কান লাগিয়ে রাখ এবং নিশ্চুপ থাকো, রাতে তোমাদের উপর রহমত হয়'। (সূরা আল-আরাফ আয়াত ২০৪) পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের উচিলায় আল্লাহ তায়ালা আমাদের থেকে করোনা মহামারী উঠিয়ে নিতে পারেন। তাই আমাদের সকলের উচিত বেশি আল্লাহর সাহায্য কামনা করা।
এ বিষয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ খলিলুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি ইশারের নামাজের পর বিভিন্ন মসজিদে মাইকে কোরআন তেলাওয়াতের আওয়াজ শুনেছি। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম করোনা মহামারী থেকে রক্ষা পেতে সবিনা খতম পড়া হচ্ছে। আল্লাহর বাণী কোরআন পড়া এটাতো বেশ ভালো আমল। আমার মনে হয় সকল মসজিদে এ আমল করা যেতে পারে।