প্রকাশ : ১৬ জুলাই ২০২১, ১০:৪০
অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ে ঈগল লঞ্চ কর্তৃপক্ষকে জরিমানা
লঞ্চ চলাচল শুরুর প্রথম দিনেই জরিমানা গুনতে হলো চাঁদপু টু ঢাকা রুটের দ্রৃততম যাত্রীবাহী লঞ্চ ঈগল -৩।
|আরো খবর
অতিরিক্ত যাত্রী ও ৬০ শতাংশের অধিক ভাড়া আদায় করায় জেলা ম্যাজিস্ট্রেট গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চাঁদপুর লঞ্চঘাটে এ জরিমারা করেন।
ঈগল -৩ লঞ্চটি গতকাল বিকাল ৪টায় ঢাকা সদরঘাট থেকে ছেড়ে চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। লঞ্চের নিচতলা, দোতলায় ডেকের সকল অংশ লোকে লোকারণ্য ছিলো। যাত্রীদের অতিরিক্ত চাপে ২য় ও ৩য় তলার কেবিনের আশে পাশে ফাঁকা স্থানেও মানুষ বিছানা বিছিয়ে অবস্থান নেয়। অথচ বিআইডব্লিওটিএ থেকে পূর্বেই নোটিশ দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিলো কোন ভাবেই ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহণ করা যাবে না। নৌ পরিবহণ প্রতিমন্ত্রী বুধবার সকালে লঞ্চঘঘাট পরিদর্শনের সময় জানিয়েছিলেন, নিয়ম ভঙ্গ হলেই গুনতে হবে জরামানা। এ বিষয়ক সংবাদ দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠে পূর্বেও প্রকাশিত হয়েছিলো।
এতশত যাত্রী নিয়ে চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেও নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করায় যাত্রীদের সাথে নদীর মাঝপথে হট্টোগল লেগে যায়। লঞ্চের যাত্রীদের একাংশ লঞ্চের টিকিট কাউন্টারের সামনে এসে ৬০ শতাংশের বেশি ভাড়া কোন ভাবেই দিবে না বলে আন্দোলন করতে থাকে।
ঈগল-৩ লঞ্চে গতকাল ঢাকা থেকে চাঁদপুর আসা ফরিদগঞ্জ উপজেলার মো. মাঈন উদ্দিন নামের এক যাত্রী চাঁদপুর কণ্ঠকে জানায়, সাধারণ সময় লঞ্চের নিচতলায় চেয়ারগুলোর ভাড়া দেড়শ' টাকা নেওয়া হয়। করোনাকালীন অতিরিক্ত ৬০ শতাংশ ভাড়া যোগ করলে ২৪০ টাকা নেওয়ার কথা কিন্তু আমাদের কাছ থেকে ২৮০ টাকা আদায় করছে। এ নিয়ে আমরা লঞ্চ কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা বলেন, 'সব লঞ্চেই এমন। ভাড়া না থাকলে উঠেছেন কেন?'
সাধারণ ডেকের ভাড়া টিকিটে ১১৫ টাকা লেখা থাকলেও তার উপর কালো কালি দিয়ে লেখা হচ্ছে ১৮০ টাকা। করোনাকালীন অর্ধেকযাত্রী নিয়ে ভ্রমনের সময় কেবিনের ভাড়া অপরিবর্তীত থাকার কথা থাকলেও প্রতিটি সিঙ্গেল কেবিন ৮শ' থেকে ১ হাজার টাকা করে নেওয়ারও অভিযোগ করেন যাত্রীরা।
ঈগল-৩ এর দ্বিতীয় তলার সিঙ্গেল কেবিনে করে আসা মনির হোসেন নামক অপর যাত্রী চাঁদপুর কণ্ঠকে বলেন, ৮শ' টাকা ভাড়া দিয়ে একটি সিঙ্গেল কেবিন পেলাম। তবুও কেবিন পাওয়া যাচ্ছিলো না। আমাকে এক স্টাফ বলেছে এটা নিলে নিন নইলে একটু পর এই টিকেটও পাবেন না।
লঞ্চের অতিরিক্ত ভাড়ার প্রতিবাদের বহু যাত্রী লঞ্চে থেকেই ফেসবুকে পোস্ট করে। একাধিক যাত্রী জেলা প্রশাসন হেল্প লাইনে বিষয়টি অভিযোগ করলে ভ্রাম্যমান আদালতের বিশেষ টিম সন্ধ্যা ৭টায় চাঁদপুর লঞ্চঘাটে অবস্থান নেয়। লঞ্চঘাটে লঞ্চ ভিড়তেই অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ ও যাত্রীদের টিকেটে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের সত্যতা পেয়ে তাৎক্ষণিক শেখ ব্রাদার্স নেভীগেশন কোং এর মালিকানাধীন লঞ্চ ঈগল-৩ কে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
জরিমানার বিষয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মেজিস্ট্রেট জানান, লঞ্চ কর্তৃপক্ষের এমন বিধিনিষেধ ভঙ্গসহ বেশি ভাড়া আদায়ে বিষয়টি থামাতে যাত্রীদেরই এগিয়ে আসতে হবে। যাত্রীরা যখন দেখবেন, লঞ্চের যাত্রী ৫০ শতাংশ হয়ে গেছে, তখন তারা নেমে অন্য লঞ্চে উঠবেন। আমাদের অবহিত বা অভিযোগ করলে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থাগ্রহণ করবো। আগামীতেও চাঁদপুর থেকে ছেড়ে যাওয়া বা চাঁদপুরে আসা যে সকল লঞ্চ নিয়মবহির্ভূত কাজ করবে তাদেরকে জরিমানা গুনতে হবে।