শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৯ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ৩১ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০

মুক্তা পীযূষের নেতৃত্বে চাঁদপুরে বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি পরিষদ অন্যান্য জেলার চেয়ে অনেক গতিশীল

মুক্তা পীযূষের নেতৃত্বে চাঁদপুরে বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি পরিষদ অন্যান্য জেলার চেয়ে অনেক গতিশীল
উজ্জ্বল হোসাইন

আজকে নারী কণ্ঠ বিভাগে এমন একজনকে নিয়ে লেখা হচ্ছে যিনি একসাথে ঘর এবং বাহির দুটোকেই সামলাচ্ছেন বেশ দক্ষতার সাথে। তিনি বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি পরিষদের সভাপতি ও সুবিদিত নারীনেত্রী মুক্তা পীযূষ।

‘পৃথিবীতে যা কিছু মহান সৃষ্টি চিরকল্যাণকর/অর্ধেক তার করিয়াছে নারী অর্ধেক তার নর’ এভাবেই নারী-পুরুষ একে অপরের পরিপূরকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। নারী আজ পাচ্ছে ক্ষমতা ও তার পূর্ণ অধিকার। নারী ক্ষমতায়নে শিক্ষার মাধ্যমে নারীর সম্মান বাড়াতে সচেতনতা বৃদ্ধি, সাক্ষরতা এবং প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত হয়ে আছে। নারী ক্ষমতায়ন নারীদের সমাজে বিভিন্ন সমস্যার মধ্য দিয়ে জীবন নির্ধারণমূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ দিয়েছে। নারী ক্ষমতায়ন নারীর নিজস্ব মূল্যবোধকে বিকশিত করতে সাহায্য করেছে। এভাবেই নারীরা এগিয়ে চলেছে সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে। দেশের প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে প্রতিটি ক্ষেত্রেই নারী নেতৃত্বের বিচরণ। নারী-পুরুষ সমান সমান। নারীরা আজ চন্দ্রাভিযানেও যাচ্ছে। তেমনি সমাজ, সংগঠন প্রতিটি ক্ষেত্রে নারী আজ অনেক দক্ষ।

মুক্তা পীযূষ জাতীয় মহিলা সংস্থা চাঁদপুরের সদস্য, চাঁদপুর পৌরসভার টিএলসিসির নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, পদক্ষেপ বাংলাদেশ চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি, কমিউনিটি পুলিশিং চাঁদপুর জেলা শাখার কার্যকরী সদস্য এবং ইনার হুইল ক্লাব অব চাঁদপুর সেন্ট্রাল (ডিস্ট্রিক্ট-৩২৮, বাংলাদেশ)-এর সাবেক সভাপতি ও বর্তমানে কার্যকরী কমিটির সদস্য হিসেবে যুক্ত আছেন।

মুক্তা পীযূষের জন্মস্থান মুন্সিগঞ্জ। বর্তমানে তিনি চাঁদপুর জেলায় স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। স্বামীর কর্মের সুবাদে চাঁদপুরকে হৃদয়ে ধারণ করেছেন। স্বামী রোটারিয়ান পীযূষ কান্তি বড়ুয়া পেশায় চিকিৎসক হলেও শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতি অঙ্গনে অবাধ বিচরণ। সব্যসাচী লেখক হিসেবে ইতিমধ্যেই তিনি পরিচিতি পেয়েছেন। পেয়েছেন জেলা শিল্পকলা একাডেমি পদক। স্বামীর অনুপ্রেরণায় মুক্তা পীযূষও এগিয়ে চলেছেন। তিনি বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি পরিষদের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে সংগঠনটিকে সামনে এগিয়ে নিয়ে চলছেন। সাথে পেয়েছেন একঝাঁক কর্মঠ সংগঠক।

