প্রকাশ : ২০ মে ২০২৪, ২০:১০
চাঁদপুরে ওসি জাহাঙ্গীরের চাঁদা নেয়ার ভিডিও ভাইরাল
চাঁদপুরে ইলিশ অভয়াশ্রমের দু’মাসের নিষেধাজ্ঞাকালে অর্থের বিনিময়ে নদীতে জেলেদের মাছ ধরার সুযোগ পাইয়ে দেওয়ার শর্তে মোটা অঙ্কের চাঁদার টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে নীলকমল নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জাহাঙ্গীর হোসেনের বিরুদ্ধে। শনিবার ৩ মিনিট ২৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
ঐ ভিডিওতে দেখা গেছে, নিজ কার্যালয়ের চেয়ারে বসে সোর্সদের সঙ্গে রফাদফার দরবার শুরু করেন জাহাঙ্গীর হোসেন। তর্কের একপর্যায়ে জাহাঙ্গীর তার সোর্সদের বলেন, এখানে তো কোটি কোটি টাকা না। মাত্র ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকা।
এ সময় সোর্সদের বলতে শোনা যায়, দুই মাসের চাঁদার টাকা যদি এক মাসেই নিয়ে নেন, তাহলে কেমনে কী। উত্তরে জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, কোটি কোটি টাকা না। সুলতান মেম্বারের সেখানে ৪০ হাজার টাকা দেয়ার কথা থাকলেও ওই টাকাটা আমাকে দেয় নাই, হয়তো দিবে।
সামনে থাকা সোর্সরা তখন বলেন, টাকা তো শিউর না, শিউর করে দিলে হতো। উত্তরে জাহাঙ্গীর বলেন, সোর্সদের টাকা আমি দিতে পারব না এবং আমি দিবও না। এরপর সোর্সরা বলেন, দুই মাসের প্যাকেজে নৌকা প্রতি ৩০ থেকে ৪০ হাজার করে টাকা যারা অগ্রিম দিয়েছে তাদের কি পুনরায় ধরতে পারব? এখন যদি পুরোটাই আপনি নিয়া যান আমরা কী করে ধরব?
উত্তরে জাহাঙ্গীর বলেন, আচ্ছা শোনেন, আপনারা সব টাকা নিয়ে নেন। আর আমি যে কয় টাকা নিছি সব টাকা প্রয়োজনে সমান ভাগ করে নেন। বাকি এক মাসের যে টাকা আছে তা আপনারা নিয়ে নেন। আমার কোনো কন্টাক্ট নাই। আপনারা যা পাবেন নিয়ে নেন। ১ লাখ ৩০ হাজার উচ্চারণ করে, আমার কোনো কন্টাক্ট নাই, আপনারা যা পাবেন নিয়ে যান। আমি ওই ৪৫ হাজার টাকা আমার থেকে দিয়ে দিব। ঠিক আছে? আর আপনারা যেভাবে পারেন টাকা আদায় করে নিয়ে নেন। এ বিষয়ে আমার কোনো কন্টাক্ট নাই।
ভাইরাল ভিডিওর বিষয়ে জানতে চাইলে নীলকমল নৌপুলিশ ফাঁড়ির ওসি জাহাঙ্গীর হোসেন কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি। জানা গেছে, ২০২৩ সালের ৪ জুন নীলকমল নৌপুলিশ ফাঁড়িতে ওসি হিসেবে যোগ দেন জাহাঙ্গীর। এর পরই তিনি নৌপুলিশের ভাবমূর্তির দিক বিবেচনায় না নিয়ে নানা অপতৎপরতায় টাকা কামানোর চেষ্টা চালাতে থাকেন। এর মধ্যে এ ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে তার অবৈধ পন্থায় টাকা আয়ের বিষয়টি সামনে আসে।
ইলিশ অভয়াশ্রমে চাঁদপুরের মতলব উত্তরের ষাটনল থেকে হাইমচরের চরভৈরবীর পদ্মা-মেঘনা নদীর ৭০ কিলোমিটার এলাকায় ইলিশসহ সকল প্রকার মাছ ধরা মার্চ-এপ্রিল দু’মাস পুরোপুরি নিষিদ্ধ থাকে।