শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪  |   ২২ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   সুদ-ঘুষের বিরুদ্ধে বয়ান করায় ইমামকে চাকরি ছাড়ার নির্দেশ!
  •   এনআইডিতে ভোটার এলাকা হিসেবে থাকছে না বর্তমান ঠিকানা
  •   জাহাজে ৭ খুনের রহস্য উদ্‌ঘাটনসহ বিভিন্ন দাবিতে কর্মবিরতি
  •   নিখোঁজের একদিন পর বৃদ্ধের মরদেহ মিললো পুকুরে
  •   সৌদি আরবে বাংলাদেশের ১৬তম  রাষ্ট্রদূত মো. দেলোয়ার হোসেন

প্রকাশ : ১৮ অক্টোবর ২০২৩, ২০:১০

অনিশ্চয়তায় গাজার হাজারো অন্তঃসত্ত্বা

অনলাইন ডেস্ক
অনিশ্চয়তায় গাজার হাজারো অন্তঃসত্ত্বা

ইসরায়েলের বোমা হামলার শব্দে ঘুম ভাঙে আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা খুলুদ খালেদের। সময়টা এক সপ্তাহ আগের। সেই সময় ছেলের সঙ্গে ঘুমাচ্ছিলেন তিনি। বোমা হামলায় তাঁদের ঘরটি কালো ধোঁয়ায় ছেয়ে যায়। এতে দম বন্ধ হয়ে আসে তাঁর। অত্যন্ত খারাপ লাগতে শুরু করে। তাঁর মনে হয়, আগেই উঠে যাচ্ছে প্রসববেদনা। এতে অনাগত সন্তানের জন্য আতঙ্ক তৈরি হয় তাঁর মনে।

২৮ বছর বয়সী খুলুদ খালেদের বাড়ি গাজার উত্তরাঞ্চলের আল-কারামা জেলায়। সেদিনের সেই দমবন্ধ পরিস্থিতিতেই তিনি এলাকা ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন।

সিএএনকে এই নারী বলেন, এলাকা ছাড়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি ছাড়ার পর তাঁরা শুধু ভবন গুঁড়িয়ে যেতেই দেখেন। তখন তাঁদের মনে হচ্ছিল, যেকোনো মুহূর্তে মরে যেতে পারেন তাঁরাও। ইসরায়েলি বিমান হামলায় সামান্য কয়েক মিটার দূরে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের মরতে দেখেছেন তিনি। ঘটনার ভয়াবহতা তখনো ছিল তাঁর চোখেমুখে। বোমা হামলায় ফিলিস্তিনিদের নিহত হতে দেখে ছেলেকে শক্ত করে জাপটে ধরে রেখেছিলেন তিনি, যাতে মরলেও একসঙ্গে মরতে পারেন তাঁরা।

খুলুদ খালেদ অবশেষে গাজার দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিসে এসে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছেন। সেখানে কোনোমতে প্রাণে বেঁচে আছেন বলে জানালেন তিনি। আরও জানালেন, মৃত্যুভয় তাঁদের তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। বেঁচে আছেন সামান্য এক টুকরো শুকনো পাউরুটি খেয়ে। বললেন, ‘আগামীকাল পাউরুটি পাব কি না, জানি না।’

গাজায় ইসরায়েলের সর্বাত্মক অবরোধ আরোপের জেরে গুরুতর খাদ্যসংকট তৈরি হয়েছে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও পানি সরবরাহ বন্ধ থাকায় সেগুলোরও ভীষণ সংকট দেখা দিয়েছে। মানবেতর দিন কাটাচ্ছে গাজাবাসী।

জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) তথ্য অনুযায়ী, গাজায় অন্তঃসত্ত্বা নারী রয়েছেন প্রায় ৫০ হাজার। এর মধ্যে ১০ শতাংশ নারী আগামী মাসে সন্তান জন্ম দেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ইসরায়েল-ফিলিস্তিন চলমান যুদ্ধ শিগগির থেমে যাচ্ছে এমনটা মনে হচ্ছে না। সম্প্রতি ইসরায়েল স্থল অভিযানে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে গাজার উত্তরাঞ্চল ছেড়ে বাসিন্দাদের উপত্যকাটির দক্ষিণাঞ্চলে চলে যেতে নির্দেশ দেয়। এতে উত্তরাঞ্চলের ১১ লাখ বাসিন্দারা প্রায় অর্ধেক এলাকা ছেড়েছে বলে জানা গেছে। কিন্তু দক্ষিণাঞ্চলেও বোমা হামলা থেমে নেই। গোটা গাজা উপত্যকাই এখন যুদ্ধক্ষেত্র। কাজেই এই যুদ্ধক্ষেত্রেই অনাগত সন্তানদের আসার আশঙ্কা তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে অন্তঃসত্ত্বা এসব নারীকে।

জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের ফিলিস্তিনবিষয়ক প্রতিনিধি ডোমিনিক অ্যালেন বলেন, ইসরায়েল ১১ দিন ধরে বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে। ভয়ংকর এই হামলা যে কারও জন্যই দুঃস্বপ্নের মতো। কিন্তু অন্তঃসত্ত্বা এই নারীরা অনাগত সন্তানের জন্য দিন কাটাচ্ছেন ‘দ্বিগুণ আতঙ্কে’।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়