প্রকাশ : ০৩ অক্টোবর ২০২৫, ০২:০২
গাজা ফ্লোটিলায় গ্রেটা থুনবার্গ আটক
মানবিক অভিযানে ইসরায়েলি হামলা!
বিশ্বজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া

গাজা উপত্যকায় অবরোধ ভাঙার মিশনে ৪৪টি জাহাজ; শতাধিক কর্মী আটক, নেলসন ম্যান্ডেলার নাতিও আটককৃতদের তালিকায়
|আরো খবর
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য যাত্রা করা গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা বহরটি ইসরায়েলি নৌবাহিনীর হাতে আটক হয়েছে। এ সময় সুইডিশ জলবায়ু কর্মী ও বিশ্বখ্যাত পরিবেশ আন্দোলনের নেতা গ্রেটা থুনবার্গকেও আটক করা হয়।
পরে ইসরায়েলি সেনারা তাকে ঘিরে রাখার সময় একটি ভিডিও প্রকাশিত হয়, যেখানে গ্রেটা বলেন—
“আমাকে ইসরায়েলি বাহিনী অপহরণ করেছে এবং আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমাদের মিশন ছিল সম্পূর্ণ অহিংস ও আন্তর্জাতিক আইনসম্মত।
আমার সরকার ও বিশ্ববাসীকে আহ্বান জানাই, যেন অবিলম্বে আমাদের মুক্তির দাবি জানানো হয়।”
সিএনএন, রয়টার্স, এপি, আলজাজিরাসহ আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, বুধবার গভীর রাতে ইসরায়েলি নৌ কমান্ডোরা হঠাৎ করেই ফ্লোটিলার প্রায়
৪০টি জাহাজে প্রবেশ করে। এ সময় GPS সিগন্যাল বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং শত শত কর্মীকে জোর করে নামিয়ে আনা হয়। আটক যাত্রীদের মধ্যে রয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার কিংবদন্তি নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি মান্ডলা ম্যান্ডেলাও।ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, আটককৃতদের সবাইকে “নিরাপদে আশদদ বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে” এবং তাদের ইউরোপে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া
ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে বলেছে—
গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা একটি শান্তিপূর্ণ বেসামরিক উদ্যোগ, যার লক্ষ্য গাজা উপত্যকার অবরোধ ভাঙা।আন্তর্জাতিক বিচার আদালত ইতোমধ্যেই ইসরায়েলের দখলদারিত্বকে অবৈধ ঘোষণা করেছে।
তাদের মতে, গাজার সমুদ্রসীমায় ইসরায়েলের কোনো সার্বভৌম অধিকার নেই এবং এই অভিযান
“অনাহার নীতি ও গণহত্যারই আরেক রূপ”।আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
বিশ্বজুড়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকা সরকার দ্রুত মুক্তির দাবি জানিয়েছে, বিশেষ করে ম্যান্ডলার আটক হওয়ায় দেশজুড়ে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। আমনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, “এটি আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন এবং গাজায় উদ্দেশ্যমূলক মানবিক সঙ্কট জিইয়ে রাখার কৌশল।” তুরস্ক ও ইরান ঘটনাটিকে সরাসরি যুদ্ধাপরাধ আখ্যা দিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও একাধিক পশ্চিমা রাষ্ট্র উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
বাংলাদেশের জনগণ দীর্ঘদিন ধরে ফিলিস্তিনিদের মানবিক সংগ্রামে সহানুভূতি প্রকাশ করে আসছে।
ঢাকায় ও দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রায়ই গাজা অবরোধের প্রতিবাদে বিক্ষোভ হয়।
বাংলাদেশের মানবাধিকার সংগঠনগুলোও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মতো এ ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, গ্রেটা থুনবার্গের মতো বিশ্বনেতৃত্বের আটক হওয়া
গাজা সংকটকে নতুন মাত্রায় নিয়ে যাবে এবং বাংলাদেশসহ মুসলিম বিশ্বকে আরও ঐক্যবদ্ধ হতে উৎসাহিত করবে।গ্রেটা থুনবার্গ ও অন্যান্য আটককৃতদের ভাগ্য এখন আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও কূটনৈতিক আলোচনার ওপর নির্ভর করছে। তবে একটি বিষয় স্পষ্ট—গাজা অবরোধকে ঘিরে বৈশ্বিক জনমত আরও একবার তীব্রভাবে বিস্ফোরিত হলো।
ডিসিকে/এমজেডএইচ