প্রকাশ : ২৭ জুন ২০২৪, ০৯:২৮
আরেক ‘বেনজীর’ অতিরিক্ত ডিআইজি রফিকুল
ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে শত শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন ঢাকার সিটি এসবিতে (নগর স্পেশাল ব্রাঞ্চ) কর্মরত অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ রফিকুল ইসলাম শিমুল। তার গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার পাইককান্দী গ্রামে। তিনি সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত।
বেনজীরের মতো ঠিক একই কায়দায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে সংখ্যালঘু ও দুর্বলদের ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে নামমাত্র মূল্যে শত শত বিঘা জমি, শহরে-গ্রামে বিলাসবহুল বাড়ি, মাছের খামার সবই করেছেন। চাকরির সুবাদে হয়ে উঠেছেন অন্যতম বিত্তশালী। এ যেন পুলিশ বাহিনীতে আরেক ‘বেনজীর’। এরইমধ্যে রফিকুল ইসলাম এবং তার স্ত্রী ও আত্মীয়দের সম্পদ জব্দের প্রস্তুতি নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের অনুসন্ধানকারী টিম এরই মধ্যে রফিকুল ইসলামের সম্পদ জব্দের অনুমতি চেয়ে কমিশনে আবেদন করেছে, যা পর্যালোচনাধীন।
কমিশনের অনুমতি পেলে অনুসন্ধানকারী টিম আদালতে রফিকুল ইসলামের সব সম্পদ জব্দের আবেদন করবে। দুদকের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র কালের কণ্ঠকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।
অবৈধ উপার্জিত অর্থ দিয়ে রফিকুল ইসলাম নিজের ও স্ত্রীর পাশাপাশি ভাই-বোন, ভাই-বোনের ছেলেমেয়ে, শ্যালক, শ্যালকের স্ত্রী, শ্যালিকা, শ্যালিকার স্বামীসহ বিভিন্নজনের নামে অঢেল সম্পদ গড়েছেন। কালের কণ্ঠ’র নিজস্ব অনুসন্ধানে এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুর্নীতি দমন কমিশনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, রফিকুল ইসলাম নিজের ও স্ত্রীর পাশাপাশি আত্মীয়-স্বজনের নামেও সম্পদ গড়েছেন। অবৈধ সম্পদ অর্জন করে তিনি নিজেও বিপদে পড়েছেন, পাশাপাশি অবৈধ সম্পদের অংশীদার বানিয়ে আত্মীয়-স্বজনকেও বিপদের মধ্যে ঠেলে দিয়েছেন। এরই মধ্যে দুদকের অনুসন্ধান টিম রফিকুল ইসলামের এসব অবৈধ সম্পদ জব্দের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে, যাতে তিনি এসব সম্পদ বিক্রি করতে না পারেন। চলতি মাসের শুরুতে অনুসন্ধান টিম কমিশনে রফিকুল ইসলামের সম্পদ জব্দের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছে। কমিশনের অনুমতি পেলেই অনুসন্ধানকারী টিম অদালতে সম্পদ জব্দের আবেদন করবে।
জানতে চাইলে দুদকের প্রধান আইনজীবী খুরশীদ আলম খান কালের কণ্ঠকে বলেন, আইন ও বিধি অনুসারে যা যা করণীয়, তার সবই করবে দুদক। কমিশনের অনুসন্ধান টিম স্বাধীনভাবে কাজ করছে। অনুসন্ধান পর্যায়ে অনুসন্ধানকারী দল প্রয়োজন মনে করলে কমিশনের অনুমতিক্রমে আদালতে সম্পদ জব্দের আবেদনও করতে পারে। তবে নির্ধারিত সময়ে কমিশনে প্রতিবেদন দাখিলের তাগিদ রয়েছে। অনুসন্ধান প্রতিবেদন দাখিল করলে তার আলোকে কমিশন পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।
বিপুল সম্পদ জব্দের প্রস্তুতি দুদকের
