শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২১ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৬:৩৩

ইতালিতে বাংলাদেশ দূতাবাসে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত

ইতালি প্রতিনিধি
ইতালিতে বাংলাদেশ দূতাবাসে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত

নানা আয়োজনে ইতালির রোমে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে যথাযথ মর্যাদায় "শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করা হয়েছে।

দিবসটি উপলক্ষে বিশেষ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ২১ ফেব্রুয়ারি সকালে দূতাবাস প্রাঙ্গণে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত এবং চ্যান্সেরী প্রাঙ্গণে স্থাপিত শহীদ মিনারে রাষ্ট্রদূতের নেতৃত্বে দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারি পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

ওইদিন সকাল ১০টায় দূতাবাসের আয়োজনে ভার্চুয়াল মাধ্যমে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দূতাবাসের আমন্ত্রিত দেশি-বিদেশি বিশেষ ব্যক্তিবর্গ, বন্ধুপ্রতীম বিদেশী নাগরিকগণ,বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা ও প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকগণ সংযুক্ত হন ভার্চুয়াল আলোচনা সভায়। অনুষ্ঠানের শুরুতে ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে সকল শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে রাষ্ট্রদূত মোঃ শামীম আহসান তার শুভেচ্ছা বক্তব্যে মাতৃভাষার অস্তিত্ব রক্ষা ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আত্মত্যাগকারী শহীদদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা, শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রকাশ করেন।

এসময় তিনি উল্লেখ করেন ভাষা সংগ্রামের পথ

ধরেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দিকনির্দেশনায় বাংলাদেশের গৌরবময় স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে।

১৯৭৪ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ২৯তম অধিবেশনে জাতির পিতার বাংলায় ভাষণের উদ্ধৃতি দিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন,প্রধানমন্ত্রীর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে রূপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও বাংলা ভাষাকে পৃথিবীর সর্বত্র সম্মানজনকভাবে উপস্থাপনের সুযোগ তৈরি হচ্ছে যা ভবিষ্যতে আরো বেগবান হবে বলে  দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস' হিসেবে স্বীকৃতির পরিপ্রেক্ষিতে এ দিবসটি পৃথিবীর সকল দেশের ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি সম্মান প্রদর্শনের মাধ্যমে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে অনন্য ভূমিকা রাখছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

 অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি,প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, ইউনেস্কোর মহাপরিচালকের বাণী পাঠ করা হয়। ইউনেস্কোর আঞ্চলিক পরিচালকের পক্ষে আলোচনা সভায় অংশগ্রহণকারী মেগুমি ওটানএবল

মাতৃভাষার জন্য আত্মত্যাগকারী বাংলাদেশি তরুণদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের পাশাপাশি দিনটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতির মাধ্যমে পৃথিবীর সকল মাতৃভাষার সক্রিয় গুরুত্ব ও অবস্থান সুসংহত করার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেন।

ইতালির ফ্লোরেন্সে নিযুক্ত বাংলাদেশের অনারারী কনসাল জর্জা গ্রানতা বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষের মধ্যে শান্তি ও সৌহার্দ্য বিনির্মাণের ক্ষেত্রে দিনটির বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে বলেও মতামত ব্যক্ত করেন। নেপলস্‌ এ নিযুক্ত বাংলাদেশের অনারারী কনসাল ফিওরেল্লা ব্রেগলিয়া

ভাষার জন্য বাংলাদেশের তরুণদের আত্মত্যাগের জন্য  বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানান এবং গর্ববোধ করেন। বন্ধুপ্রতীম ইতালিয় ও অন্যান্য বিদেশী নাগরিকবরা মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষায় আত্মত্যাগকারী শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তারা মাতৃভাষার অনন্যতা ও স্বকীয়তার বিষয়ে তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন। রিশিল্পী আন্তর্জাতিক নামের সংগঠনের উদ্যোক্তা বাংলাদেশের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বন্ধু দুই ইতালিয় নাগরিক বাংলাদেশের সাতক্ষীরা থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে বাংলাদেশ ও বাংলা ভাষার প্রতি তাদের গভীর ভালোবাসার কথা প্রকাশ করেন। 

 

অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক পর্বে,হাইব্রিড মাধ্যমে শিশু শিল্পীদের পরিবেশনায় দেশাত্মবোধক গান ও নাচের ধারণকৃত অংশ উপভোগ করেন উপস্থিত অতিথিবৃন্দ। সুস্মিতা সুলতানার পরিচালনায় এবং স্থানীয় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘সঞ্চারী সংগীতায়ন’ এর শিক্ষার্থীদের পরিবেশনা দর্শকদের মুগ্ধ করে।

অনুষ্ঠানের পরবর্তী পর্যায়ে দিবসটি উপলক্ষ্যে শিল্পকলা একাডেমি নির্মিত বিশেষ প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়। ইতালি,ভারত,থাইল্যাণ্ড ও প্রবাসী বাংলাদেশি শিল্পীদের ধারণকৃত বর্ণিল পরিবেশনা অনুষ্ঠানে এক নতুন মাত্রা যোগ করে।

অন্যদিকে অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ, ইতালিয় আলোকচিত্রী স্তেফানো রোমানো এর তোলা ছবি নিয়ে তৈরি "আমার চোখে একুশ" শীর্ষক ফটো জার্নি সকলের ব্যাপক প্রশংসা কুড়াতে সক্ষম হয়। পরে শহীদদের রুহের মাগফেরাত ও দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।

 বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রয়াসে ইতালীয় সরকারের অনুমতিক্রমে রবিন পার্কে ২০১১ সালে শহীদ মিনার স্থাপন করা হয়। ভূতাত্ত্বিক অনুপযোগিতার কারণে দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত থাকলেও দূতাবাসের সক্রিয় প্রচেষ্টার ফলে ২০১৪ সালের পর এবারই প্রথম এ শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন সম্ভব হলো। দূতাবাসের আহ্বানে সাড়া দিয়ে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন এবং বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশীরাও এসময় ফুল দিয়ে তাদের শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এসময়  সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত সকলের সামনে দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরেন এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান। একই সঙ্গে রবিন পার্কে দর্শনীয় শহীদ মিনার স্থাপনের পেছনে যারা কাজ করেছেন দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা এবং ইতালীয় সরকারকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান রাষ্ট্রদূত শামীম আহসান।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়