প্রকাশ : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০২:৪২
চাঁদপুরে ৭৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করেছে জেলা পরিষদ
ভাষা আন্দোলনের ৭০ বছর পেরিয়ে গেলেও চাঁদপুরে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নির্মাণ করা হয়নি শহীদ মিনার।
|আরো খবর
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের পটভূমিকে দৃশ্যমান রাখতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের জন্য ২১শে ফেব্রুয়ারীর মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে শ্রদ্ধা জানাতে চাঁদপুর জেলা পরিষদ ৭৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করে দিয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সব গুলোই মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল।
এ তথ্য নিশ্চিত করেন জেলা পরিষদের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ ইকবাল হোসেন। তিনি জানান, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরের ২০১৭ সাল থেকে ২০২১-২২ অর্থ বছর সময়ে ১৮ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে চাঁদপুর সদরে ৭টি, ৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে হাইমচরে ২টি, ৩৯ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ফরিদগঞ্জে ১৫টি,১৭ লক্ষ টাকা ব্যয়ে হাজীগঞ্জে ৮টি,১৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে শাহরাস্তিতে ৫টি, ৪৬ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে কচুয়ায় ১৯টি, ৩১ লক্ষ টাকা ব্যয়ে মতলব উত্তরে ১২টি এবং ১৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে মতলব দক্ষিণে ৬টিসহ মোট ১ কোটি ৬৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে ৭৪টি স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে।
এদিকে জেলার প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চাঁদপুরে ২’শ ৯৩টি হাই স্কুল থাকলেও ৫৮টি স্কুলেই নেই শহীদ মিনার এবং প্রাথমিকের ১ হাজার ১’শ ৫৬টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ৮’শ ৮৫টি স্কুলেই নেই শহীদ মিনার। তবে মতলব উত্তরে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও স্কুল কমিটির সমন্বয়ে ১’শ ১৮টি স্কুলে শহীদ মিনার নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে।
চাঁদপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ সাহাব উদ্দীন বলেন, প্রাথমিক স্কুলগুলোতে সরকারি কোন বরাদ্দ নেই শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য। তবুও আগের চেয়ে এখন প্রাথমিক স্কুল গুলোতে স্থায়ী শহীদ মিনার বেড়েছে। আমরা স্কুল কমিটিকে শহীদ মিনার নির্মাণে উদ্বুদ্ধ করছি বলেই সরকারি অনুমোদিত ডিজাইন অনুযায়ী তারা শহীদ মিনার নির্মাণ করছেন। শহীদ মিনার স্কুলগুলোতে থাকলে ভাষা শহীদদের ইতিহাস শিক্ষার্থীদের সামনে ভেষে উঠবে এবং এতে তারা দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে বলে আমার বিশ্বাস।
এদিকে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ গিয়াস উদ্দিন পাটওয়ারী বলেন, ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করতে স্কুল প্রাঙ্গণগুলোতে শহীদ মিণার নির্মাণ কাজ চলমান। মাদ্রাসাগুলোতেও শহীদ মিণার নির্মাণ করতে মনিটরিং করা হচ্ছে। ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালনসহ দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে স্কুল কলেজে শহীদ মিনার থাকার বিকল্প নেই।
চাঁদপুর জেলা শিক্ষা প্রকৌশলী ফাহিম ইকবাল বলেন, আমরা স্কুলগুলোর সংস্কারের বরাদ্দ থেকে শহীদ মিনার নির্মাণ করতে হয়। শুধুমাত্র শহীদ মিনার নির্মাণে আমাদের নির্দিষ্ট প্রকল্প থাকা দরকার।
এ বিষয়ে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ওচমান গণি পাটওয়ারী বলেন, ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারী আমাদের মায়ের ভাষা বাংলা ভাষাকে রক্ষা করতে গিয়ে জীবন উৎসর্গকারী ভাষা শহীদদের প্রতি আমি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি। রাজপথে তাঁরা সে সময় ছিলেন বলেই হয়ত বাংলা ভাষার মতো এমন সুমধুর ভাষায় আমরা এখন কথা বলতে পারছি।
তিনি আরও বলেন,জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে বাস্তবায়ন করতে তারই সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আমি কাজ করে যাচ্ছি। এবার আমি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শহীদ মিণার করে দিয়েছি। যেই স্কুলগুলোতে শহীদ মিনার নির্মাণ এখনো হয়নি সেগুলোতে আগামীতে নির্বাচিত হলে মাধ্যমিকগুলো ১ম ধাপে এবং প্রাথমিকেরগুলো ২য় ধাপে করে দিবো ইনশাআল্লাহ। সর্বপরি আমি সকল ভাষা শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি এবং এখনো জীবিত যেই সব বীর ভাষা সৈনিকগণ রয়েছেন তাদের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।