চলতি বছরের শুরুর দিকে রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানে নামে দুদক। এরপর অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদকের তিন সদস্যের একটি টিম গঠন করা হয়। এরই মধ্যে দুদকের অনুসন্ধান টিম রফিকুল ইসলাম এবং তার স্ত্রী ও আত্মীয়-স্বজনের নামে করা অবৈধ সম্পদ জব্দের জন্য অনুমতি চেয়ে কমিশনে আবেদন করেছে।
গত ২ জুন অনুসন্ধান টিম সংশ্লিষ্ট শাখায় এই আবেদন দাখিল করে, যা বর্তমানে কমিশনের পর্যালোচনাধীন। কমিশন অনুমতি দিলেই অনুসন্ধান টিম রফিকুল ইসলামের সম্পদ জব্দে আদালতে যাবে। রফিকুল ইসলামের যেসব সম্পদ জব্দের অনুমতি চাওয়া হয়েছে সেগুলো হলো গোপালগঞ্জ সদরে রফিকুল ইসলামের নিজ নামে থাকা ৪৯ শতাংশ জমি, মিরপুরের মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের ১০ শতাংশ জমি, নিকুঞ্জে পাঁচ কাঠার প্লট, গোপালগঞ্জ সদরে আরও ৬৭ শতাংশ জমি, ফার্মগেটের চারতলা ভবন, শ্বশুরের নামে রাজধানীর নাখালপাড়ায় পাঁচতলা ও ছয়তলা দুটি ভবন, ভাইদের নামে প্রায় ১০ একর জমি, গোপালগঞ্জের কানাডা সুপার মার্কেট, রফিকুল ইসলামের ভাই আমিনুলের কাকরাইলের ফ্ল্যাট, আরেক ভাই দিদারুলের নামে মোহাম্মদপুরে ফ্ল্যাট, ভাতিজি উর্মীর নামে ধানমণ্ডির ফ্ল্যাট, রফিকুল ইসলামের ব্যক্তিগত দলিল লেখক উজ্জ্বল মামুন চৌধুরীর নামে কয়েক একর জমি, ভাতিজির স্বামীর নামে একটি বাড়ি, রফিকুলের স্ত্রীর নামে একটি জাহাজ, রফিকুলের শ্বশুরের নামে তিনটি জাহাজ এবং আরেক ভাই মনিরুলের ব্যবহৃত একটি জিপ। রফিকুল ইসলাম তাঁর ও অন্যদের নামে গড়া এসব সম্পদ বিক্রি করে বিদেশে পাড়ি জমাতে পারেন বলে দুদকের অনুসন্ধান টিম আশঙ্কা করছে। এ জন্য অনুসন্ধান টিম এসব সম্পদ জব্দে কমিশনের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছে।
বাবাকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে চাকরি
দুদকে জমা পড়া অভিযোগে বলা হয়, রফিকুল ইসলাম তার বাবার মৃত্যুর পর ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট সংগ্রহ করে চাকরিতে যোগদান করেন এবং সরকারি জমিও গ্রহণ করেন। এদিকে তার বাবা কখনো মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেননি বলে গোপালগঞ্জের স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানিয়েছেন। দুদক এসংক্রান্ত তথ্য চেয়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে চিঠি দিয়েছে। গত মাসের মাঝামাঝি সময়ে দুদক থেকে এই চিঠি পাঠানো হয়। দুদকের অনুসন্ধানকারী টিমের প্রধান উপপরিচালক মোহা. নুরুল হুদা স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বিভিন্ন তথ্য চাওয়া হয়েছে। চিঠিতে রফিকুল ইসলামের চাকরিতে যোগদানের তারিখ, পদের নাম, বিপি উল্লেখ করে এ পর্যন্ত অর্থবছরভিত্তিক বেতন-ভাতার পরিমাণ এবং এসংক্রান্ত রেকর্ডপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ পুলিশ বিভাগে কততম বিসিএসের মাধ্যমে যোগদান করেন এবং কোনো বিশেষ কোটায় চাকরি পেয়েছেন কিনা, এই সংক্রান্ত তথ্যাদিও পাঠানোর জন্য বলা হয়েছে।
রাজধানীতে একাধিক বাড়ি ও ফ্ল্যাট
রফিকুল ইসলাম ১০ বছরের বেশি সময় ফার্মগেটের (৮২/২ ইন্দিরা রোড) বাসায় বসবাস করছেন। বহুতল ফাউন্ডেশনের চারতলা ভবন এবং এর বিলাসবহুল আসবাব, যার আনুমানিক মূল্য ৫৬ কোটি টাকার বেশি। এই বাড়ির সব ফ্ল্যাটের ভাড়া রফিকুলের স্ত্রী ফারজানা রহমান সংগ্রহ করেন। এছাড়া মিরপুর চিড়িয়াখানার পাশে ১২ কোটি ১৯ লাখ টাকায় প্রায় দুই বিঘা জমি কেনেন রফিকুল ইসলাম। সেখানে টিনশেড বিল্ডিং করে ৬৩টি রুম ভাড়া দেওয়া হয়েছে।
সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা যায়, মিরপুর চিড়িয়াখানা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স এলাকার ৫ নম্বর রোডের ৪৫ নম্বর প্লটের প্রকৃত মালিক বীর মুক্তিযোদ্ধা আইয়ুব আলী। তাকে ভয় দেখিয়ে নামমাত্র মূলে জমিটি কিনে নেন রফিকুল ইসলাম শিমুল ও তার সহকর্মীরা।
জানতে চাইলে মুক্তিযোদ্ধা আইয়ুব আলী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাকে ধরে নিয়ে জোর করে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নেন। আমি তাদের কাছে অত্যন্ত নিরুপায় ছিলাম। জমি না দিলে আমাকে ক্রসফায়ারে দেবেন বলে ভয় দেখিয়েছেন। জীবন বাঁচাতে বাধ্য হয়ে আমি ওই স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করি। ’
সরকারি জায়গায় বিলাসবহুল বাংলো বাড়ি
দুদকের অনুসন্ধান ও কালের কণ্ঠ’র নিজস্ব অনুসন্ধানে জানা যায়, রফিকুল ইসলাম পুলিশে যোগ দেওয়ার আগে ৬ নম্বর পাইককান্দী ইউনিয়নের ২৯ নম্বর পাইককান্দী মৌজায় বিআরএস দাগ নম্বর ৪৭-এর ওপর ছোট একটি টিনের ঘর ছিল, যা এখনো বিদ্যমান। তিনি পুলিশে যোগ দেওয়ার পর একই ইউনিয়নের ২৭ নম্বর বিজয়পাশা মৌজার ১ নম্বর খাস খতিয়ানে ইজারা নেন বিআরএস দাগ নম্বর ৫৬৯, যে জমির পরিমাণ ১.০৭ একর, যা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে তিন বছরের জন্য শিডিউলের মাধ্যমে ইজারা দেওয়া হয়। রফিকুল ইসলাম তার ভাইদের এবং ভাগ্নিজামাই সেলিম মীরের নামে তিন বছরের জন্য ওই জমি ইজারা নেন। বিআরএস দাগ নম্বর ৫৬৯ পুকুরটি খাসপুকুর হওয়ার পরও ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধভাবে বালু ভরাট করে দখল করেন। এ ছাড়া এই বাড়ির সীমানার মধ্যে পাশের মালিক আসমা বেগমের প্রায় তিন কাঠা জমি জবরদখল করে নিজের বাড়ির সীমানাভুক্ত করে নেন। এভাবে মোট প্রায় ১.৫৬ একর জমির ওপর বিলাসবহুল ডুপ্লেক্স বাড়িসহ বাংলো বাড়ি নির্মাণ করেন।
কানাডা সুপার মার্কেট
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ২৭ নম্বর বিজয়পাশা মৌজা বিআরএস দাগ নম্বর ৩২৬, বিজয়পাশা বাসস্ট্যান্ডের জমি রফিকুল ইসলাম তার পাঁচ নম্বর ভাই মাহফুজুর রহমানের নামে মাহাতাব চৌধুরীর কাছ থেকে এক কোটি ৫৫ লাখ টাকায় কেনেন। মাহাতাব চৌধুরীর কাগজপত্র ভুল থাকায় পুনরায় এক কোটি ৫৫ লাখ টাকা দিয়ে ২০২২ সালে সোহেল চৌধুরী এবং ২০২৩ সালে নিজাম চৌধুরীর কাছ থেকে কেনেন। ক্রয় করা বিআরএস ৩২৬ নম্বর দাগের পূর্ব দিকে বিশ্বরোডসংলগ্ন সরকারি জায়গা দখল করে সেখানে বহুতল ফাউন্ডেশনে একটি মার্কেট নির্মাণ করেছেন। মার্কেটের নাম ‘কানাডা সুপার মার্কেট’।
মার্কেটের জায়গা তিনটি দলিলের মাধ্যমে গোপালগঞ্জ সদর সাবরেজিস্ট্রার অফিস থেকে রেজিস্ট্রি করা হয়। দাতাদের কাছ থেকে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে হেবা বিল এওয়াজ দলিলে ক্রয় করেন। দাতারা তার আত্মীয় না হওয়ার পরও হেবা দলিলমূলে ক্রয় করেছেন বলে অনুসন্ধানে জানা গেছে।
রফিকুলের স্ত্রী ও আত্মীয়দের নামে অগাধ সম্পদ
অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, রফিকুলের স্ত্রী ফারজানা রহমানের নামে ৪৯ শতাংশ জমি রয়েছে পাইককান্দী ইউনিয়নের আমুড়িয়া মৌজায়, যার বিআরএস দাগ নম্বর ৩৫৫। জমিটি ২০১৫-১৬ সালে গোপালগঞ্জ সদর রেজিস্ট্রার অফিসে দুটি দলিলের মাধ্যমে রেজিস্ট্রি করা হয়। জমিটির মূল্য ৯৮ লাখ টাকা। গোপালগঞ্জ সদর সাবরেজিস্ট্রার অফিস দলিল নম্বর ১৪৩/২০ মূলে রফিকুল ইসলাম তাঁর পাঁচ নম্বর ভাই মাহফুজুর রহমানের নামে জমি এক কোটি ৫০ লাখ টাকায় কেনেন। সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিতে এখানেও হেবা বিল এওয়াজ দলিলে ক্রয় করা হয়। দাতারা তাঁর আত্মীয় না হওয়ার পরও হেবা দলিলমূলে ক্রয় করেছেন।
২০২২ সালে গুলশানের ঢাকা ইউনাইডেট হাসপাতালের পাশে ছয় হাজার স্কয়ার ফিটের একটি ফ্লোর ১৪ কোটি ৫৫ টাকায় স্ত্রী ফারজানা রহমানের নামে কেনেন রফিকুল। ২০১৯ সালে ঢাকায় রাজউকের ঝিলমিল আবাসিক প্রকল্পে দুটি প্লট ১০ কোটি টাকায় স্ত্রী ফারজানা রহমানের নামে কেনা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলামের মেজো বোনের স্বামী শাখায়েত হোসেন মোল্লার নামে এক কোটি ৫৫ লাখ টাকায় জায়গাসহ একটি বাড়ি কেনেন। ভাগ্নিজামাই সেলিম মীরকে ২৭ নম্বর বিজয়পাশা মৌজায় বিআরএস নম্বর ১১১৫ জমিটিতে তিনতলা ফাউন্ডেশন করে ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে একতলা ভবন করে দিয়েছেন। ২০১০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে রফিকুল ইসলাম তার পাঁচ ভাই—এস এম নুরুল ইসলাম, এস এম দিদারুল ইসলাম, এস এম আমিনুল ইসলাম, এস এম মনিরুল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমানের নামে গোপালগঞ্জ রেলস্টেশনের আশপাশে ৪২ কোটি টাকার জমি কেনেন। ভাইদের নামে পূর্বাচলে প্লট বুকিং দিয়ে তার কিস্তি দিচ্ছেন। সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের পূর্বাচল, ঢাকা প্রকল্পে পাঁচটি প্লট বুকিং দিয়ে কিস্তি দিচ্ছেন। প্রতিটি প্লটের কিস্তি মূল্য এক কোটি ৬৫ লাখ টাকা। এছাড়া রফিকুল ইসলামের ব্যক্তিগত দলিল লেখক উজ্জ্বল মামুন চৌধুরী ও ভাই মাহফুজুর রহমানের নামে গোপালগঞ্জ সদরের সুকতাইল ইউনিয়নের সুকতাইল গ্রামে ১৬ কোটি টাকা মূল্যে ৪০ বিঘা জমি কেনা হয়েছে। এই জমির ওপর বিশাল মৎস্য খামার গড়ে তোলা হয়েছে।
রফিকুল ইসলামের ভাই আমিনুল ইসলাম একজন বেকার। অথচ তিনি বাসা নম্বর ১০৯, ফ্ল্যাট নম্বর ১৮ ডি, কর্ণফুলী গার্ডেন সিটি, কাকরাইলে এক কোটি ১০ লাখ টাকা মূল্যের ফ্ল্যাটে বসবাস করছেন। রফিকুল ইসলামের বড় ভাই এস এম নুরুল ইসলামের নামে ঢাকায় তিনটি ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন, যার মূল্য প্রায় দুই কোটি ৫০ লাখ টাকা। তিনি নাটরের চিনিকলের একজন কর্মচারী ছিলেন। রফিকুল ইসলাম গোপালগঞ্জ সদর উপজেলাধীন গোপীনাথপুর হিন্দুপাড়ায়ও আট বিঘা জমি ক্রয় করেছেন। তাঁর মেজো বোনের তিন মেয়ের নামে (মৌসুমী, নিশা ও রেশমি) সভারের নবীনগরে এক কোটি ৩০ লাখ টাকা মূল্যের দুটি ফ্ল্যাট কিনেছেন। এলাকাবাসী জানায়, পুলিশের এই বিত্তশালী কর্মকর্তা প্রতিবছর সর্বনিম্ন ১৫ থেকে ২০টি গরু এবং ৮ থেকে ১০টি ছাগল কোরবানি দেন।
এসব বিষয়ে কথা বলতে রফিকুল ইসলামের ঢাকার ঠিকানায় যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। তার মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তা বন্ধ পাওয়া গেছে।