বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২১ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জে সংবাদকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের
  •   লক্ষ্মীপুরে মাদকসহ বাবা ও দুই ছেলে আটক
  •   চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন মামলার ৮ আসামী আটক
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার

প্রকাশ : ৩১ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

ইতালিতে কৃষি ভিসায় এসে বাংলাদেশি যুবকের আত্মহত্যা

ইতালি প্রতিনিধি ॥
ইতালিতে কৃষি ভিসায় এসে বাংলাদেশি যুবকের আত্মহত্যা

ইতালিতে সুমন মিয়া (২৫) নামে এক যুবক আত্মহত্যা করার খবর পাওয়া গেছে। রাজধানী রোমের তুসকোলানা জুলিও আগ্রিকোলা পার্কে একটি গীর্জার পিছনে এ আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও দূতাবাসের ধারণা, ২৩ জানুয়ারি মঙ্গলবার দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, পরের দিন সকাল আনুমানিক সাতটায় এক ইতালিয়ান পথচারী লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে পুলিশে খরব দেয়। পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে সুমন নিজেই আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হয়। তিনি গত কয়েক মাস আগে ইতালিতে আসেন। তার দেশের বাড়ি কুমিল্লা জেলার নীলখী পরবো, হোমনা চম্পক নগর। বাবা এ বারিক।

এ বিষয়ে রোম বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম ও কল্যাণ) আসিফ আনাম সিদ্দিকী জানান, আত্মহত্যার ঘটনাটি তারা জেনেছেন। এ ব্যাপারে পুলিশের সাথে তাদের যোগাযোগ হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে আত্মহত্যার সত্যতা পাওয়া গেছে। পুলিশের পুরোপুরি ক্লিয়ারেন্স না পাওয়া পর্যন্ত দূতাবাস কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না। তবে দূতাবাস ইতোমধ্যে তার পাসপোর্টের তথ্য অনুযায়ী দেশে যোগাযোগ করেছেন। তার পরিবারের সাথে মৃত্যুর আগের দিন সুমনের কথা হয়েছে। সে এমন একটি কাণ্ড করবে পরিবার কখনও কল্পনা করেনি। তাছাড়া তিনি হতাশায় ভুগছেন তাও পরিবার কিছুই জানে না। আসিফ বলেন, পুলিশের তদন্ত পুরোপুরি সম্পন্ন হলে দূতাবাস পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। তার অকাল মৃত্যুতে ইতালি প্রবাসী বাংলাদেশিদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে।

এদিকে এ আত্মহত্যা নিয়ে কুমিল্লার মুরাদ মহিবুর নামে ইতালি প্রবাসী বাংলাদেশি একটি আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তা হুবহু তুলে ধরা হলো- হায়!! রে!! ইউরোপ!! স্বপ্নের ইউরোপ!! স্বপ্নের ইতালি!! এক বুক স্বপ্ন নিয়ে প্রিয় জেলা কুমিল্লার সুমন মিয়া সাত মাস আগে ইতালির রোম শহরে এসেছে, মাত্র ২৩ বছরের এক টগবগে যুবক, এসেছে ইউরোপের উন্নত দেশ ইতালিতে সোনার হরিণ ধরতে !! এই উন্নত দেশে নিজেকে এবং নিজ পরিবারকে প্রতিষ্ঠিত করতে। স্বপ্ন আর বাস্তব বড়ই কঠিন। দীর্ঘ সাত মাস বেকার থেকে কোনো কাজ না পেয়ে এক নিষ্ঠুর আত্মসমর্পণ, গলায় ফাঁস দিয়ে তরতাজা জীবনটাকে শেষ করে দিয়ে পরপারে পাড়ি জমিয়েছে !! ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন !! আমি তার এমন মৃত্যুতে অত্যন্ত মর্মাহত এবং শোকাহত !! এমন নির্মম মৃত্যু কারোই কাম্য নয়। আশা করি নতুন করে যারা আসবেন কিংবা আসার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তাদের উদ্দেশ্যে বলি, যদি কেউ আসতে চান অবশ্যই লিগ্যাল ওয়েতে স্পন্সর ভিসায় আসবেন, এগ্রিকালচার ভিসায় এসে এইখানে তেমন কোনো কাজ নেই, তাই, একান্ত কোনো নিজেস্ব আপনজন না থাকলে আমি বলি, না আসাটাই ভালো, কারণ এগ্রিকালচার ভিসায় এসে কোনো কাজ পাওয়া যায় না, অনেক কষ্ট করতে হয়, এর মাঝে বাসা ভাড়া এবং নিজের ব্যক্তিগত খরচ বাবদ প্রতি মাসে ন্যূনতম ৪০০ ইউরো যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় পঞ্চাশ হাজার টাকার মতো খরচ বহন করতে হয় !! নতুন এসে এই টাকাটা ইনকাম করাটাও অনেকটা কষ্টদায়ক--এটাই বাস্তব সত্য। কাজ না পাওয়ার কারণ, প্রথমত ভাষাজনিত সমস্যা, দ্বিতীয়ত ডুকুমেন্ট সমস্যা, তাই অবশ্যই অবশ্যই এগ্রিকালচার ভিসায় না এসে চেষ্টা করবেন লিগ্যাল ওয়েতে স্পন্সর ভিসায় আসতে। লিগ্যাল ওয়েতে আসলে অন্ততপক্ষে একটা কাজ এবং একটা ডকুমেন্টের আশা করা যায়, যা থাকলে অনেকটা হতাশামুক্ত হওয়া যায় এবং একটা কাজ পাওয়ার আশা করা যায়!! টাকা আপনার চিন্তাও আপনার, অবশ্যই ভেবে চিন্তে কাজ করবেন। ইউরোপ আসা মানে আপনি প্রথম মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করবেন--এটা একদম মিথ্যে। তাই দেশ থেকে কেউ ব্যাংক লোন কিংবা কিস্তি নিয়ে দয়া করে আসবেন না! যা আপনার মানসিক পীড়াদায়কের কারণ হয়!! পরিশেষে এটাই বলি, দূর থেকে স্বপ্নে দেখে অনুমান করা, আর বাস্তবে অনেক কঠিন ইউরোপের জীবন!

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়