রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১, ৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬  |   ৩০ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   বয়ারচর সংযোগ ব্রিজ ও বেড়িবাঁধ রক্ষায় এলাকাবাসীর মানববন্ধন
  •   জার্মানিতে কঠিন হচ্ছে রাজনৈতিক আশ্রয়
  •   ইতালির দ্বীপে নৌকাডুবিতে নিখোঁজ ২১
  •   অভিভাবকহীনতায় দিশেহারা চাঁদপুরের আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা
  •   আহতদের দেখতে নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে প্রধান উপদেষ্টা

প্রকাশ : ২৫ জুলাই ২০২৪, ০০:০০

বৃদ্ধ বয়সে সন্তানের সাথে পিতার সম্পর্ক

হাসান আলী
বৃদ্ধ বয়সে সন্তানের সাথে পিতার সম্পর্ক

বৃদ্ধ বয়সই সন্তান চেনার উপযুক্ত সময়- প্রবাদ। মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি হলো যেখানে সম্ভাবনা নেই, সেখানে বিনিয়োগ করে না। অর্থাৎ স্বার্থ না থাকলে আগ্রহ থাকবে না। স্বার্থ সাধারণত দুই ধরনের। বস্তুগত ও অবস্তুগত। বস্তুগত স্বার্থ হলো ধনসম্পদ, বাড়িঘর, ব্যবসা-বাণিজ্য, টাকা-পয়সা ইত্যাদি। অবস্তুগত স্বার্থ হলো যশ-খ্যাতি, সম্মান-মর্যাদা, আনুগত্য-সমর্থন, ক্ষমতাণ্ডদাপট ইত্যাদি। মানুষ বস্তুগত ও অবস্তুগত দুটির নিয়ন্ত্রণ নিতেই ব্যাকুল। এ নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে সম্পর্কের ধরন নির্ধারণ করা হয়। দেশের অধিকাংশ প্রবীণ আর্থিকভাবে দুর্বল। তারা যখন যৌবনে ছিলেন, তখন দেশের অর্থনীতি দুর্বল ছিলো। আয়-রোজগার তুলনামূলকভাবে কম ছিলো। পরিবার-পরিজন, সন্তান লালন-পালনে উপার্জিত সব অর্থই ব্যয় করতে হতো। সঞ্চয় তেমন কিছুই থাকতো না। নিজের ভবিষ্যৎ ছেলে-মেয়ের ওপর ছেড়ে দিতেন। মনে করতেন, কষ্ট করে ছেলে-মেয়ে মানুষ করেছি; তারাই দেখবে। অল্প কিছু মানুষ ছিলো যাদের জমিজমা, বাড়িঘর, টাকা-পয়সা, দোকানপাট ছিলো। তারা তুলনামূলকভাবে বেশি সুযোগ-সুবিধা, সেবা-যত্ন পেতেন। যেসব ছেলে-মেয়ে বাবার চেয়ে অধিক সম্পদ-ক্ষমতার মালিক তাদের বাবার সঙ্গে সম্পর্ক ভিন্ন ধরনের হয়। ধনী বাবা, মধ্যবিত্ত বাবা, নিম্নমধ্যবিত্ত বাবা, নিম্নবিত্ত বাবার সঙ্গে সন্তানের সম্পর্ক ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। ধনী প্রবীণরা বেশিরভাগ সময়ই একাই থাকেন। উচ্চশিক্ষা, চাকরি কিংবা ব্যবসার কারণে যেসব সন্তান দেশের বাইরে থাকেন তারা বাবার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন বেশি। কেউ কেউ বছরের একটা সময়ে এসে বাবার সঙ্গে সময় কাটিয়ে যান। দেশে থাকা সন্তানরা শহরের অন্য কোথায়ও থাকেন। বাবা নিজ বাড়িতে, সন্তান তার কর্মক্ষেত্র, নিজের বাড়ি, কিংবা ফ্ল্যাটে থাকেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে দেখা করতে আসেন সন্তান। ক্ষেত্রবিশেষ প্রবীণ বাবা নিজের বাড়ি ত্যাগ করে সন্তানের সঙ্গে উঠতে আগ্রহী হতে চান না। ধনী বাবার আলাদা একটা জগৎ তৈরি হয়ে আছে। তিনি স্বাধীন মর্যাদাপূর্ণ জীবন চান। সন্তানের ওপর নির্ভরতা বাড়তে থাকলে ধনী প্রবীণের স্বাধীনতা খর্ব হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যেসব ধনী প্রবীণের একাধিক সন্তান রয়েছে তারা বিশেষ কোনো সন্তানের সঙ্গে বসবাস করেন। প্রতিবন্ধী সন্তান থাকলে বাবা তার সেই সন্তানের সঙ্গে আমৃত্যু থাকেন। ধনী বাবার সেবাযত্ন, দেখাশোনা করার পর্যাপ্ত লোকবল থাকায় সন্তানের সঙ্গে মানসম্মত সময় কাটানোর আগ্রহ বেশি লক্ষ্য করা যায়। মধ্যবিত্ত প্রবীণ বাবার সন্তানরা মোটামুটি সামাজিক এবং আর্থিকভাবে ভালো থাকেন। তারাও মোটামুটি ধনী বাবার মতোই জীবন কাটান। সন্তানের সঙ্গে নিজ বাড়ি কিংবা ফ্ল্যাটে থাকা বাবা দেখা যায়। সেটার সংখ্যা কম। মধ্যবিত্ত বাবার জীবনে তুলনামূলক বেশি ত্যাগ-তিতিক্ষার সংগ্রাম থাকে। ফলে সন্তানের সঙ্গে মনোমালিন্য একটু বেশি হয়। সহায়-সম্পদের নিয়ন্ত্রণ হারানোর ভয় তাকে বিচলিত করে তোলে। কোনো কোনো মধ্যবিত্ত প্রবীণ সংঘাতের আশঙ্কায় ইচ্ছা করে সন্তানের কাছ থেকে আলাদা থাকেন। নিয়ন্ত্রিত হতে চান না, এমন প্রবীণ বাবাকে আলাদা বাসায় কিংবা বাড়িতে থাকতে দেখা যায়। নিম্নমধ্যবিত্ত বাবা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অর্থবিত্তহীন অবস্থায় দিনযাপন করেন। ভরণপোষণ ও চিকিৎসার খরচের জন্যে সম্পূর্ণভাবে সন্তানের ওপর নির্ভরশীল থাকেন। কেউ কেউ নিকটতম আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা নেন। সন্তানের সঙ্গে মনোমালিন্য চোখে পড়ার মতো বিষয়। অনেক সময় বাবা চাইলেও সম্পদ হস্তান্তর, বিক্রি করতে পারেন না। কেউ কেউ পৈতৃক সহায়-সম্পদ হস্তান্তরে আগ্রহী হন না। সহায়-সম্পদ বিক্রি করলে টাকা-পয়সা নিজের প্রয়োজনে ব্যয় করার সুযোগ পান না। একাধিক সন্তান থাকলে তাদের ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব-সংঘাত প্রবীণ বাবার জীবন অতিষ্ঠ করে তোলে। সব অভিযোগ, নালিশ, সালিস, বিচার বাবার কাছে করা হয়। নিম্নবিত্ত প্রবীণ বাবার সবচেয়ে দুরবস্থার মধ্যদিয়ে জীবনযাপন করতে হয়। এরা পুরোপুরি সন্তাননির্ভর জীবনযাপন করেন। সামাজিক অনুদান, দয়া, করুণা, ভিক্ষাবৃত্তির ওপর নির্ভর করে চলেন। সন্তান অর্থকষ্টে জীবন চালাতে হিমশিম খায়। বাবার ভরণপোষণ, সেবাযত্ন, চিকিৎসা চালানোর সামর্থ্য থাকে না। সরকারি অনুদান, সরকারি হাসপাতাল, মানুষের সহায়তা নিয়ে কোনোমতে জীবনকে টিকিয়ে রাখছে। সেবাযত্ন ও দেখাশোনার ক্ষেত্রে প্রায় সব বাবাই কোনো না কোনোভাবে অবহেলা-অযত্নের শিকার হন। ধনী বাবা-গরিব বাবা সবারই একই হাল। শুধু অবহেলা-অযত্নের ধরন পাল্টে যায়। হাসিমুখে সন্তানের সাফল্য বর্ণনা করে বাবা সুখী হওয়ার ভান করেন। আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধবের প্রশংসা শুনে নিজেকে প্রবোধ দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করেন। দুঃখ-কষ্ট প্রকাশ করতে পারলে বাবা ভালো থাকতেন বেশি। বাবারা দুঃখ-কষ্টের কথা বলতে চান না। সন্তানকে ছোট করতে রাজি হন না। অনেক সময়ই বাবারা ছেলের বউ কিংবা মেয়ের জামাইয়ের কাছ থেকে অধিক সেবাযত্ন, সম্মান-মর্যাদা পান। প্রবীণ বাবাদের অসহায়ত্ব কাছে থাকা ছেলের বউকে বিচলিত করে তোলে। সব সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করে শ্বশুরের সেবা করেন। এমন অনেক ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আমি নিজে। পাঠকের বিবেচনার জন্যে কয়েকটি ঘটনার বর্ণনা দিলাম।

