প্রকাশ : ২৫ জুন ২০২১, ১৯:১৬
প্রতারণা ও ধর্ষণের অভিযোগে ব্যবসায়ী আটক
ধর্ষণ ও প্রতারণার অভিযোগে আটক হয়ে চাঁদপুর জেলখানায় আছেন চাঁদপুরের বিখ্যাত মার্কেট হাকিম প্লাজার দ্বিতীয় তলার পালকি ফ্যাশনের স্বত্বাধিকারী মোবারক হোসেন পাটোয়ারী। তার গ্রামের বাড়ি ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৭নং পাইকপাড়া ইউনিয়নের জয়শ্রী পাটোয়ারি বাড়ি। বাবার নাম শাহাদাত হোসেন পাটোয়ারী।
অভিযোগের আলোকে জানা যায়, মোবারক তার পালকি ফ্যাশনের আড়ালে বিভিন্ন নারীর সাথে বোনের সম্পর্ক গড়ে তুলতেন। পরে বিভিন্ন রকম প্রলোভনে ও বিয়ে করার আশ্বাস দিয়ে অনেক নারীর কাছ থেকে টাকা নিয়ে আর ফেরত দিতেন না এবং নারীদের সাথে ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তুলতেন। শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও ধারণ করে রেখে পরবর্তীতে সে ভিডিও দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা নিতেন। কিন্তু কোনো রকম প্রমাণ না থাকায় এবং মানসম্মানের দিক চিন্তা করে কেউ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সাহস পেতেন না। এতে বাধ সাদে এক সাহসী নারী। তিনি মোবারকের প্রলোভনে পড়ে সহায়সম্বল সব হারিয়ে পথে বসার মত উপক্রম হয়। পরে তিনি মোবারকের কঠিন শাস্তি দাবি করে গত ১১ জুন চাঁদপুর মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগের তদন্ত সিআইডির হাতে দিলে সেই আলোকে গত বুধবার গভীর রাতে এক বিশেষ অভিযান চালিয়ে মোবারক হোসেন পাটোয়ারীকে শাহরাস্তি থানায় তার এক বোনের বাড়ি থেকে আটক করা হয়। অভিযোগ মোতাবেক এবং ওই নারীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, তার এক জায়ের মাধ্যমে মোবারকের সাথে তার পরিচয় হয়। সেই থেকে মোবারক তাকে বিভিন্ন আপত্তিকর কথা বলতেন ও বিয়ের আশ্বাস দিতেন, বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে গত তিন বছরে অসংখ্যবার শারীরিকভাবে মেলামেশা করেন এবং মেলামেশার সময়গুলো ভিডিও করে রাখেন। সেই ভিডিওগুলোর ভয় দেখিয়ে এবং দুজনেই স্বামী-স্ত্রীর দোহাই দিয়ে জমাকৃত টাকার ২৫ লাখ এবং ৬ লাখ টাকার স্বর্ণ নিয়ে যায়। এসব টাকা নিয়েই মোবারক হাকিম প্লাজার পালকি ফ্যাশনে মালামাল উঠাতেন এবং ওই দোকানটি ওই নারীর বলে খুশি রাখতেন। মোবারকের এসব কাজে সহযোগিতা করতেন মামলার ২ ও ৩ নং আসামী তথা মোবারকের বোনেরা।
প্রতারিত নারী এই প্রতিনিধিকে আরো বলেন, হঠাৎ তিনি জানতে পারেন মোবারক অন্য এক জায়গায় বিয়ে করতেছে। তা জেনে মোবারককে ফোন দিলে তিনি সব মিথ্যে বলে জানান। পরের দিন মোবারক এবং তার দু-বোন মিলে আমার বাসায় আসলে বিয়ের কথা জিজ্ঞেস করলে তারা আমাকে বেদম মারধর করে। পরে স্থানীয় লোকজন আমাকে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে চিকিৎসা করায়। হাসপাতালে থাকাকালীন সময়ে মোবারক অন্য জায়গায় বিয়ে করে ফেলে। প্রতারিত নারী আরো বলেন, এখন বিভিন্নভাবে শুনতে পাই, প্রতারক মোবারক আরো অনেকের সাথে এমনটা করেছে। তার উপযুক্ত শাস্তি চেয়ে এবং বিভিন্ন মান্যগণ্য ব্যক্তিবর্গের মতামত নিয়ে চাঁদপুর মডেল থানায় মামলা করেছি। আশা করছি পুলিশ প্রশাসন এবং আদালতের কাছে প্রতারক মোবারকের বিরুদ্ধে সঠিক বিচার পাবো।
শেষ খবর পর্যন্ত চাঁদপুর সিআইডির কর্মকর্তা শাহনেওয়াজ বলেন, বৃহস্পতিবার আমরা আসামীকে আদালতে প্রেরণ করেছি এবং আসামীর রিমান্ড আবেদন করেছি, রিমান্ড শুনানি হওয়ার আগ পর্যন্ত আসামী জেল হাজতে আছেন, রিমান্ড শুনানির পরে বাকি পদক্ষেপ নেয়া হবে।