বুধবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৪  |   ২৬ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা গণফোরামের কর্মী সমাবেশ
  •   নিষেধাজ্ঞার প্রথম দিনে ফরিদগঞ্জে অবাধে ইলিশ বিক্রি
  •   পিকনিকে যাওয়া শিক্ষার্থীর মরদেহ মেঘনায় ভেসে উঠলো দুদিন পর
  •   নেতা-কর্মীদের চাঁদাবাজি না করার শপথ করিয়েছেন এমএ হান্নান
  •   বিকেলে ইলিশ জব্দ ও জরিমানা

প্রকাশ : ২২ অক্টোবর ২০২৪, ২৩:০৫

মেঘনার জলদস্যু বাবলাকে গুলি করে হত্যা

অনলাইন ডেস্ক
মেঘনার জলদস্যু বাবলাকে গুলি করে হত্যা

মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় মেঘনা নদীর কুখ্যাত বাবলা ডাকাতকে তার বাড়িতে ঢুকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। ২২ অক্টোবর মঙ্গলবার আনুমানিক সকাল ৯টার দিকে দুর্বৃত্তরা উপজেলার ইমামপুর ইউনিয়নের মল্লিকেরচর এলাকায় বাবলার দোতলা ভবনের বাড়িতে ঢুকে তাকে গুলি করে হত্যা করে। ৫ আগস্টের পর চাঁদপুরের মামলাগুলোর গ্রেপ্তার এড়াতে বাবলা রহিম বাদশা নামক ব্যক্তির এই বাড়িতে থাকতেন।

নিহত বাবলা ওরফে উজ্জ্বল খালাসি মতলব উপজেলার মোহনপুর গ্রামের বাচ্চু খাঁর ছেলে। তিনি মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার মল্লিকের চর রহিম বাদশার বাড়িতে থেকে দীর্ঘদিন ধরে গজারিয়া, মুন্সিগঞ্জ সদর, চাঁদপুর এলাকায় বালুমহল নিয়ন্ত্রণ করতেন বলে পুলিশ জানায়।

মল্লিকেরচর এলাকার এক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আজ সকাল ৯টার দিকে আমি গরুর ঘাস কাটার জন্য নৌকা নিয়ে বাবলার বাড়ির সামনে দিয়ে যাচ্ছিলাম। এ সময় দেখি দুটি স্পিডবোট ও দুটি ইঞ্জিনচালিত ট্রলার নিয়ে হেলমেট পরে ২০ থেকে ২৫ জন বাবলার বাড়ির সামনে এসে নামে। এ সময় তারা স্পিডবোট ও ট্রলার থেকে নেমে বাবলার বাড়ির সামনে গুলি করে আতঙ্ক ছড়াতে থাকে। পরে বাবলার পাকা ভবনের দোতলায় উঠে বাবলাকে গুলি করে পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়ার আগে ওই বিল্ডিংয়ের দরজা বন্ধ করে চার থেকে পাঁচজনকে আটক করে স্থানীয়রা।

ইমামপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য জসিম বলেন, মল্লিকের চর এলাকায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন নিয়ে বাবলার সঙ্গে অপর একটি গ্রুপের দীর্ঘদিন যাবৎ বিরোধ চলছিল। অপর গ্রুপের নাম ঠিকানা জানতে চাইলে তিনি বলতে রাজি হননি।

ইউপি সদস্য জসিম আরও বলেন, নিহত বাবলা ওরফে উজ্জল উত্তর মতলব উপজেলার মোহনপুর গ্রামের বাচ্চু খাঁর ছেলে। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রির সঙ্গে জড়িত ছিলেন তিনি। বৈধ ইজারাদাররা বালু তুললেও তাঁকে চাঁদা দিত হতো। মুন্সিগঞ্জ সদর, গজারিয়া, মতলব, চাঁদপুর, শরীয়তপুর এলাকার পদ্মা নদীতে তিনি গড়ে তোলেন সশস্ত্র ডাকাত চক্র।

গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুর রহমান বলেন, বাবলা একজন কুখ্যাত ডাকাত। তার বিরুদ্ধে গজারিয়া থানাসহ বিভিন্ন থানায় ২৭টি ডাকাতি ও চাঁদাবাজি মামলা রয়েছে। উপজেলার ইমামপুর ইউনিয়নের মল্লিকের চর এলাকায় তাকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এলাকাটি দুর্গম হওয়ায় পুলিশ পাঠাতে দেরি হয়। নৌ পুলিশের সহায়তা তার মরদেহ উদ্ধার করে মুন্সিগঞ্জ সরকারি জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে বাবলাকে হত্যার খবরে তার গ্রামের বাড়িতে মিষ্টি বিতরণ করে উল্লাস প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। তারা বলেন, মতলব উত্তর ও মুন্সিগঞ্জ জেলার সীমান্তবর্তী মেঘনা নদীতে বাবলা বাহিনীর প্রধান বাবলা দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে। এলাকাবাসী বালু উত্তোলনের প্রতিবাদ করায় অনেকেই গুলিবিদ্ধসহ তাঁর বাহিনীর হামলার শিকার হতো।

এছাড়া চাঁদপুর ও মুন্সিগঞ্জ জেলার অন্তর্ভুক্ত পদ্মা-মেঘনা নদীতে চলাচলরত বালুবাহী বাল্কহেড, তেলবাহী জাহাজ, লঞ্চ, স্টিমার ও নদীতে মাছ ধরার জেলেদের ট্রলারে হামলা চালিয়ে ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও অবৈধ বালু উত্তোলনসহ সবকিছুই বাবলা বাহিনী হাতের মুঠে থাকত।

মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ রবিউল হক বলেন, বাবলার বিরুদ্ধে মতলব উত্তর থানায় বর্তমানে দুটি ডাকাতি মামলার ওয়ারেন্ট আছে। এছাড়া আমরা খোঁজ করে দেখেছি মুন্সীগঞ্জ, দাউদকান্দিসহ আশপাশের থানায় তার বিরুদ্ধে ২৭টি মামলা রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, নানা সময় তাকে পুলিশ গ্রেপ্তারের চেষ্টা করে। সে গ্রেপ্তার এড়ানোর জন্য মুন্সীগঞ্জ মল্লিকের চর জনৈক রহিম বাদশার বাড়িতে থাকতেন। সেখানেই আজকে গুলাগুলির ঘটনা ঘটে এবং সে মারা যায়।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়