প্রকাশ : ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৪২
শীতকালে হৃদরোগীর করণীয়
শীতের তীব্রতা বাড়লে উচ্চরক্তচাপ, হার্টের ব্যথা এমনকি হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও বাড়ে। সাধারণত শীতে রক্তচাপের পরিমাণ ১২ থেকে ১৮ মিলিমিটার বাড়তে পারে। বর্তমানে দেশে অসংক্রামক রোগে যতজন মারা যাচ্ছেন তার ৩৬ শতাংশই হৃদরোগী।
শীতের প্রভাবে রক্ত উপাদানে কিছু পরিবর্তন আসে। রক্ত জমাট বাঁধার জন্য দায়ী রক্তকণিকা, প্লাটিলেট, লোহিত কনিকা, ফিব্রিনোজেন এবং কোলেস্টেরল বেড়ে যায় এ সময়। এতে রক্ত জমাট বাঁধার আশঙ্কা বাড়ে ২০ ভাগ পর্যন্ত। এর বাইরে যারা ডায়াবেটিস, হাইপারটেশনের মতো অন্য রোগে ভুগছেন তারা আছেন বেশি ঝুঁকিতে। এ সময়ে তাই তাদেরও থাকতে হবে বেশি সতর্ক। কেননা শীতে সাধারণত আমাদের শরীর উষ্ণ রাখতে হৃৎযন্ত্রকে প্রায় দ্বিগুণ কাজ করতে হয়।
হৃদরোগের কিছু লক্ষণ
বুক, পিঠ, পেট, গলা, বাঁ বাহুতে ব্যথা, ঘাড় বা চোয়ালে ব্যথা এবং অস্বস্তিকর অনুভূতি। শ্বাসকষ্ট হবে ও পাকস্থলীর ওপরের দিকে অসহনীয় ব্যথা হবে। মাথা হালকা লাগতে পারে।
প্রতিরোধে করণীয়
হৃদরোগ হতে পারে জন্মগত, বাতজ্বরজনিত হৃদরোগ, উচ্চরক্তচাপজনিত, হৃৎপিণ্ডে স্বল্প রক্ত চলাচলজনিত কারণে। হৃৎপিণ্ডে মাংসের দুর্বলতাজনিত কারণেও হৃদরোগ হয়।
শীতকালে হৃদরোগীর করণীয়
শরীরচর্চা সবসময়ই ভালো। তবে হৃদরোগীদের সেটি করতে হবে ডাক্তারের পরামর্শ মেনে। শীতের সকালে তীব্র ঠাণ্ডায় হাঁটা মোটেও উচিত হবে না। বিকেল বা সন্ধ্যায় সূর্যের আলো ফুরিয়ে যাওয়া আগে হাঁটা ভালো।
শরীরের তাপমাত্রা স্থিতিশীল রাখতে ঘরের ভেতরেই বেশি সময় পার করা উচিত। অন্যান্য শীতের কাপড়ের পাশাপাশি হাত ও পায়ে মোজা পরতে হবে। গোসল করতে হবে হালকা গরম পানি দিয়ে।
ভারী খাবার সব বয়সেই হৃদযন্ত্রে বাড়তি চাপ ফেলে। তাই স্বাস্থ্যকর খাবারও কম পরিমাণে নিয়ে কয়েকবারে খেতে হবে। পানি ও লবণ গ্রহণের মাত্রার ওপর নজর রাখতে হবে।
তাপমাত্রা হ্রাসের ফলে শরীরের স্পর্শকাতর স্নায়ুতন্ত্রের সক্রিয়তা বেড়ে যায়। এতে রক্তনালির সংকোচনের ফলে হার্টের জন্য শরীরের বিভিন্ন অংশে রক্ত পাম্প করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। এই বর্ধিত চাপের কারণে অ্যানজিনা, হার্ট অ্যাটাক, অ্যারিদমিয়া এবং অন্যান্য কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
শীতে ঘরে হৃদরোগী থাকলে পরিবারের বাকি সদস্যদের এ সময় প্রস্তুত থাকতে হবে। রোগীর বুকে অস্বস্তি, ঘাম, হাঁসফাঁস অনুভূতি, ঘাড়, কাঁধ কিংবা চোয়ালে ব্যথা ইত্যাদি দেখা দিলে অবহেলা করা যাবে না।
বেশি শীতের প্রকোপে হার্টের অনিয়মিত হৃদস্পন্দন শুরু হতে পারে। যার ফলে তাৎক্ষণিক মৃত্যু ঘটাও অস্বভাবিক নয়। পেট ভরে খেয়ে ঠাণ্ডার মধ্যে হাঁটাহাঁটি করলে সহজেই অ্যানজিনার ব্যথা শুরু হতে পারে। এর জন্য রক্তনালির সংকোচন দায়ী।