প্রকাশ : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১:৪৯
চাঁদপুরে গোপালগঞ্জের মেয়ে শিলা হত্যার রহস্য উদঘাটন
প্রধান আসামীসহ গ্রেফতার ২
চাঁদপুর সদরের মৈশাদিতে খুন হওয়া গোপালগঞ্জের মেয়ে শিলা খানম(২৮) হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (পিবিআই) চাঁদপুর। এই হত্যার ঘটনায় মূল আসামী মোঃ রাজীব মজুমদার (২১) ও তার সহযোগী মোঃ কামরুল হাসান হৃদয়কে (২২) গ্রেফতার করা হয়েছে। পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে বিয়ের জন্য চাপ দেয়ায় ওই নারীকে হত্যা করা হয়।
|আরো খবর
শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শহরের বাবুরহাট পিবিআই চাঁদপুর জেলা কার্যালয়ে পুলিশ সুপার (এসপি) মোঃ মোস্তফা কামাল রাশেদ প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার
(৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মৈশাদীর এক বাড়ির বাগানের জঙ্গল থেকে শিলা খানম নামে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করে চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ। জাতীয় পরিচয় পত্রের সূত্র ধরে নিহত
শিলা খানমের পরিচয় সনাক্ত করা হয়। সে গোপালগঞ্জ জেলা সদরের আড়য়া কংশুর গ্রামের মুনছার শেখের মেয়ে এবং স্থানীয় মো. ইউসুফ আলীর স্ত্রী।
এই ঘটনায় চাঁদপুর সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের হওয়ার পর মামলাটি পিবিআই তালিকাভুক্ত হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয় পিবিআই উপ-পরিদর্শক (এসআই) আতিকুর রহমানকে।তদন্ত টিম তথ্য প্রযুক্তি ব্যাবহার করে শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাতে উত্তর মৈশাদি গ্রামের মজুমদার বাড়ি আজিজ মজুমদারের ছেলে প্রধান আসামী মোঃ রাজীব মজুমদার এবং অপর আসামী পাশের ইউনিয়ন আশিকাটির হাঁপানিয়া গ্রামের খান বাড়ীর মৃত স্বপন খানের ছেলে মোঃ কামরুল হাসান হৃদয়কে সদর থানাধীন দাসদী গ্রামস্থ পাঠান বাড়ির মোঃ মাসুদ গাজী বাড়ী হতে গ্রেফতার করা হয়।
আসামীদের গ্রেফতারকালে ভিকটিম শীলা খানম (২৮) এর ব্যবহৃত এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোনটি মূল আসামী মোঃ রাজিব মজুমদারের নিকট হতে এবং আসামীদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও সীম কার্ডগুলো উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে জব্দ করা হয়।
পিবিআই পুলিশ সুপার জানান, প্রধান আসামি রাজীব মজুমদার গোপালগঞ্জের একটি জুয়েলারি দোকানে চাকরির সুবাদে পরিচয় হয় স্থানীয় গৃহবধূ শীলা খানমের সাথে। পরে তাদের মধ্যে পরকীয়া ও শারীরিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে শীলা বেগম তাকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। এরপর তার পরকীয়া প্রেমিক রাজীব মজুমদার পরিকল্পনা মতো শীলাকে চাঁদপুরে নিয়ে আসে। তার উদ্দেশ্য ছিলো লঞ্চযোগে চাঁদপুর আসার পথেই শীলাকে হত্যা করে নদীতে ফেলে দিবে। কিন্তু সে পরিকল্পনা ব্যর্থ হওয়ায় মৈশাদী ইউনিয়নের একটি বাগান বাড়িতে এনে অপর ২ বন্ধুর সহযোগিতায় শীলাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর লাশ জঙ্গলে ফেলে রাখে।
এ হত্যাকাণ্ডের ৩৬ ঘন্টার মধ্যে আমরা প্রধান আসামি রাজিব মজুমদার ও তার সহযোগী বন্ধু মো. কামরুল হাসান হৃদয়কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই। এসময় শীলা বেগম ও আসামীর মোবাইল ফোন জব্দ করেছি। প্রধান আসামি রাজিব মজুমদারের ৫টি ফেইসবুক আইডি রয়েছে। এসবের মাধ্যমে বিভিন্ন নারীর সাথে পরকীয়া প্রেম করে আসছিলো সে।
আসামিদের চাঁদপুর আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পিবিআই'র ওই পুলিশ সুপার।