প্রকাশ : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০
বিশ্বজুড়ে শ্বাসতন্ত্রের অন্যতম ঘাতক রোগের নাম নিউমোনিয়া। অসংখ্য জীবাণু নিউমোনিয়া রোগের কারণ হিসেবে বিবেচিত। এর মধ্যে হিমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জি, স্ট্রেপটোকক্কাস নিউমোনি, অর্থোমিক্সো ভাইরাস উল্লেখযোগ্য। প্রতি বছর নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে প্রায় সাড়ে ৭ লাখেরও অধিক শিশু মৃত্যুবরণ করে।
কমিউনিটি অ্যাকোয়ার্ড নিউমোনিয়া, হাসপাতাল অ্যাকোয়ার্ড নিউমোনিয়া, অ্যাসপিরেশন নিউমোনিয়া ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের নিউমোনিয়া মানুষকে আক্রান্ত করে। বায়ুবাহিত জীবাণু প্রশ্বাসের মাধ্যমে ফুসফুসে অনুপ্রবেশ করে ক্ষতিসাধনে লিপ্ত হয় এবং নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়। নিউমোনিয়ায় পঁয়ষট্টি-ঊর্ধ্ব প্রবীণ এবং দুই বছরের নিচে শিশুরাই অধিক ঝুঁকিপূর্ণ বলে বিবেচিত হন।
নিউমোনিয়ার লক্ষ্মণ
জ্বরসহ কাশি, শ্বাসকষ্ট, প্রতি মিনিটে শ্বাস-প্রশ্বাস দ্রুত হয়, হলুদ বা লালচে কফ যায়, কফে পুঁজ থাকে, শিশুদের শ্বাস-প্রশ্বাসকালীন বুকের খাঁচার মধ্যবর্তী মাংসপেশি ও ত্বক ভেতরের দিকে দেবে যায়, শ্বাস-প্রশ্বাসকালীন শোঁ শোঁ শব্দ হয়, রাতে বিছানা ঘামে ভিজে যায়, সারা শরীর ব্যথা হয়, বুক জ্যাম হয়ে যায়, শ্লেষ্মা বাড়ে। নিউমোনিয়ায় ফুসফুসের ক্ষয়ক্ষতি-বায়ুথলি বা অ্যালভিওলাইয়ের প্রদাহ হয়, বায়ুথলিতে পুঁজ জমে, ফুসফুস অকার্যকর হয়ে পড়ে, ফুসফুসে কনসলিডেশন দেখা দেয়।
পরীক্ষা ও রোগ নিরূপণ
রক্তের রুটিন পরীক্ষা, বুকের এক্সরে/সিটি স্ক্যান, কফ পরীক্ষা।
চিকিৎসা ও ব্যবস্থাপনা
বেড রেস্ট, নাকে অক্সিজেন প্রদান, প্রযোজ্য ক্ষেত্র নেবুলাইজেশন, উপযুক্ত অ্যান্টিবায়োটিক প্রদান, স্টেরয়েড ইঞ্জেকশন, মন্টিলুকাস্টজাতীয় ওষুধ সেবন, শ্বাসনালি প্রশস্তকারী ওষুধ প্রয়োগ।
নিউমোনিয়া প্রতিরোধ
নিউমোনিয়া ভ্যাক্সিন প্রদান, মাস্ক ব্যবহার, ধুলাবালি এড়িয়ে চলা।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবজনিত কারণে বাংলাদেশের বাতাসে ভাসমান ক্ষতিকর কণার ঘনত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে, যা নিউমোনিয়াসহ শ্বাসতন্ত্রের নানা রোগ তৈরি করে। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ও কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার জন্য নিউমোনিয়া রোগের প্রকোপ বেড়ে যাচ্ছে। শ্বাসতন্ত্রের ক্রমবর্ধমান জটিলতা নিরসণে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কমিয়ে আনার উদ্যোগ গ্রহণ আজ সময়ের দাবি।
ডাঃ পীযূষ কান্তি বড়ুয়া : মেডিসিন ও হৃদরোগের চিকিৎসক; লেকচারার চাঁদপুর ম্যাটস
ও সভাপতি, বিপিএমপিএ, চাঁদপুর।