রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪  |   ১৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ১৪ জুন ২০২২, ২০:৪৮

কচুয়ায় জগন্নাথ দেবের ১৫৪তম স্নানযাত্রা উৎসব পালন

কচুয়ায় জগন্নাথ দেবের ১৫৪তম স্নানযাত্রা উৎসব পালন
মেহেদী হাসান

জগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রা দিয়ে শুরু হয়ে গেল রথযাত্রার প্রস্তুতি। ১৫৪ তম জগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রা উৎসব পালিত হয়েছে চাঁদপুরের কচুয়ায়। এই দিন বিগ্রহকে স্পর্শ করা যায়। করোনার জেরে গত ২ বছর বন্ধ ছিল উৎসব।

এবার মঙ্গলবার স্নানযাত্রার দিন সকাল থেকেই সাচার জগন্নাথ ধাম মন্দির চত্বরে ছিলো বাধভাঙা উচ্ছ্বাস। দুপুরে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রাকে নিয়ে যাওয়া হয় মন্দির সংলগ্ন স্নানমঞ্চে। এটি এশিয়া মহাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা উৎসব। জগন্নাথ দেবকে স্নান করানো হয়েছে ভক্তি সহকারে। প্রায় সহস্রাধিক ভক্ত ভক্তি সহকারে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রাকে স্নান যাত্রার জন্য জল নিবেদন করেন।

স্নানযাত্রা উৎসবে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা দেবীর বিগ্রহকে ডাবের জল, গঙ্গা জল, দুধ ও দই দিয়ে ভক্তি সহকারে স্নান করিয়েছেন মন্দিরের পুরোহিতরা। অসংখ্য ভক্তের সমাগম ছিল জগন্নাথ দেবের মন্দিরে।

কথিত আছে, জমিদার গঙ্গাগোবিন্দ সেন কচুয়া উপজেলার সাচার ইউনিয়নে জগন্নাথ দেবের কাঠের বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করে। তখন থেকেই চলছে এই স্নান যাত্রা উৎসব। ভক্তদের বিশ্বাস স্নানের পর জগন্নাথের কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে, লেপ ও কম্বল মুড়ি দিয়ে শুয়ে থাকেন তিনি। এই সময় হয় অঙ্গরাগ। ভেষজ রং দিয়ে জগন্নাথ দেবকে রাঙানো হয়। তখন গর্ভগৃহের দরজা বন্ধ থাকে। কবিরাজের পাঁচন খেয়ে জ্বর ছাড়লে হয় নবযৌবন উৎসব। পরদিন রথে চড়ে মাসির বাড়ি রওনা দেন জগন্নাথ বলরাম এবং বোন সুভদ্রা।

উল্লেখ্য গত দু’বছর করোনা মহামারির কারণে সেই অর্থে রথযাত্রা উৎসব পালন করা হয়নি । ফলে স্থানীয় বাসিন্দা থেকে শুরু করে অসংখ্য ভক্তবৃন্দের মন ছিল ভারাক্রান্ত।

বিগত দু’ বছরে রথযাত্রার দিনে খুবই কম সংখ্যক ভক্তদের নিয়ে পালন করা হয়েছে রথযাত্রা উৎসব। তবে এ বছর চিত্রটা অনেকটাই বদলেছে। করোনা মহামারির প্রকোপ কমতেই আবারও স্বমহিমায় ফিরে এসেছে রথযাত্রা উৎসব।

জগন্নাধ ধাম পূজা ও সাংস্কৃতিক সংঘের সভাপতি বটু কৃষ্ণ বসু ও সিনিয়র সহ-সভাপতি নিখিল দাস জানান, গত দুই বছর করোনা মহামারির কারনে আমরা কোন রকম নিয়ম রক্ষার্থে স্নান যাত্রা ও রথ যাত্রা উৎসব পালন করেছি। আশা করছি স্বমহিমায় ফিরে জাকজমকপূর্ণ ভাবে রথযাত্রা উৎসব পালন করবো। আমরা স্থানীয় এমপি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও দেশ বিদেশের জগন্নাথ দেবের ভক্তবৃন্দের সহযোগীতায় জগন্নাথ দেবের পুনঃনির্মিত ভবন নতুন রূপে প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি। আগামী ১লা জুলাই ১ম রথযাত্রা উৎসব ও ৮ই জুলাই উল্টো রথ যাত্রা উৎসব পালন করবো।

রথ উদযাপন কমিটির সভাপতি বাসুদেব সাহা ও সাধারণ সম্পাদক অরুন গোপ জানান, আজ স্নান যাত্রা উৎসবে সহস্রাধিক ভক্তবৃন্দদের উপস্থিতিতে জগন্নাথ ধাম মন্দির প্রাঙ্গনে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। আগামী ১লা জুলাই ১ম রথযাত্রা উৎসব ও ৮ই জুলাই উল্টো রথ যাত্রা উৎসব। সেই লক্ষ্যে আমরা সকল প্রকার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। পুলিশের পাশাপাশি আমাদের মন্দির কমিটির স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে রথযাত্রার নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আশা করি অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বৎসর লক্ষাধিক ভক্তবৃন্দের উপস্থিতিতে রথযাত্রা উৎসব পালিত হবে।

রথ উৎযাপন কমিটি সহ-সভাপতি শুকদেব গোস্বামী ও কোষাধ্যক্ষ রনজিৎ সাহা বলেন, গঙ্গা গোবিন্দ সেনের হাত ধরেই আমরা এই জগন্নাথ ধামের স্নান যাত্রা ও রথ যাত্রা উৎসব পালন করে আসছি।এ বছর ১৫৪তম রথ যাত্রা উৎসব পালন করবো। আমরা এবং আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম এই রথযাত্রা উৎসবটি ধরে রাখবে। এবং আমরা সকল ধর্মের লোকজন মিলেমিশে এই উৎসবটি পালন করি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়