প্রয়াত পীযূষ কান্তি রায় চৌধুরীর দেখিয়ে যাওয়া পথে এগিয়ে চলেছেন এবং নিজেকে শাণিত করছেন প্রতিনিয়ত। তার সভাপতির সময়কালে সংগঠনের নিজস্ব তিনটি প্রকাশনা যথাক্রমে জাতির পিতাকে নিবেদিত ছোট কাগজ ‘অর্ঘ্য’, মুজিববর্ষ স্মারকগ্রন্থ ‘জ্যোতির্ময় মুজিব’ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী স্মারকগ্রন্থ ‘শেকড়ের ধ্বনি’ প্রকাশিত হয়েছে।

মুক্তা পীযূষ বলেন, ‘২০০৫ সালে স্বামীর কর্মস্থল হিসেবে আমি চাঁদপুরে আসি। ২০০২ সাল থেকে চাঁদপুরে আমার স্বামীর কর্মস্থল। এরপর চাঁদপুর এবং এখানকার মানুষকে ভালোবেসে স্থায়ী বাসিন্দা তথা চাঁদপুর-৩ আসনের ভোটারও আমরা এখন।’

তিনি বলেন, ‘ ২০১১ সাল থেকে বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি পরিষদ চাঁদপুর জেলা শাখার সহ-সভাপতি হিসেবে যুক্ত ছিলাম। এই সংগঠনের চাঁদপুরের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি পীযূষ কান্তি রায় চৌধুরী দাদার প্রয়াণের পরে ২০১৯ সালের ২৬ মে থেকে সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করি। আমি সহ-সভাপতি থাকাকালীনই রায় চৌধুরী দাদা আমার ওপর আস্থা রেখেছেন এতোটা বেশি যে, মনে হতো আমি যেনো যুগ্ম সভাপতি! দাদার পরে সংগঠনের সকলে আমাকে সভাপতির দায়িত্ব দেন। তারপর আমার প্রথম পরিকল্পনা হয়, যে কোনো আয়োজনে আমরা থিমেটিক পরিবেশনা করবো। যাতে করে বঙ্গবন্ধুর নামের সংগঠন হিসেবে তাঁর মান রক্ষা করতে পারি। জেলায় একমাত্র সচল/নিয়মিত আবৃত্তি সংগঠন হিসেবে জেলার বিভিন্ন সাংস্কৃতিক আয়োজনে পরিবেশনার মাধ্যমে জেলা প্রশাসনসহ সকলের কাছে সমাদৃত হই আমরা। আমি আমার উপদেষ্টা নির্বাচনে খুব খুঁতখুঁতে। রায় চৌধুরী দাদা সভাপতি থাকাকালীন সংগঠনের একমাত্র উপদেষ্টা ডাঃ পীযূষ কান্তি বড়ুয়ার সাথে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের প্রধান সম্পাদক রোটাঃ কাজী শাহাদাত, উপদেষ্টা হিসেবে রোটাঃ অ্যাডঃ সাইয়েদুল ইসলাম বাবু ভাইকে যুক্ত করি। সাথে সংগঠনের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি পীযূষ কান্তি রায় চৌধুরী দাদার সহধর্মিণী মীরা রায় চৌধুরীকেও উপদেষ্টা হিসেবে রাখতে পেরে মনে হয় যেনো রায় চৌধুরী আমাদের সাথেই আছেন সবসময়।’

