প্রকাশ : ১৭ নভেম্বর ২০২২, ০২:১৭
ভালো নেই সংবাদপত্র হকার হানিফ পত্রিকা চলে কম,মোবাইল ফেইসবুকে খাইয়া লাইছে
সূর্যের আলো ফোটার আগেই মানুষের বাসা-বাড়ি, সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পৌঁছে যায় খবরের কাগজ। এ রুটিন প্রতি দিনেরই, বছরের নির্দিষ্ট কয়েকটা দিন ছুটি ছাড়া বন্ধ নেই কোনো সরকারি ছুটিতেও। রোদ, ঝড়-বৃষ্টি সবরকম পরিবেশেই নিরলস পরিশ্রম করে হকাররা মানুষের কাছে পৌঁছে দেয় খবরের কাগজ। কিন্তু বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের থাবা এবং ডিজিটাল ইন্টারনেটের দুনিয়ার প্রভাব পড়েছে তাদের সেই কর্মব্যস্ত জীবনের উপরেও। বর্তমানে পত্রিকা বিক্রিতে ভালো নেই চাঁতপুরের সংবাদপত্র হকাররা।
|আরো খবর
শহরের একমাত্র সংবাদপত্র এজেন্ট
কোর্ট স্টেশন নুর নবী পাটওয়ারীর পুরনো হকার মোঃ হানিফ(৪৫)। পিতার নাম আহম্মদ আলী বেপারী। স্ত্রী, ১ কন্যা সন্তানসহ মা বাবাসহ পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করছেন চাঁদপুর শহরের উত্তর শ্রীরামদী কোড়ালিয়া এলাকায়।১৯৯০ সালের পর থেকে ওই এজেন্টের হকার হিসেবে শুরু করেন পত্রিকা বিলি করার কাজ। শহরের বিভিন্ন স্থানে পত্রিকা বিক্রি করে আগে ভালোই দিন যাচ্ছিল তার।প্রায় ৩২ বছর যাবত এ পেশার সাথে জড়িত এই হানিফ। আগে আদালত ও ডিসি অফিস প্রাঙ্গণ পত্রিকা বিলি করতেন। এখন চাঁদপুর লঞ্চঘাটে বিক্রি করেন জাতীয়-স্থানীয় বিভিন্ন পত্রিকা।
হানিফ জানায়,
দুই আড়াই'শ পত্রিকা বিক্রি করে প্রতিদিন ৫/৬'শ টাকা কমিশন পেতেন। এ টাকায় তার সংসার খরচ ভালোভাবেই মিটে যেতে। এখন পত্রিকা বিক্রি করে দৈনিক আড়াই'শ টাকা রুজি করা দুরদায় হয়ে পড়েছে। জিনিসপত্রের যে দাম একটা কিনলে আরেকট কিনতে টাকা থাকে না।এর কারণ মোবাইল ফেইসবুকে খাইয়া লাইছে। মানুষ পত্রিকায় হাত দিতে চায় না,পত্রিকা চলে কম।পুরনো পেশা ছাড়তে মায়া লাগে তার।
হানিফ বলেন,সকাল ৭টা থেকে দুপুর পর্যন্ত লঞ্চঘাটে পত্রিকা বিক্রি করেন।বিকাল ৪টার পর রাত ৮টা পর্যন্ত চাঁদপুর রেলওয়ে কোর্টস্টেশনে বাপের একটা দোকানদারি আছে ফুটপাতে আংটি-মানিব্যাগ বিক্রি করেন। অভাব অনটনের মধ্যেই তার দিন কেটে যাচ্ছে,কিচ্ছু করার নাই।আমাগো সুখ দুঃখ দেখবে কে?।এ অবস্থায় তারা কোনো সহযোগিতা পাচ্ছে না কারো কাছ থেকে।
হানিফ বলেন, ‘সরকার, সিটি করপোরেশন, জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সবাই কম বেশি সহযোগিতা পাচ্ছে। কিন্তু আমরা সাংবাদপত্রের হকারদের কথা যেন কারো মাথায় নেই। অথচ প্রতিটি নাগরিক জীবনের সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ আমরা। আমরাই মানুষের দ্বারে দেশের সব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পৌঁছে দিচ্ছি। কিন্তু আজ আমরা যে কষ্টে আছি এদিকে কারোই খেয়াল নেই।