প্রকাশ : ০২ আগস্ট ২০২২, ০০:০০
মেধাবী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দিলো ঢাকাস্থ চাঁদপুর জেলা সাংবাদিক ফোরাম
শিক্ষার্থীদের সফল, সার্থক ও মানবিক মানুষ হওয়ার পথ দেখাতে হবে : সাইফুল আলম
দৈনিক যুগান্তর সম্পাদক ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম বলেছেন, আজকের প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হতে হবে। এ জায়গায় অভিভাবকদের অনেক বড় দায়িত্ব আছে। তিনি আরও বলেন, সোনার দেশ গড়তে হলে সোনার মানুষ তৈরি করতে হবে। ৩০ জুলাই শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় ঢাকাস্থ চাঁদপুর জেলা সাংবাদিক ফোরামের ‘মেধাবী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
|আরো খবর
জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরম খাঁ মিলনায়তনে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব মাকসুদুর রহমান পাটোয়ারী।
ফোরামের সভাপতি মিজান মালিকের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক একেএম রাশেদ শাহরিয়ার পলাশের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ফোরামের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও ঢাকা পোস্টের সম্পাদক মহিউদ্দিন সরকার, চ্যানেল আইয়ের বিশেষ প্রতিনিধি মাজহারুল হক মান্না, রেজাউল করিম রেজা, দৈনিক ইত্তেফাকের কূটনৈতিক প্রতিবেদক মাইনুল আলম, ঢাকা টাইমসের সিনিয়র সাব-এডিটর রিয়াজ হায়দার প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে ২০২০-২০২১ সালের এসএসসি ও এইচএসসিতে ভালো ফল করায় ৯ কৃতী শিক্ষার্থীকে বৃত্তি ও ক্রেস্ট দেয়া হয়।
অনুষ্ঠানে চাঁদপুর জেলা সাংবাদিক ফোরামের উপদেষ্টা যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম বলেন, আজকের এ কৃতী শিক্ষার্থী সংবর্ধনার মূলত দুটি বিষয়-একটি পরীক্ষায় পাসের ফল, আরেকটি বাস্তবের ফল। এর মধ্য দিয়ে আমাদের সন্তানদের মূল্যায়ন করা হয়েছে। তিনি বলেন, সাধারণত মৃত ব্যক্তিদের স্মৃতিচারণ করে মরণোত্তর সংবর্ধনা দেয়া হয়। যারা জীবিত অবস্থায় ভালো কাজ করেন, তাদের কর্মের স্বীকৃতি কম দেয়া হয়। ঢাকাস্থ চাঁদপুর জেলা সাংবাদিক ফোরাম যে উদ্যোগ নিয়েছে, তা প্রশংসাযোগ্য। এটির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জ্ঞান ও মেধার স্বীকৃতি দেয়া হচ্ছে। তবে তাদের আরও পরিশ্রম করতে হবে। তিনি বলেন, আজকের শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনার মাধ্যমে নিজেদের মন ও চিন্তার নতুন ধারা তৈরি হচ্ছে। যারা সংবর্ধিত হয়েছে তাদের মা-বাবার মন খুশিতে ভরে গেছে। শিক্ষা, সংস্কৃতি চর্চা, মানুষের মতো মানুষ হওয়া এবং দেশপ্রেম জাগ্রত ও মানুষকে ভালোবাসার ক্ষেত্রে আজকের প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের মনকে উজ্জীবিত করতে হবে। এ জায়গায় আমাদের অনেক বড় দায়িত্ব আছে।
সাইফুল আলম বলেন, জাতির পিতা সোনার বাংলা তৈরির জন্য সোনার মানুষ চেয়েছিলেন। সোনার মানুষ তৈরি করতে হলে সোনার অভিভাবক দরকার। আমরা সেই অভিভাবক হতে চাই। আমরা সন্তানদের ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর মতো জীবনযুদ্ধে জয়ীদের গল্প শোনাতে চাই। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে যারা ভূমিকা পালন করেছেন, তাদের গল্প শোনাতে চাই। এ প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, জীবনানন্দ, শরৎচন্দ্র, কবি জসীমউদ্দীন, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন সম্পর্কে জানাতে হবে। তাদের বাঙালি সংস্কৃতি সম্পর্কে জানাতে হবে। সফল, সার্থক ও মানবিক মানুষ হওয়ার পথ দেখাতে হবে।
সুজিত রায় নন্দী বলেন, চাঁদপুরের ইলিশ সংরক্ষণ, মেঘনার অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করে নদী ভাঙন রোধের মাধ্যমে জেলার সম্পদ রক্ষা করতে হবে। পাশাপাশি আজকের ছেলেমেয়েদের সঠিক মানুষ হওয়ার মধ্য দিয়ে চাঁদপুরের ইতিহাস-ঐতিহ্য রক্ষায় ভূমিকা রাখতে হবে। মুক্তিযুদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনা লালন করতে হবে। সবার মধ্যে প্রতিযোগিতা থাকবে, কিন্তু প্রতিহিংসা নয়। মেধাবী হতে হবে। মাদককে না বলা ও সুশাসনকে হ্যাঁ বলা শিখতে হবে।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব মাকসুদুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, নিজেদের সংবর্ধিত করা ব্যতিক্রম বিষয়। ছেলেমেয়েদের আরও ভালো পড়াশোনা করতে হবে। বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তথা মোবাইল ফোন ব্যবহার বেড়ে গেছে। এর ভালো দিকটা নিতে হবে। সবাইকে সুশিক্ষিত হয়ে দেশকে আলোকিত করতে হবে।
মহিউদ্দিন সরকার বলেন, করোনাকালেও আমাদের সন্তানরা পড়াশোনায় ভালো করেছে। মেধাবী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দেয়া অব্যাহত থাকবে। এতে নিজের জেলার মানুষ ও অভিভাবকদের প্রতি ইতিবাচক মানসিকতা তৈরি হবে।
অনুষ্ঠানে বক্তারা আরও বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন ভালো কিছু করতে পারে, সেটি আমাদের দায়িত্ব। আমাদের দায়িত্ব শিশুদের অনুপ্রাণিত করা, ভালো মানুষ তৈরি করা ; শিশুদের সামাজিক ও মানবিক মানুষ হওয়ার পরামর্শ দেয়া। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহাদৎ হোসেন, জনকল্যাণ সম্পাদক শামসুজ্জামান নাঈম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক কাজী ফয়সাল, দপ্তর সম্পাদক মহসিন হোসেন, নির্বাহী সম্পাদক গাজী আহমেদুল্লাহ, তোফাজ্জল হোসেন কামাল, রেজাউল করিম রেজা, সাইদ আল আহসান শিমুল প্রমুখ। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে কৃতী শিক্ষার্থী সাবরিনা নুজহাত, কায়সারি বিনতে কামাল টুনটুন, নুরীয়া তাসনিমসহ কয়েকজন নিজেদের অনুভূতি প্রকাশ করেন।