প্রকাশ : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০
করোনার সংক্রমণ ও বৈশ্বিক মহামারির তাণ্ডবলীলা এখনও থামেনি, এর মধ্যেই বর্ষা সমাগমের সাথে সাথেই ডেঙ্গুর আক্রমণ শুরু হয়ে গেছে। ডেঙ্গুর সূচনা পৃথিবীতে সতেরশ ঊনআশি সালের দিকে উল্লেখ করা হলেও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পর প্রায় একশ কুড়িটি দেশ ডেঙ্গুর আক্রমণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। দু হাজার সতের সালে বাংলাদেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ ছিলো।
ডেঙ্গু মূলত ক্রান্তীয় অঞ্চলের রোগ, যা ডেঙ্গু ভাইরাসের সংক্রমণে হয়ে থাকে। ডেঙ্গু ভাইরাসের বাহক হলো এডিস ঈজিপ্টি নামে এক প্রকার মশা যারা ডেঙ্গু মশা নামে পরিচিত। এরা দেখতে কালোসাদা ডোরা কাটা এবং সাধারণত দিনের বেলায় হুল ফোটায় বা রক্ত পান করে। ডেঙ্গু ভাইরাসবাহী মশা কামড়ানোর তিন থেকে চৌদ্দ দিন পরে দেহে উপসর্গের সূচনা হয় এবং দুই থেকে সাতদিনের মাথায় চিকিৎসায় ভালো হয়ে যায়। ডেঙ্গু ভাইরাসের পাঁচটা স্ট্রেইন আছে যার মধ্যে একটা নির্দিষ্ট স্ট্রেইনের সংক্রমণ জীবনব্যাপী ইমিউনিটি তৈরি করে দেয়।
ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তির উচ্চ তাপমাত্রার জ্বর, মাথাব্যথা, সারাগায়ের মাংশপেশির ব্যথা, লাল লাল বিশেষ ধরনের র্যাশ, গিটে গিটে ব্যথা ও বমিভাব হয়। রক্তে অনুচক্রিকা বা প্ল্যাটিলেটের সংখ্যা হ্রাস পায়। রক্তচাপ কমে যেতে পারে। রক্তক্ষরণ হতে পারে। মাল্টি অর্গ্যান ফেইলিওর হতে পারে এবং রোগী একপর্যায়ে মারা যায়।
ডেঙ্গুজ্বর ক্লাসিক্যাল ও ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার এবং ডেঙ্গু শক সিন্ড্রোম জাতীয় তিন ধরনের হতে পারে। ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভারে রক্তক্ষরণ হয় এবং ডেঙ্গু শক সিন্ড্রোমে রক্তচাপ কমে গিয়ে রোগী নেতিয়ে পড়ে।
আক্রান্ত রোগীকে মশারীর নিচে রেখে চিকিৎসা দিতে হয়। কোন সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা ডেঙ্গু রোগীর নেই। জ্বরের জন্যে প্যারাসিটামল এবং ফ্লুইড বা স্যালাইন দিতে হয়। শিরাপথে নরমাল স্যালাইন দেয়া কিংবা বেশি রক্তচাপ হ্রাস পেলে ল্যাক্টোরাইড ফ্লুইড দেয়া জরুরি। প্ল্যাটিলেট কাউন্ট হ্রাস পেলে প্ল্যাটিলেট দিতে হয়। কখনো কখনো হোল ব্লাড বা সম্পূর্ণ রক্তও দিতে হয় প্রয়োজন বুঝে।
ডেঙ্গু ভ্যাকসিন প্রয়োগ, বাড়ির চারপাশের ঝোপঝাড় সাফ করা এবং মশারী টাঙানো, যে কোন ধরনের জলাবদ্ধতা নিরসন ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের জন্যে জরুরি।
* চিকিৎসাঙ্গন বিভাগে লেখা পাঠানোর
ই-মেইল : [email protected]