ঘটনা-১ : নাম করিমউল্লাহ, বয়স ৭৭ বছর। অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা, পাঁচ ছেলে, চার মেয়ে। বছর দশেক আগে স্ত্রী মারা গেছেন। ছেলে-মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন। তারা নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে মর্যাদার সঙ্গে রয়েছেন। পাঁচ ছেলে-মেয়ে বিদেশে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। দেশে চারজন বসবাস করেন। করিমউল্লাহর ছোট ছেলে বাক্প্রতিবন্ধী এবং শারীরিকভাবে কিছুটা অসুস্থ। ছোট ছেলের সঙ্গে তিনি থাকেন। অন্য ছেলে-মেয়েরা তার যাবতীয় ব্যয়ভার বহন করেন। সবাই খোঁজখবর নেন। টাকা-পয়সার কোনো সমস্যা নেই। করিম ক’দিন আগে স্ট্রোক করেছেন। দিন দশেক হাসপাতালে কাটিয়ে বাসায় ফিরেছেন। প্রথম দিকে ছেলে-মেয়েরা বাবাকে হাসপাতালে-বাসায় পালাক্রমে সেবাযত্ন করতে থাকলেন। দিন যত বাড়তে লাগলো, ততবেশি সবাই নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে ছুটে যাওয়ার জন্যে আকুল হয়ে উঠছেন। ছুটির মেয়াদ ফুরিয়ে আসতে থাকলো। যাওয়ার তাড়া বেড়ে গেলো। শেষপর্যন্ত বাক্প্রতিবন্ধী অসুস্থ ভাইটির কাছে বাবাকে রেখে সবাই কর্মস্থলে ফিরে গেলো। প্রবীণ অসুস্থ বাবার সেবার ভার পড়লো ছোট ছেলের স্ত্রীর ওপর। তিনি নিজের দুই মেয়েকে স্কুলে আনা-নেওয়া করেন। রান্নাবান্না, বাজার-সদাই, ঘরদোর গোছানো, শ্বশুরের সেবাযত্ন নিজ হাতে করেন। তার স্বামী আয়-রোজগার করতে পারেন না। স্বামীর ভাই-বোনের থেকে প্রাপ্ত আর্থিক সহযোগিতা নিয়ে সংসার চালান।

ঘটনা-২ : নাম শহীদুল্লাহ, বয়স ৮০ বছর। পেশা : ওকালতি। প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর শালিকে বিয়ে করেছেন। প্রথম স্ত্রীর ঘরে এক ছেলে। শালির সঙ্গে তার বয়সের ফারাক ২০ বছরের বেশি। দ্বিতীয় স্ত্রীর ঘরে চার ছেলে-মেয়ে। তাদের বিয়ে হয়েছে। সব ছেলে-মেয়েই উচ্চশিক্ষিত এবং প্রতিষ্ঠিত। দ্বিতীয় স্ত্রী ছেলের বাড়ি-মেয়ের বাড়ি ঘুরে ঘুরে থাকেন। স্বামীর সঙ্গে মাঝেমধ্যে থাকেন তা কোনোমতেই এক মাসের বেশি হবে না। উকিল তিন বছর ধরে স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে শয্যাশায়ী। থাকেন বড় ছেলের সঙ্গে। বড় ছেলে বিদেশি সংস্থায় উচ্চপদে কর্মরত। তার ব্যস্ততা অনেক বেশি। দেশ-বিদেশ, সভা-সেমিনারে বক্তৃতা দিতে গিয়ে সময় চলে যায়। অসুস্থ বাবার পাশে বসার সময় থাকে না। বড় ছেলের বউ শ্বশুরকে খাওয়ানো, টয়লেট করানো, গোসল করানো এবং অন্যান্য সেবাযত্ন নিজ হাতেই করেন। শহীদুল্লাহ বর্তমানে ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। বেশিরভাগ সময়ই আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। যখন-তখন রেগে যাচ্ছেন, ছেলের বউয়ের গায়ে হাত তুলছেন। স্ত্রীকে দেখলে রেগে যান, বিশ্রি গালাগাল করতে থাকেন।

ঘটনা-৩ : মহিবুল্লাহ, বয়স ৭৮ বছর। দেশের প্রথমসারির একজন শিল্পপতি। ছয় ছেলে-মেয়ের মধ্যে সহায়-সম্পদ, ব্যবসাবাণিজ্য ভাগ করে দিয়েছেন। স্ত্রী মারা গেছেন বছর পাঁচেক আগে। থাকেন ছোট মেয়ের সঙ্গে। ছোট মেয়েও ভীষণ ব্যস্ত থাকেন। মূলত তাকে দেখাশোনা কাজের লোকই করেন। রাতের খাবার মেয়ের সঙ্গে খাবেন বলে অপেক্ষা করেন।

