প্রকাশ : ৩০ জানুয়ারি ২০২২, ১০:৪১
ডাঃ দীপু মনি এমপিকে নিয়ে সাম্প্রতিক অন্তঃসারশূন্য প্রোপাগান্ডা
ঢিল মেরে আকাশ ছোঁয়া যায় না
শাহেদুল কবির চৌধুরী
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর সমগ্র রাজনৈতিক জীবনে সকল আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন সাধারণ মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে। রাষ্ট্র পরিচালনায় যে উন্নয়ন দর্শন বাস্তবায়ন শুরু করেছিলেন তিনি, তা ছিলো এ দেশের কৃষক, শ্রমিক, জেলে, তাঁতীসহ সকল শ্রমজীবী ও সাধারণ মানুষের কল্যাণে। আসলে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ এমনই। কিন্তু স্বাধীনতার পরাজিত শক্তি ও দলের ভেতর লুকিয়ে থাকা তাদের দোসররা ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্টের কাল রাত্রিতে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যার মধ্য দিয়ে তাঁর আদর্শকে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিলো। কিন্তু ব্যক্তি বঙ্গবন্ধু লোকান্তরিত হলেও লক্ষ লক্ষ মুজিব অর্থাৎ তাঁর আদর্শের প্রকৃত অনুসারীরা আজ ঘরে ঘরে। যাঁরা বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে করেছেন শক্তিশালী। তাঁর সুযোগ্য নেতৃত্বে আজ বাংলাদেশ বিশ্বের বিস্ময়। তিনি উন্নয়নের রোল মডেল।
|আরো খবর
বঙ্গবন্ধুর আদর্শের যারা প্রকৃত অনুসারী তাঁদেরও সারা জীবন লড়াই সংগ্রাম করে চলতে হয়। ভেতরের ও বাইরের নানা ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে তাঁদেরকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়নে কাজ করতে হয়। আমরা প্রত্যক্ষ করেছি ২১ আগস্টের ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা যার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ও তাঁর রাজনৈতিক সহকর্মীদের নিশ্চিহ্ন করার হীন অপচেষ্টা। আমরা দেখতে পাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অন্যতম আস্থাভাজন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক, এবং বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি মহোদয়ও বারবার শিকার হচ্ছেন ষড়যন্ত্রের।
শিক্ষা ব্যবস্থায় যে বৈপ্লবিক সংস্কার তিনি শুরু করেছেন সেটাকে এগিয়ে নিতে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন। অতিমারির সময় শিক্ষা কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে যেসকল দেশ জবংঢ়ড়হংব করার ক্ষেত্রে শীর্ষ থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। যেটা সম্ভব হয়েছে তাঁর দ্রুত ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্তে।
কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে বিকল্প পন্থায় যেমন-টেলিভিশন, ভার্চুয়াল/অনলাইন, অ্যাসাইনমেন্ট ভিত্তিক শিখন-শেখানো কার্যক্রম শিক্ষার্থীদের লার্নিং প্রসেসকে চালু রাখার ক্ষেত্রে যে অসাধারণ ভূমিকা রেখেছে তা সম্ভব হয়েছে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী মহোদয়ের সুপরামর্শে। প্রজেক্ট বেজড্ এক্সপেরিয়েন্সিয়াল লার্নিং, ৪ওজ-এর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সক্ষম ও মানসম্পন্ন শিক্ষার অভীষ্টে পৌঁছার মাধ্যমে ২০৪১-এর বাংলাদেশ গড়া, ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড অর্জন এবং ব্লেন্ডেড লার্নিং সিস্টেম চালুর লক্ষ্যে জাতীয় টাস্কফোর্সের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে শিক্ষায় ব্যাপক সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছেন। চলছে একবিংশ শতাব্দীর উপযোগী পাঠ্যক্রম প্রণয়ন। মানসম্পন্ন শিক্ষা অর্জনে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ, সক্ষমতা বৃদ্ধি, সুযোগ সুবিধার উন্নয়নসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
কোভিড-১৯ সংক্রমণরোধে শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভ্যাকসিনেশনের আওতায় নিয়ে আসার ক্ষেত্রে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর অবদান অনস্বীকার্য।
ডাঃ দীপু মনি এমপি এক ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য। শিক্ষাজীবনে তিনি ছিলেন চৌকস বিতার্কিক। একাডেমিকেলি তিনি অত্যন্ত মেধাবী। তিনি আইন ও জনস্বাস্থ্যে উচ্চতর ডিগ্রিধারী। তাঁর পিতা ভাষা সৈনিক এমএ ওয়াদুদ। তিনি ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এঁর ঘনিষ্ঠ সহচর। শিক্ষক মাতার আদর্শ সন্তান। ফলে শিক্ষা ও শিক্ষকবান্ধব মন্ত্রী হিসেবে তিনি ইতোমধ্যে শিক্ষা পরিবারের সদস্যদের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন।
রাজনীতির পাঠশালায় সফল শিক্ষার্থী থেকে এখন একজন পরিণত ও আধুনিক রাজনীতিবিদ। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে রয়েছে যাঁর সগর্ব বিচরণ। তাঁর স্বীকৃতিও তিনি পেয়েছেন। আন্তর্জাতিক ফোরামে তিনি বাংলাদেশকে উপস্থাপন করছেন প্রশংসনীয়ভাবে।
আর মানবিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে তিনি স্থান করে নিয়েছেন সাধারণ মানুষের মণিকোঠায়। সমাজের অবহেলিত মানুষকে অবলীলায় বুকে টেনে নেয়া তাঁর একেবারেই সহজাত বৈশিষ্ট্য।
মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী যখন দেশের অগ্রগতির জন্য নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন তখন তাঁকে বিতর্কিত করার প্রচেষ্টা আসলে দেশের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করা। তবে সত্যটি হলো তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে আনীত অভিযোগসমূহের সত্যতা পাওয়া যায়নি। তেমনি সম্প্রতি চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন নিয়ে তাঁকে ইঙ্গিত করে ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের জড়িয়ে যে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে সেটাও সর্বৈব মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। সত্যের জয় অনিবার্য।
জয় বাংলা।
লেখক : শাহেদুল কবির চৌধুরী, মহাপরিচালক (রুটিন দায়িত্ব), মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, ঢাকা।