রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪  |   ১৯ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০

মালয়েশিয়া আন্তর্জাতিক হালাল শোকেস-এর ১৯তম আসরে বাংলাদেশ

মালয়েশিয়া আন্তর্জাতিক হালাল শোকেস-এর ১৯তম আসরে বাংলাদেশ
আহমাদুল কবির, মালয়েশিয়া ॥

বিশ্বের বৃহত্তম হালাল শোকেস হিসেবে পরিচিত মালয়েশিয়া। আন্তর্জাতিক হালাল শোকেস-এর ১৯তম আসরে বিশ্বের অন্যান্য দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করেছে। চারদিনব্যাপী ১৯তম এ আসরে খাদ্য ও পানীয়, মডেস্ট ফ্যাশন, ই-কমার্স, ইসলামিক ফিন্যান্স ও ফিনটেকসহ মোট ১৩টি ক্লাস্টারে বিশ্বের ৪০টি দেশের ১০৪০টি প্রতিষ্ঠান ১৮০০টি বুথের মাধ্যমে এই মেলায় অংশগ্রহণ করেছে। বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর সহযোগিতায় এবং মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এই মেলায় বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে ৯টি বুথে মোট ১৬টি বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করেছে। মালয়েশিয়ায় সম্প্রতি আয়েজিত মেলাসমূহের মধ্যে এটিতেই বড় পরিসরে বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করলো।

মালয়েশিয়ার মিনিস্ট্রি অব ইনভেস্টমেন্ট, ট্রেড এন্ড ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন, জিইএস মালয়েশিয়া এক্সটারনেল ট্রেড ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন (মেট্রেড)-এর আয়োজনে, মালয়েশিয়া আন্তর্জাতিক ট্রেড এন্ড এক্সিভিশন-এ এই মেলা চলে ১২-১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩। এই মেলাতে মালয়েশিয়ার হালাল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন বারাহাদ (এইচডিসি), জিইসি ডেভেলপমেন্ট অব ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট অফ মালয়েশিয়া (জেএকেআইএম) সহযোগী সংস্থা হিসেবে কাজ করেছে।

মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোঃ গোলাম সরোয়ার বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নের উদ্বোধন করেন। এ সময় তিনি প্যাভিলিয়নের বিভিন্ন বুথ পরিদর্শন করেন এবং ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে মালয়েশিয়ায় তাদের পণ্যের বাজার সম্প্রসারণে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করেন।

এ সময় হাইকমিশনার জানান, হালাল পণ্যের বাণিজ্য একটি ক্রমবর্ধমান সেক্টর। বাংলাদেশ বিশ্বের ৩য় মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হলেও হালাল পণ্য বাণিজ্যে অনেক পিছিয়ে রয়েছে।

তিনি এ সময় বাংলাদেশে হালাল ডেভেলপমেন্ট অথরিটি গঠনের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে বলেন, সারা বিশ্বে বর্তমানে হালাল বাণিজ্যের পরিমাণ ২.৩ ট্রিলিয়ন ডলার, ২০৩০ সালে বাণিজ্য বেড়ে দাঁড়াবে ৩.৬ ট্রিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ যদি এর ১০% বাজার ধরতে পারে, তাহলে ৩৬০ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্যের সুযোগ সৃষ্টি হবে, ১% ধরলেও ৩৬ বিলিয়ন ডলার বাণিজ্যের সুযোগ সৃষ্টি হবে। সে লক্ষ্যে আমাদের কাজ করতে হবে।

এ সময় মালয়েশিয়া এক্সটার্নেল ট্রেড ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন-এর পরিচালক এস জয়শংকর, আয়োজক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবর্গ, বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রধান ও কাউন্সিলর (রাজনৈতিক) ফারহানা আহমেদ চৌধুরী, কাউন্সিলর (রাজনৈতিক) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য, কাউন্সিলর (কনস্যুলার) রাসেল রানা, প্রথম সচিব (প্রেস) সুফি আব্দুল্লাহিল মারুফ, প্রথম সচিব (বাণিজ্যিক) প্রণব কুমার ঘোষ, প্রথম সচিব (রাজনৈতিক) রেহানা পারভীনসহ হাইকমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাসহ প্রবাসী বাংলাদেশীরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দাতো শ্রী আনোয়ার ইব্রাহীম এবং উপ-প্রধানমন্ত্রী দাতো শ্রী ড. আহমেদ জাহিদ হামিদি বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন পরিদর্শন করেন এবং বাংলাদেশের প্রদর্শিত পণ্যসমূহকে সম্ভাবনাময় হিসেবে উল্লেখ করেন।

১২ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সময় দুপুর ১২টায় মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দাতো শ্রী আনোয়ার ইব্রাহিম ১৯তম মালয়েশিয়া আন্তর্জাতিক হালাল শোকেস এবং দ্যা গ্লোবাল হালাল হালাল সামিট (জি এইচএ এস) ২০২৩ উদ্বোধন করেন। এ সময় মালয়েশিয়ার বিনিয়োগ, বাণিজ্য, শিল্পমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের ধর্মবিষয়ক মন্ত্রীসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, সরকারি কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

খাদ্য, পোশাক শিল্প, পাট ও পাটজাত পণ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, আইটি ও হস্তশিল্প এ সকল ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ থেকে বোম্বে সুইটস অ্যান্ড কোং লিমিটেড, এগ্রোভার্স লিমিটেড, তাহমিনাস, পিপলস লেদার ইন্ডাস্ট্রিজ, কেএমআর ক্রাফট, কারুপণ্য, বন্ধন নূরস, অ্যালবাট্রস ফ্যাশন, পশরা লেদার এন্ড জুট, জুটএক্স, বিদোরা ব্যাগ এবং হস্তশিল্প, টেকসলিউশন, প্রিঙ্ক, ত্রিনাস ক্লোসেট, ডাইনাস গ্ল্যামার এবং কল্পতরু এ সকল প্রতিষ্ঠানসমূহ মেলায় অংশগ্রহণ করেছে।

১৯তম এ আসরে স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে হালাল অর্থনীতির জন্যে স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধির নেতৃত্ব দেয়ার জন্যে উদ্ভাবন এবং টেকসই উদ্যোগের ওপর বিশেষ জোর দেবে। এই মেলা শুধুমাত্র আসিয়ান অঞ্চলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় বরং এখানে আন্তর্জাতিক প্যাভিলিয়নে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অংশগ্রহণসহ বিভিন্ন ট্রেড কমিশন, সরকারি সংস্থা, শিল্প ও ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্দের অংশগ্রহণ ছিলো।

সম্প্রতি বিশ্বব্যাপী হালাল পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় হালাল বাণিজ্যের পরিমাণও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। হালাল বাণিজ্যে মালয়েশিয়ার অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্য এবং সে কারণে এ বিষয়ে মালয়েশিয়ার সাথে কাজ করার জন্যে বাংলাদেশ প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে। এই মেলায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশে হালাল সেক্টরের উন্নয়ন তথা মালয়েশিয়াসহ আসিয়ান অঞ্চলে বাংলাদেশি পণ্যের বাজার বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়