ঘটনা-৪ : ডাঃ সফিউল্লাহ, বয়স ৮৭ বছর। দেশের প্রথমসারির একজন চিকিৎসক। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন ছিলেন। দুই বিয়ে করেছেন। প্রথম স্ত্রীর ঘরে দুই ছেলে-মেয়ে, দ্বিতীয় স্ত্রীর ঘরে দুই মেয়ে ও এক ছেলে। গুলশান-বনানী বাড়ির জায়গা ছেলে-মেয়েদের বণ্টন করে দিয়েছেন। নিজে প্রায় বেকার, বড় ছেলের সঙ্গে থাকেন। সেবাযত্নের জন্যে কাজের লোক ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। কাজের লোক মর্জিমতো চলাফেরা করেন। ডাকাডাকি করেও কাছে পাওয়া যায় না। অনেক আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব রয়েছে। কারও সঙ্গে দেখা হয় না, কারণ তিনি বাসা থেকে বের হতে পারেন না।

ঘটনা-৫ : নবীউল্লাহ, বয়স ৭০ বছর। সরকারের উচ্চপদে কর্মরত ছিলেন। দুই মেয়ের জনক। মেয়েরা উচ্চশিক্ষিত। কানাডা ও জার্মানিতে থাকেন। নবীউল্লাহ বারিধারায় নিজ বাড়িতে থাকেন। একটি অলাভজনক সেবা প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী। প্রতিদিন দুবার মেয়েদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন।

ঘটনা-৬ : অলোক সাহা, বয়স ৮৮ বছর। কানে শোনেন না। চোখেও ভালো দেখেন না। দুই ছেলে, চার মেয়ে। স্ত্রীর বয়স ৮০। গত দুই বছর ধরে স্ত্রী শয্যাশায়ী। ছেলে-মেয়েদের বিয়ে হয়ে গেছে। দুই ছেলের সঙ্গে থাকেন। একান্নবর্তী সংসারে তিনি মোটামুটি সেবাযত্ন পান। তার সারাদিন কাটে বারান্দা আর উঠানে বসে। তিনি কানে শোনেন না বলে কেউই কথা বলতে চান না। প্রয়োজনে ইশারা-ইঙ্গিতে কথা বলেন সন্তান-সন্ততিরা। অলোক সাহা নিজের প্রয়োজন, ব্যথা, বেদনা, অসুস্থতার কথা বলতে পারেন। ছেলেরা ব্যস্ত, সারাদিনে কোনোদিন দেখা হয়, কোনোদিন হয় না। স্ত্রীও কথা বলতে পারেন না শুধু তাকিয়ে থাকেন।

ঘটনা-৭ : আহমদ উল্লাহ, বয়স ৮২ বছর। তার এক ছেলে, এক মেয়ে। প্রত্যেকের আলাদা সংসার। ছোট ছেলের সঙ্গে থাকতেন। সড়ক দুর্ঘটনায় ছোট ছেলে মারা গেছে বছরখানেক আগে। ছোট ছেলের দুই মেয়ে, এক ছেলে। নিজের জমি বিক্রি করে নাতনির বিয়ে দিয়েছেন বলে অন্য ছেলেদের সঙ্গে মনোমালিন্য চলছে। ছেলেরা আহমদ উল্লাহর কোনো খোঁজ নেন না।

ঘটনা-৮ : মমিন উল্লাহ, বয়স ৭৫। একসময় কৃষি শ্রমিক ছিলেন। চার ছেলে, দুই মেয়ের জনক। স্ত্রী মারা গেছেন বছর দশেক আগে। স্ত্রী মারা যাওয়ার পর ভাত-কাপড়ের অভাবে ঢাকা চলে আসেন। ভিক্ষে করে দিন কাটে। রাতে কমলাপুর রেলস্টেশনে ঢোকার পথে ঘুমিয়ে যান। প্রত্যেক সপ্তাহে দুই হাজার টাকা করে ছেলেমেয়েদের পাঠান। কখনও বেশি পাঠাতে হয়। এ টাকা পাঠানো নিয়ে ছেলেমেয়েদের মধ্যে প্রায়ই ঝাগড়া হয়। উপরের সব ঘটনা সত্য; শুধু নামগুলো পরিবর্তন করা হয়েছে।

লেখক : সভাপতি, এজিং সাপোর্ট ফোরাম।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়