বৃহস্পতিবার, ০২ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৬ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাজীগঞ্জে সাদপন্থীদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি
  •   অবক্ষয়ের কারণে সমাজে অপরাধ প্রবণতা বেড়ে চলছে
  •   মুন্সিগঞ্জে মানবতার স্পর্শ
  •   স্বপ্নের বই হাতে পেয়ে আনন্দে ফেটে পড়ল চাঁদপুরের শিক্ষার্থীরা
  •   চাঁদপুরে মুক্তিপণের জন্য অপহরণ ও অশ্লীল ভিডিও তৈরি: নারী সদস্য গ্রেফতার

প্রকাশ : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৩২

জুলাই গণঅভ্যুত্থান মামলা

পুলিশ নিজেই নিজের বিরুদ্ধে!

মো. জাকির হোসেন
পুলিশ নিজেই নিজের বিরুদ্ধে!

কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় পুলিশের ভেতর ঘূর্ণিপাক খাওয়া চাঁদাবাজির একটি অন্ধকার অধ্যায়ের মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে। এমনই এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে যখন পুলিশ সদস্য অনুপ বিশ্বাস এবং রাশেদুর রহমান নিজেদের নির্দোষ প্রমাণের লড়াইয়ে নামেন।

অনুপ বিশ্বাসের ঘটনা

গত ১৮ জুলাই রামপুরায় আন্দোলনের সময় ইটের আঘাতে আহত হয়ে অনুপ বিশ্বাস প্রায় দুই সপ্তাহ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। অথচ ১৯ জুলাই খিলগাঁওয়ে বিক্ষোভে একজনকে আহত করার অভিযোগে তাকে ১৭ অক্টোবর দায়ের হওয়া একটি হত্যা মামলায় আসামি করা হয়।

অনুপ বলেন, “আমি যখন হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছি, তখন জানতে পারি আমাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় আসামি করা হয়েছে। অজ্ঞান অবস্থায় কীভাবে অপরাধ করলাম?”

তিনি জানান, ঘুষ দিতে অস্বীকার করায় তাকে আরও হত্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেওয়া হয়।

রাশেদুর রহমানের অভিযোগ

এসআই রাশেদুর রহমানকেও একই মামলায় আসামি করা হয়, যদিও ঘটনার দিন তিনি রামপুরায় ছিলেন না। ভাসানটেক থানার নথিপত্র অনুযায়ী, ঘটনার ১১ দিন আগেই তাকে রামপুরা থেকে ভাসানটেকে বদলি করা হয়।

রাশেদুর বলেন, “ভাসানটেক থেকে রামপুরায় গিয়ে গুলি চালানো সম্ভব নয়। আমি কোনো অপরাধ করিনি। মামলা থেকে নাম বাদ দিতে ঘুষ কেন দেব?”

চাঁদাবাজি ও রাজনৈতিক প্রভাব

অনুপ এবং রাশেদুরের মতো আরও অনেক পুলিশ সদস্যের অভিযোগ, একটি চক্র স্থানীয় বিএনপি নেতাদের সঙ্গে মিলে ফাঁদ তৈরি করেছে। তারা নির্দোষ পুলিশ সদস্যদের টার্গেট করে মামলা দিয়ে ঘুষ দাবি করছে।

পদবী অনুযায়ী টাকা দাবি করা হয়—পরিদর্শকদের কাছে দুই লাখ, উপপরিদর্শকদের কাছে এক লাখ, এবং সহকারী উপপরিদর্শকদের কাছে ৫০ হাজার টাকা।

মামলার সংশয় ও রাজনৈতিক প্রভাব

মামলার এফআইআরে দেখা যায়, গুলি চালানো পুলিশ সদস্যদের নাম বাদ রেখে কৌশলে কিছু নির্দোষ সদস্যকে টার্গেট করা হয়েছে। এছাড়া মামলার বাদী মোহাম্মদ বাকের জানান, তিনি আসামিদের কাউকে চেনেন না এবং এফআইআর তৈরিতে তার কোনো ভূমিকা নেই।

নির্দোষদের লড়াই

ঘুষ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে অনুপ ও রাশেদুর তাদের নির্দোষ প্রমাণের লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের দাবি, তারা কোনো অপরাধ করেননি, বরং রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ষড়যন্ত্রের শিকার।

একটি প্রশ্নবিদ্ধ ব্যবস্থা

কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় পুলিশের ভূমিকা এবং রাজনৈতিক প্রভাবের জালে জড়িয়ে পড়া এই ঘটনাগুলো প্রশাসনিক দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়ে নতুন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়