প্রকাশ : ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮:৫৮
সৌদিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নজিরবিহীন রেকর্ড, ছাড়িয়েছে ৩০০
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবে চলতি বছর বিভিন্ন অপরাধে অভিযুক্ত ৩ শতাধিক মানুষের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। মঙ্গলবার নতুন করে চারজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করায় দেশটিতে মোট মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সংখ্যা বার্ষিক সর্বোচ্চের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির এক পরিসংখ্যানে সৌদিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের এই হিসেব তুলে ধরা হয়েছে। সৌদি আরবের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা সৌদি প্রেস এজেন্সি (এসপিএ) বলেছে, মঙ্গলবার মাদক চোরাচালানের দায়ে দোষী সাব্যস্ত তিনজন এবং অন্য অপরাধে অভিযুক্ত একজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই চারজনকে নিয়ে চলতি বছরে সৌদি আরবে মোট ৩০৩ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। যা অতীতের যেকোনও বছরের তুলনায় সবচেয়ে বেশি। উপসাগরীয় অঞ্চলের এই দেশটিতে গত সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ ২০০ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল। সৌদির সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, গত কয়েক সপ্তাহে দেশটিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের হার দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতে, ২০২৩ সালে চীন ও ইরানের পর সৌদি আরব বিশ্বে তৃতীয় সর্বোচ্চসংখ্যক কারাবন্দির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে।
এর আগে, দেশটিতে এক বছরে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সর্বোচ্চ রেকর্ড হয়েছিল ২০২২ সালে। ওই বছর দেশটিতে বিভিন্ন ধরনের অপরাধের দায়ে মোট ১৯৬ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় বলে জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। লন্ডন-ভিত্তিক এই মানবাধিকার সংস্থা ১৯৯০ সাল থেকে সৌদি আরবে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের বার্ষিক পরিসংখ্যানের রেকর্ড রাখতে শুরু করে।
জার্মানির বার্লিন-ভিত্তিক সৌদি মানবাধিকার সংস্থা ইউরোপীয় সৌদি অর্গানাইজেশন ফর হিউম্যান রাইটসের (ইএসওএইচআর) আইনি পরিচালক তাহা আল-হাজি সৌদি আরবের ২০২৪ সালে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার ‘‘রকেট গতির’’ নিন্দা জানিয়েছেন। একই সঙ্গে সর্বোচ্চ সাজা কার্যকরের এই গতিকে ‘‘দুর্বোধ্য ও ব্যাখ্যাতীত’’ বলে অভিহিত করেছেন তিনি। এর আগে, মানবাধিকার কর্মীরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছিলেন, ‘‘সৌদি আরবে চলতি বছর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সংখ্যা ৩০০ ছাড়িয়ে যেতে পারে। দেশটিতে প্রায় প্রত্যেক দিনই একজনের করে মৃত্যুদণ্ড রেকর্ড করা হচ্ছে।’’
সূত্র: এএফপি।