প্রকাশ : ২০ জুলাই ২০২১, ১৮:৫৪
'আসুন, করোনা মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধ হই'-৫
'করোনায় সারাদেশে মৃত্যুর মিছিল চলছে। প্রতিদিন হাজার হাজার লোক আক্রান্ত হচ্ছে। এক ভয়াবহ বিপর্যয়ে দেশ। চাঁদপুরে করোনা সংক্রমণ সারাদেশের গড়ের চেয়েও বেশি। এমতাবস্থায় আপনার ব্যক্তিগত বা সংগঠনের পক্ষ থেকে আপনি করোনা মোকাবেলায় বিশেষ করে মাস্ক পরিধান সহ স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্যে সচেতনতা সৃষ্টিতে স্বেচ্ছায় ছোট-বড় কী কাজ করতে চান কিংবা কী বলতে চান?' চাঁদপুর কণ্ঠের এমন প্রশ্নের জবাবে বিশিষ্ট ক'জনের প্রতিক্রিয়া নিচে তুলে ধরা হলো:
|আরো খবর
করোনায় বিপর্যস্ত নিম্নমধ্যবিত্তদের স্বাবলম্বী করতে পুঁজি দিচ্ছি, চলছে মাসব্যাপী ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম : রোটাঃ সাহেদুল হক মোর্শেদ
রোটারী ক্লাব চাঁদপুরের সভাপতি সাহেদুল হক মোর্শেদ একজন তরুণ সমাজসেবক। চাঁদপুরের অনেক সামাজিক কার্যক্রমে তার সরব উপস্থিত ও সমাজসেবার মানসিকতায় তাকে নতুন করে চিনেছে তরুণ প্রজন্ম। করোনাকালীন এ বির্যয়ে তার ও তার সংগঠনের ভূমিকা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, করোনায় সারাদেশে মৃত্যুর মিছিল চলছে। প্রতিদিন হাজার হাজার লোক আক্রান্ত হচ্ছে। এক ভয়াবহ বিপর্যয়ে দেশ। চাঁদপুরে করোনা সংক্রমণ সারাদেশের গড়ের চেয়েও বেশি। ক্রমেই মানুষের অসহায়ত্ব বাড়ছে। কর্মহীন নিম্নমধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তের মানুষের ঘরে ঘরে চলছে তীব্র খাদ্য সংকট। করোনার এই মহামারি মোকাবেলায় চাঁদপুরের প্রশাসন ও জনগণের ঐক্যবদ্ধ হওয়া ছাড়া বিকল্প কোন পথ নেই। চাঁদপুরের এমন দুর্দিনে ঐকবদ্ধ ভাবে করোনা মোকাবেলা করতে, অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে যে সকল প্রতিষ্ঠান ভূমিকা রাখছে তাদের মধ্যে অন্যতম চাঁদপুর রোটারী ক্লাব।
মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্যে সচেতনতা সৃষ্টিতে কী ভূমিকা রেখেছে চাঁদপুর রোটারী ক্লাব সে বিষয়ে কথা বলা হয় চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের সভাপতি রোটাঃ সাহেদুল হক মোর্শেদের সাথে। চাঁদপুর কণ্ঠকে তিনি বলেন, করোনা সংক্রমণের শুরু থেকেই কাজ করছে চাঁদপুর রোটারী ক্লাব। আমরা প্রথমে নিম্নমধ্যবিত্ত, যারা কর্মহীন হয়ে পড়েছিলো তাদেরকে স্বাবলম্বী করতে কাজ করেছি।
বিশেষ করে কোন দোকানের কর্মচারী, কোনো একজন কিন্ডারগার্টেন শিক্ষক, কোনো চায়ের দোকানদার এমন শ্রেণী পেশার কর্মহীন মানুষদের স্বাবলম্বী হতে পুঁজি দিয়ে সহায়তা করেছি। সোমবার থেকে আমাদের শুরু হচ্ছে সবচেয়ে বড় কর্মযজ্ঞ। মানুষের কাছে হাত পাততে পারছেন না, কিন্তু মানবেতর জীবন যাপন করছেন এমন মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তদের ত্রাণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের ত্রাণগুলো গতানুগতিক ত্রাণ নয়। একটি সংসার পরিচালনার জন্য যে পরিমাণ উপাদান প্রয়োজন তার প্রায় সবটাই থাকবে। এভাবে মাসব্যাপী আমরা শত শত জনকে এই সহায়তা প্রদান করবো।
জনগণের সহায়তার বিষয়ে শাহেদুল হক মোর্শেদ বলেন, মাস্ক পরার বিকল্প নেই। যখনই বাড়ির বাইরে বের হবেন তখনই মাস্ক পরতে হবে। মাস্কটি যেন নাক, মুখ ঢাকা ছাড়া কারো কানে বা গলায় ঝুলে না থাকে।
