প্রকাশ : ০৬ ডিসেম্বর ২০২১, ০০:০০
এইডস এবং মহামারী হটাও
এক এক সময় এক এক সঙ্কটে পৃথিবী আতঙ্কগ্রস্ত হয়েছে। কখনো তাকে পেয়েছে কলেরার আতঙ্ক, কখনো পেয়েছে প্লেগ মহামারি। এরই ধারাবাহিকতায় এইডস আতঙ্কে পৃথিবী ভুগেছে আশি-নব্বইয়ের দশকে। এখনও তার বিরুদ্ধে মানুষের যুদ্ধ চলমান। এতো কিছুর মাঝেই পৃথিবী এখন মোকাবেলা করছে করোনা মহামারী। করোনার দাপটে এবারের বিশ্ব এইডস দিবস নিরবে এসে নিরবেই চলে গেছে। ঊনিশশো সাতাশি সালে প্রথম বিশ্ব এইডস দিবস পালিত হওয়ার প্রস্তাব আসে। এরই ফলশ্রুতিতে ঊনিশশো আটাশি সালের পহেলা ডিসেম্বর হতেই বিশ্বজুড়ে পালিত হয়ে আসছে বিশ্ব এইডস দিবস। প্রতি বছর এই দিবসটির এক একটি প্রতিপাদ্য নির্দিষ্ট করা হয়। এবারের সুনির্দিষ্ট প্রতিপাদ্য বিষয়টি হলো, ‘বৈষম্যের অবসান ঘটাও। এইডস এবং মহামারী হটাও’।
|আরো খবর
করোনা মহামারীর সাথে এইডসের সংযোগ ঘটলে পরিস্থিতি হয়ে উঠতে পারে আরো মারাত্মক। তাই সঙ্গত কারণেই এইডস ও মহামারি হটানোর কোনো বিকল্প নেই।
এইডস-এর জীবাণু
এইডসের মূল বিষয় হলো দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়া। হাল আমলে করোনাভাইরাসের আক্রমণেও দেহের রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা কমে যায়। ফলে মানুষের মৃত্যু ত্বরান্বিত হয়ে ওঠে। এইডসের জীবাণু হচ্ছে এক ধরনের ভাইরাস যার নাম হিউম্যান ইমিউনো ডেফিসিয়েন্সি ভাইরাস। এটি একটি আরএনএ ভাইরাস।
এইডস-এর জীবাণুর বিস্তার
এইডস-এর জীবাণু বিভিন্নভাবে বিস্তৃত হতে পারে। তবে অধিক বিস্তৃত হয় অরক্ষিত অবাধ যৌন সংসর্গের মাধ্যমে। যারা একাধিক সঙ্গীর সাথে যৌন সংসর্গ করেন; যারা পায়ুপথে, মুখে অনিরাপদ যৌনতায় লিপ্ত থাকেন তারা এইডস রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। যারা শিরাপথে মাদক সেবন করেন, যারা দলবেঁধে মাদকাসক্তিতে ভোগেন তারা এইডস রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। যারা যথাযথভাবে যাচাই না করে রক্ত পরিসঞ্চালন করেন, অর্থাৎ যারা স্ক্রিনিং না করে রক্ত নেন, যারা এইডস রোগীর ব্যবহৃত রেজর ব্যবহার করেন তারা এইডস এ আক্রান্ত হতে পারেন। যারা এইডস রোগীর রক্ত পরীক্ষাকালে সুঁইয়ের ঘাইয়ে আক্রান্ত হন তারাও এইডস রোগে আক্রান্ত হন। মায়ের পেটে শিশু মায়ের রক্তের মাধ্যমে এইডসে আক্রান্ত হয়।
এইডস-এর লক্ষণ
* ঘুষঘুষে জ্বর এবং তা নিরাময় না হওয়া
* ওজন হ্রাস পেতে থাকা
* রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া
* ঘন ঘন ডায়রিয়া হওয়া
* ছত্রাকের সংক্রমণ হওয়া
* সর্দি-কাশি লেগে থাকা
এইডস-এর জটিলতা
* যক্ষ্মায় দ্রুত আক্রান্ত হওয়া
* সর্দি-কাশিতে কাহিল হওয়া
* ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়া
* ফাংগাসের সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়া
এইডস-এর চিহ্ন
লাল রঙের রিবন হলো এইডসের চিহ্ন।
বাংলাদেশে এইডস রোগী
বাংলাদেশে এইডস রোগীর সংখ্যা ০.১%-এর কম। তবে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এইডস-এর সংক্রমণের হার অধিক।
এইডসের চিকিৎসা
এইডসের কোনো কার্যকর চিকিৎসা নেই বললেই চলে। প্রতিরোধই এক্ষেত্রে সর্বোত্তম। অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল থেরাপীর মাধ্যমে এইডস জীবাণুর ভাইরাল লোড কমিয়ে আনা যায় ছয় মাসের মধ্যেই। তবে এইডস নির্মূল ও নিরাময় করা যায় না।