শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২২ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।
  •   রাষ্ট্রীয় পদে আসীন হচ্ছেন খবরে আসামিপক্ষে শুনানি করলেন না সমাজী।

প্রকাশ : ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:২৯

ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল সংকট : ভোগান্তিতে সেবাপ্রার্থীরা

প্রবীর চক্রবর্তী
ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল সংকট : ভোগান্তিতে সেবাপ্রার্থীরা

ফরিদগঞ্জ উপজেলার গুপ্টি পূর্ব ইউনিয়ন থেকে সাহেলা বেগম এসেছেন নিজের এবং তার সন্তানের চিকিৎসা করাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। কিন্তু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় ফেরত যেতে বাধ্য হন।

উপজেলার চরমথুরা এলাকা থেকে শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে আসেন আবুল কালাম নামে এক বৃদ্ধ। সকাল ১০টার দিকে এসে দুপুর ১২টার সময়ও চিকিৎসক দেখাতে না পেরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, অনেকক্ষণ ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। এখনো চিকিৎসক দেখাতে পারিনি। পরে আরও আধা ঘণ্টা অপেক্ষার পর তিনি চিকিৎসক দেখাতে পারেন। এ রকম অনেক বিভাগেরই চিকিৎসকসহ বিপুল সংখ্যক জনবল সংকট নিয়ে চলছে ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দৈন্দন্দিন কাজ। অথচ উপজেলার অপেক্ষাকৃত দরিদ্র শ্রেণির লোকজন প্রতিদিনই ভিড় করছে এই হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে।

জানা গেছে, ষাটের দশকে স্থাপিত ফরিদগঞ্জ উপজেলার একমাত্র সরকারি এই হাসপাতালটি ২০২১ সালের ১৭ মে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রশাসনিক অনুমোদনে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত হয়। হয়েছে অকাঠামোগত উন্নয়নও। কিন্তু বর্তমানে ছয় লক্ষাধিক লোকের চিকিৎসা সেবার জন্যে ৫০ শয্যার এই হাসপাতালটিতে চিকিৎসক, সেবিকা ও কর্মচারীসহ চারটি শ্রেণির জনবল কাঠামো অনুমোদন না হওয়ায় কার্যত চিকিৎসা সেবা আগের মতোই রয়েছে। ফলে একটি পৌরসভাসহ ১৬টি ইউনিয়নের ছয় লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসার অন্যতম ভরসাস্থল ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে অতিরিক্ত চাপ পড়ছে বর্তমানে কর্মরত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের উপর।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, বহির্বিভাগে প্রতিদিন ৭০০ থেকে ৮০০ রোগী চিকিৎসা নিতে আসে। এছাড়া নিয়মিত জরুরি বিভাগে প্রায় ১শ’ জন এবং আন্তঃবিভাগে ৭৫ থেকে ৮৫ জন রোগী চিকিৎসা নেন। এর পরেও রোগীর চাপ থাকায় মেঝেতে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন রোগীরা।

বর্তমানে ৫০ শয্যার এই হাসপাতালে মোট চিকিৎসক সংখ্যা ৩৮জন থাকার কথা থাকলেও রয়েছে ২৪জন। এদের মধ্যে আবার বেশ কয়েকজন সাব সেন্টারের, যারা ডেপুটেশনে এসে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছেন। আবার এখানকার চিকিৎসক কয়েকজন প্রেষণে রয়েছেন অন্যত্র। ৫০ শয্যার হাসপাতালের জনবল কাঠামো অনুমোদন হলে বর্তমান প্রেক্ষাপটে চিকিৎসকসহ সকল শ্রেণির কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সংখ্যা হবে ১১৩ জন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের এক কর্মকর্তা বলেন, এখানে একজন চিকিৎসককে দৈনিক একশ' থেকে দেড়শ' রোগী দেখতে হয়। যেখানে একজনকে ৩০ থেকে ৪০ জনের বেশি রোগী দেখা উচিত নয়। এভাবে একটি হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম চলতে পারে না।

হাসপাতালের আরএমও ডা. মুজাম্মেল হোসেন বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট প্রকট। ফলে স্বাভাবিক স্বাস্থ্য সেবাদান কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। জনবল সংকটের কারণে চিকিৎসা সেবা না পাওয়ার দায় এসে পড়ে চিকিৎসকদের ঘাড়ে। তারপরেও রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছি।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আসাদুজ্জামান জুয়েল বলেন, ৫০ শয্যার জনবল কাঠামো অনুমোদনের জন্যে ইতঃপূর্বে কয়েক দফা চিঠির পর সর্বশেষ গত ২০ জুন আমরা চিঠি দিয়েছি। আশা করছি, কর্তৃপক্ষ বৃহৎ এই উপজেলার জনগোষ্ঠীর কথা ভেবে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এছাড়া আমাদের হাসপাতালটিতে উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে নানা রোগে আক্রান্ত রোগীরা সেবা নিতে আসেন। সে হিসেবে খুব কম সংখ্যক জনবল দিয়ে বিশাল সংখ্যক মানুষের সেবা দিতে হয় আমাদের।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়