শুরু থেকেই আমরা অসহায় মানুষকে ত্রাণ দিয়ে আসছি : সাখাওয়াত হোসেন শাকিল
চাঁদপুর সেন্ট্রাল রোটারী ক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন। একজন সংগঠক ও জনকল্যাণের মানসিকতা সম্পন্ন মানুষ। বর্তমানে চাঁদপুর সেন্ট্রাল রোটারী ক্লাবের সভাপতির পদ ছাড়াও বিভিন্ন সমাজিক কার্যক্রমে নিজেকে যুক্ত রেখেছেন।
দেশের করোনা প্রাদুর্ভাবের এই সংকটে প্রতিটি সেবাধর্মী সংগঠনের মত তার সংগঠনটিও কাজ করে যাচ্ছে সামাজিক দ্বায়বদ্ধতা থেকে। করোনায় চাঁদপুরের উর্ধ্বমুখী সংক্রমণে তার ও তার ক্লাবের ভূমিকা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, করোনা সংক্রমণে শুরু থেকেই তারা অসহায় মানুষদের খাদ্য সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি। কিছুদিন পূর্বেও ২শ' জন দরিদ্র, অসহায় মানুষকে আমরা ত্রাণ বিতরণ করেছি। নিজেদের গণ্ডি থেকে যা করার তার সবটুকুই করছে চাঁদপুর সেন্ট্রাল রোটারী ক্লাব।
নিজস্ব অর্থায়নে দুস্থদের সহায়তা চালিয়ে যাচ্ছি, ঈদের পর চলবে সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন : রহিমা বেগম কল্পনা
চাঁদপুর জেলায় যে ক'জন নারী সংগঠক আছেন তাদের মধ্যে রহিমা বেগম কল্পনা অন্যতম। বর্তমানে তিনি চাঁদপুর হিলশা সিটি রোটারী ক্লাবের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। 'করোনা মোকাবেলায় বিশেষ করে মাস্ক পরিধান সহ স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্যে সচেতনতা সৃষ্টিতে স্বেচ্ছায় ছোট-বড় কী কাজ করতে চান কিংবা কী বলতে চান?' -এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা রোটারিয়ানরা নিজস্ব অর্থায়নে দুস্থদের সহায়তা করা অব্যাহত রেখেছি। যতদিন চাঁদপুর করোনামুক্ত না হয় ততদিন আমাদের এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। গত সপ্তাহেও আমরা মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ করেছি। ঈদের পর লকডাউনে আমরা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন করার পরিকল্পনা রয়েছে।
ঈদের পর জনগনের স্বাস্থ্য সচেতনতায় নতুন পরিকল্পনা নিবে রোটারাক্ট ক্লাব : রাতিবুল ইসলাম তুষার
চাঁদপুর সিটি রোটারাক্ট ক্লাবের সভাপতি রাতিবুল ইসলাম তুষার। তারুণ্য নির্ভর এ সংগঠনটি সমাজকল্যানমূলক কাজে নিজেদের সম্পৃক্ত রেখে প্রত্যেকেই একজন রোটারিয়ান হয়ে ওঠার স্বপ্ন দেখেন। সেই সংগঠনটির বর্তমানে নেতৃত্বে আছেন যিনি, দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ থেকে কথা বলা হয় তার সাথে।
রাতিবুল ইসলাম তুষার বলেন, আমাদের ক্লাবটি এখনো নতুন। সদস্য প্রত্যেকেই শিক্ষার্থী, তাই অর্থ সংগ্রহ সাপেক্ষে বড় কোন কর্মসূচি আমরা গ্রহণ করতে পারিনি। সম্প্রতি মুম্বাইয়ের একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে আমরা এতিমদের সাথে সময় কাটিয়েছি। করোনাকালীন সময়ে এতিমরা যে একা নয়, আমরা সবসময়ই তাদের পাশে রয়েছি তা বুঝিয়ে তাদেরকে মানসিক ভাবে চাঙ্গা রাখার চেষ্টা করেছি। মানুষের স্বাস্থ্য সচেতনতায় কাজ করার জন্য অবশ্যই আমাদের দায়িত্ব রয়েছে।
ঈদের পর একটি পূনর্মিলনী অনুষ্ঠানে ঈদ পরবর্তী সচেতনতামূলক কী কর্মসূচি নেওয়া যায় তা আমরা নির্ধারণ করবো। জেলার এই ক্রান্তিলগ্নে মানুষের জন্য কিছু করতে পারলে আমাদের কাছেই ভালো লাগবে।