মুক্তা পীযূষ বলেন, ‘একটি সংগঠনকে সামনে এগিয়ে নিতে চাই সুষ্ঠু পরিকল্পনা। পাশাপাশি সংগঠনের সকল সদস্যের আত্মনিবেদনও জরুরি। সংগঠনের সদস্যদের ঐক্য অটুট থাকা দরকার। উপরন্তু, একটা সুনির্দিষ্ট আদর্শকে সামনে রেখে কাজ করা দরকার। রায় চৌধুরী দাদা আমার ‘মুক্তা পীযূষ’ নামের আড়ালে থাকা নেতৃত্বদানকারী ছাত্রনেতা, সংগঠক মুক্তাকে খুঁজে বের করেছেন। আজকে আমি মুক্তা পীযূষ একজন সাধারণ নারীর মতোই হয়ে যেতাম হয়তো, বিগত সকল সাংগঠনিক দক্ষতাণ্ডযোগ্যতা ভুলে! কিন্তু রায় চৌধুরী দাদা তা হতে দেননি। তিনি আমাকে এই সংগঠনের সাথে যুক্ত করেছেন, তাঁর কাছে আমি চির কৃতজ্ঞ। আমি মনে করি, বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি পরিষদের সকলে মিলে আমরা পরিবার। এখানে যুক্ত সকলেই আমার প্রতি প্রবল আস্থা ও ভালোবাসা প্রদর্শন করে সবসময়। আমরা একত্রে কাজ করি বলেই আমাদের সংগঠন সকলের নজর কাড়ে। সংগঠনের প্রতিষ্ঠাকালীন সাধারণ সম্পাদক কেএম মাসুদ, সহ-সভাপতি উজ্জ্বল হোসাইন, আবু সায়েম, আয়েশা আক্তার রূপা, আলমগীর হোসেনসহ সকলের সমর্থন ও ভালোবাসায় আমরা এগিয়ে চলছি প্রতিনিয়ত।’

নারীনেত্রী মুক্তা পীযূষ বলেন, ‘সংসার আর সংগঠন দুটো কাঠামোগত দিক থেকে আলাদা হলেও আমি ব্যক্তিগতভাবে সংগঠনকেও আরেকটি সংসার বলে মানি’। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি পরিষদ চাঁদপুর জেলা অন্য সকল জেলা শাখার চেয়ে সৃজনশীল, মননশীল ও পরিচ্ছন্ন সংগঠন হিসাবে জাতীয় পর্যায়ে আরও সমাদৃত হোক, এটিই আমার চাওয়া। এখান থেকে ছেলে-মেয়েরা শুদ্ধ সংস্কৃতি চর্চা করে বড় হোক। সবার আদর্শে স্পন্দিত হোক মুজিব আর চেতনায় মুক্তিযুদ্ধ’।

মুক্তা পীযূষ মনে করেন, নারী স্বাধীনতা ও নারী ক্ষমতায়নের এই যুগে চাঁদপুরে নারীদের কাজ করার ক্ষেত্র যথেষ্ট উর্বর। চাঁদপুরের বেশ ক’টি সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃত্বে আছেন নারী। পেশাজীবী ও ক্রীড়া সংগঠনেও নারীরা কাজ করে যাচ্ছেন। এখানে নারী উদ্যোক্তারা আছেন। আছেন উইমেন্স চেম্বার অব কমার্সের নারীরা। নারী সাহিত্যিকরাও পিছিয়ে নেই। আর এভাবেই নারীরা এগিয়ে যাচ্ছে আপন মহিমায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীদের যতটা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব তার জন্যে অব্যাহত চেষ্টা করে যাচ্ছেন। বর্তমানে রাষ্ট্রের সকল পর্যায়ে নারীর সরব উপস্থিতি লক্ষণীয়। সংসদেও নারীনেত্রীরা ভালো কাজ করছেন। তাঁদের বিষয়ভিত্তিক কাজ নিয়ে চিন্তা করার অনেক সুযোগ আছে। মানুষকে অনুপ্রাণিত করতে হবে নারীর ক্ষমতায়ন বিষয়ে। স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বরাবর প্রেরণা ছিলো নারীরা নেতৃত্বে আসুক। ভবিষ্যতেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে নিঃসন্দেহে। আমরা নারীরা আরো এগিয়ে যেতে চাই, তাই সমাজ ও মানুষকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করতে হবে। নারী স্বাবলম্বী হলে নারী নেতৃত্ব বাড়বে এবং উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমরা আরও অগ্রসর হবো।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, জয়তু শেখ হাসিনা।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়