প্রকাশ : ১৩ ডিসেম্বর ২০২১, ০০:০০
বুনো মোষের সংবেদ
গজ গামিনির মতো তম্বুরাযুগল-হেন পাছা আর বর্তুল স্তনের ভার দোলাতে দোলাতে ঝোঁপ-কাটা ও করাল মাড়িয়ে সে ছুটছিল তৃষ্ণার জল-সন্ধানেÑ কোনও সন্নিহিত সরোবরে...
জল খুঁজে দিশাহীন সে আসে গহন কান্তারেÑ যেখানে রাজ করেণুর বৃংহণ, শ্বাপদের নীল-শ্বাস আর সিংহের ভয়াল হুঙ্কার চলে নিশিদিন; সেই ঘন-বনলোকে পাওয়া গেলো পূর্ণ জলের দিঘি এক।
সবেগে ঝাঁপিয়ে পড়ার আগেই খাঁড়ির চারপাশে সে দেখতে পেলো জলভোগী জন্তুরা সামন্ত সেনার মতো দাঁড়িয়ে এবং ওদের রক্তচোখে খেলা করছিল মাংসের মৌতাত যেন এখনি বজ্রছেদনে রত হবে বাঘিনীরা!
তৃষ্ণার আকুতি ও ভীতির সেই সঘন-সংকটে হাসি হাসি উল্লাসে জলে ডুবিয়ে দিলো সে দিঘল দেহটি! যদিও সে জানে, তারই ভেসে ওঠার অপেক্ষায় জান্তব নখর উঁচিয়ে দাঁড়িয়ে আছে রাতের খুনিরা!
হৃদয় লেখা
তুমি বললে : এসো দেখে যাওÑ
ভরপুর লাবণ্যে সুরক্ষিত স্তনের মহিমা, তৃপ্তি লাভো, পান করো অলৌকিক অমৃতভার...
দেখলাম, অতি-ব্যবহারে সময়ের ভারে আর বয়সের অস্বাস্থ্যে নত মাংসের ভাঁজ।
বললাম : এ দুঃখ তোমার একার নয়। নতুন পুষ্পরাগে যে বুকে উছল-শোভা, অবোধ প্রেমিকেরা গায় তাকে ঘিরে...
বললে : তাহলে নিচে নামো, দেখো, সুপ্রস্তুত সানুদেশে মিথিলের গুল্ম-কোলাজ, উন্মুখ হয়ে আছে দিঘি, দাঁড় বাও, অকৃপণ সন্ত্রাসে লাগো...
বললাম : মেদ মাংসের উথালি পাথালি হালে কে চালাবে স্বর্ণ-হল, বাঁকাপথে কে চলে হরদম! পৃথিবীতে নেই কোনও অনিন্দ্য শরীর; শ্রমে-ঘামে, আহারে ও কামে সব দেহ ছাড়ায় কর্দম!
বরং বসো, তোমার মুখ দেখি, অধরের কম্প দেখি, স্বপ্ন দেখি চোখের তলাটে
কাছে আসো, খোলোÑ বুকের হেরেম খোলো
শব্দ শুনি, সে ভাষণ গান হতে পারে, হতে পারে নীল প্রজাপতি উড়োউড়িÑ
পবিত্র পাহাড়ের ডালে...
আমি তোমার সে হৃদয়ের লোভে জীবনের কৃষ্ণ-কলিঙ্গে লড়ে যাবো আপ্রাণ...
দেহ নয় হৃদয়ের চিত্র দেখাও!
একটি বিষম গান
নিমিষেই জৌলুস হারিয়ে ফেলে সুবর্ণ ফুলেরা
দেহে বাঁধে রোগ বাসা
নতুন ঘরে ঘরে সারারাত ঘুণ করে গুনগুন
সব নীল, শাপে-সন্তাপে নীল সব বেদনার পারা
অমোঘ আশ্বাস বলে কিছু নেই
যেসব মন্ত্রগুণে দিন গুজরায় লোকে স্বপ্ন আঁকে সারাক্ষণ
দিনশেষে সব মিছে
চুপেচুপে কথার ধ্বনিরা করে আলোহীন আঁধারের গান !
জীবনের ঔরসে জন্ম নেয় মরণের অপরূপ রঙ-লীলা-সাজ
মতিনের মৃত দুহিতার দিকে চেয়ে এ খবর পেয়েছি আজ!