শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২২ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ১৭:৩৮

সেপ্টেম্বরে ৪৯৩ সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৯৮ জন নিহত, আহত ৯৭৮ : যাত্রী কল্যাণ সমিতি

অনলাইন ডেস্ক
সেপ্টেম্বরে  ৪৯৩ সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৯৮ জন নিহত, আহত ৯৭৮ : যাত্রী কল্যাণ সমিতি

বিদায়ী সেপ্টেম্বর মাসে দেশে ৪৯৩ টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৯৮ জন নিহত, ৯৭৮ জন আহতের তথ্য পাওয়া গেছে। এই মাসে রেলপথে ৪০ টি দুর্ঘটনায় ৩৭ জন নিহত ও ০৪ জন আহত হয়েছে। নৌ পথে ১৪ টি দুর্ঘটনায় ১৯ জন নিহত, ৫৬ জন আহত এবং ৪৭ জন নিখোঁজ রয়েছে। সড়ক, রেল ও নৌ-পথে সর্বমোট ৫৪৭ টি দুর্ঘটনায় ৫৫৪ জন নিহত এবং ১০৩৮ জন আহত হয়েছে। এই সময়ে ১৯২ টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৯৫ জন নিহত, ১৪৯ জন আহত হয়েছে। যা মোট দুর্ঘটনার ৩৮.৯৪ শতাংশ, নিহতের ৩৯.১৫ শতাংশ ও আহতের ১৫.২৩ শতাংশ। এই মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগে, যেখানে ১১৬ টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১০৯ জন নিহত ও ২৫১ জন আহত হয়েছে। সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে বরিশাল বিভাগে, যেখানে ২৬ টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৩ জন নিহত ও ৪৮ জন আহত হয়েছে। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।

১৭ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই প্রতিবেদন তুলে ধরে সংগঠনটি। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের সদস্যরা বহুল প্রচারিত ও বিশ্বাসযোগ্য জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌ পথের দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে।

সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে ১০ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ১০৯ জন চালক, ৮৭ জন পথচারী, ৪৯ জন পরিবহন শ্রমিক, ৫১ জন শিক্ষার্থী, ১২ জন শিক্ষক, ৬৮ জন নারী, ৫৬ জন শিশু, ০২ জন চিকিৎসক, এবং ০৮ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীর পরিচয় মিলেছে। এদের মধ্যে নিহত হয়েছে ৪ জন পুলিশ সদস্য, ০২ জন সেনা সদস্য, ০১ জন আনসার সদস্য, ৯৪ জন বিভিন্ন পরিবহনের চালক, ৮৬ জন পথচারী, ৫২ জন নারী, ৪১ জন শিশু, ৪২ জন শিক্ষার্থী, ১২ জন পরিবহন শ্রমিক, ১২ জন শিক্ষক, ০২ জন চিকিৎসক, ০৮ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী।

এই সময় সড়ক দুর্ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ৭৯২ টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে। এতে দেখা যায়, ২৭.৫২ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২১.৭১ শতাংশ ট্রাক-পিকাপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ১৩.২৫ শতাংশ বাস, ১৫.১৫ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিক্সা ও ইজিবাইক, ৭.৪৪ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিক্সা, ৭.৩২ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা, ৭.৫৭ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস সড়কে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।

সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৪৮.০৭ শতাংশ গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা, ২৭.৯৯ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৮.০৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়া, ৫.০৭ শতাংশ বিবিধ কারণে, ০.২০ শতাংশ ট্রেন- যাববাহনের সংঘর্ষ। আর চাকায় ওড়না পেছিয়ে ০.২০ শতাংশ।

দুর্ঘটনার ধরণ বিশ্লেষণে দেখা যায়, এই মাসে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৪৫.২৩ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ২২.৭১ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ২৬.৩৬ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে। এছাড়াও সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৩.৬৫ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে ও ১.৪১ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও ০.৬০ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংঘটিত হয়েছে।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণ মতে, সেপ্টেম্বর মাসে সড়ক দুর্ঘটনার উল্লেখযোগ্য কারণসমূহ :

১. দেশের সড়ক-মহাসড়কে ট্রাফিক পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশের অনুপস্থিতির সুযোগে আইন লংঘন করে যানবাহনের অবাধ চলাচল।

২. জাতীয় মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মার্কিং, সড়কবাতি না থাকায় এবং অতি বৃষ্টির কারণে সড়কের মাঝে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় এসব যানবাহনের চলাচলে ঝুঁকি বেড়েছে।

৩. জাতীয়, আঞ্চলিক ও ফিডার রোডে টার্নিং চিহ্ন না থাকার ফলে নতুন চালকের এসব সড়কে দুর্ঘটনায় পতিত হয়েছে।

৪. মহাসড়কের নির্মাণ ত্রুটি, যানবাহনের ত্রুটি, ট্রাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা।

৫. উল্টোপথে যানবাহন চালানো, সড়কে চাঁদাবাজি, পণ্যবাহী যানে যাত্রী পরিবহন।

৬. অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, অতিরিক্ত যাত্রী বহন, বেপরোয়া যানবাহন চালানো এবং একজন চালক অতিরিক্ত সময় ধরে যানবাহন চালানো।

দুর্ঘটনার প্রতিরোধে সুপারিশসমূহ :

১. জরুরি ভিত্তিতে মোটরসাইকেল ও ইজিবাইকের মত ছোট ছোট যানবাহন আমদানি ও নিবন্ধন বন্ধ করা ।

২. জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে রাতের বেলায় অবাধে চলাচলের জন্যে আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা।

৩. দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ, যানবাহনের ডিজিটাল পদ্ধতিতে ফিটনেস প্রদান।

৪. ধীরগতির যান ও দ্রুতগতির যানের জন্যে আলাদা লেনের ব্যবস্থা করা।

৫. সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ করা, চালকদের বেতন ও কর্মঘন্টা সুনিশ্চিত করা।

৬. মহাসড়কে ফুটপাত ও পথচারী পারাপারের ব্যবস্থা রাখা, রোড সাইন, রোড মার্কিং স্থাপন করা।

৭. সড়ক পরিবহন আইন যথাযতভাবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রয়োগ করা।

৮. উন্নতমানের আধুনিক বাস নেটওর্য়াক গড়ে তোলা, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএ'র সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।

৯. মানসম্মত সড়ক নির্মাণ ও মেরামত সুনিশ্চিত করা, নিয়মিত রোড সেইফটি অডিট করা।

১০. মেয়াদোত্তীর্ণ গণপরিবহন ও দীর্ঘদিন যাবৎ ফিটনেসহীন যানবাহন স্ক্যাপ করার উদ্যোগ নেওয়া।

১১. বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক-মহাসড়ক দ্রুত মেরামতের ব্যবস্থা করা।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়