মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪  |   ২৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   মিশরে ঈদে মিলাদুন্নবীর ঐতিহ্য ‘আরুসাত-আল-মোলিদ’ : জন্মদিনের পুতুল
  •   'বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের চেতনার রাজনৈতিক শক্তির বিকাশ অপরিহার্য'
  •   চাঁদপুরের ২৪তম পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব
  •   ফরিদগঞ্জে ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে শোভাযাত্রা
  •   ওয়াইফাই সংযোগ দিতে গিয়ে প্রাণ গেল যুবকের

প্রকাশ : ২৩ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০

একদিন কবরে যেতেই হবে

মৃত্যু সম্পর্কিত আয়াত ও হাদীস
একদিন কবরে যেতেই হবে

আল্লাহ তা’আলা বলেছেন, আমি তোমাদের মাঝে মৃত্যুকে নির্ধারণ করেছি। [সূরা ওয়াক্বিয়া-৬০]

বলুন, তোমরা যে মৃত্যু থেকে পলায়ন কর, সেই মৃত্যু অবশ্যই তোমাদের মুখামুখি হবে, অতঃপর তোমরা অদৃশ্য, দৃশ্যের জ্ঞানী আল্লাহর কাছে উপস্থিত হবে। তিনি তোমাদেরকে জানিয়ে দিবেন সেসব কর্ম, যা তোমরা করতে। [আল্ জুমআ ৮]

তিনি তো তোমাদের সৃষ্টি করেছেন মাটির দ্বারা, অতঃপর শুক্রবিন্দু দ্বারা, অতঃপর জমাট রক্ত দ্বারা, অতঃপর তোমাদেরকে বের করেন শিশুরূপে, অতঃপর তোমরা যৌবনে পদর্পণ কর, অতঃপর বার্ধক্যে উপনীত হও। তোমাদের কারও কারও এর পূর্বেই মৃত্যু ঘটে এবং তোমরা নির্ধারিত কালে পৌঁছ এবং তোমরা যাতে অনুধাবন কর। [সূরা গাফির:৬৭]

বলুন! তোমরা যদি মৃত্যু অথবা হত্যা থেকে পলায়ন কর, তবে এ পলায়ন তোমাদের কাজে আসবে না। তখন তোমাদেরকে সামান্যই ভোগ করতে দেয়া হবে। [সূরা আল্ আহযাব :১৬]

আল্লাহই তোমাদের সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর রিযিক দিয়েছেন, এরপর তোমাদের মৃত্যু দেবেন, এরপর তোমাদের জীবিত করবেন। তোমাদের শরীকদের মধ্যে এমন কেউ আছে কি, যে এসব কাজের মধ্যে কোন একটিও করতে পারবে? তারা যাকে শরীক করে, আল্লাহ তা থেকে পবিত্র ও মহান। [সূরা আর্ রূম:৪০]

তোমরা যেখানেই থাক না কেন; মৃত্যু কিন্তু তোমাদেরকে পাকড়াও করবেই। যদি তোমরা সুদৃঢ় দূর্গের ভেতরেও অবস্থান কর, তবুও। [সূরা আন নিসা:৭৮]

প্রত্যেক প্রাণীকে আস্বাদন করতে হবে মৃত্যু। আর তোমরা কিয়ামতের দিন পরিপূর্ণ বদলা প্রাপ্ত হবে। তারপর যাকে দোযখ থেকে দূরে রাখা হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে, তার কার্যসিদ্ধি ঘটবে। আর পার্থিব জীবন ধোঁকা ছাড়া অন্য কোন সম্পদ নয়। [সূরা আল্ ইমরান: ১৮৫]

প্রত্যেককে মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করতে হবে। আমি তোমাদেরকে মন্দ ও ভাল দ্বারা পরীক্ষা করে থাকি এবং আমারই কাছে তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে। [সুরা আম্বিয়া :৩৫]

জীবমাত্রই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে। অতঃপর তোমরা আমারই কাছে প্রত্যাবর্তিত হবে। ]সুরা আনকাবুত :৫৭]

নিশ্চয় তোমারও মৃত্যু হবে এবং তাদেরও মৃত্যু হবে। [সুরা যুমার:৩০]

অতঃপর নির্ধারিত সময়ে যখন তাদের মৃত্যু এসে যাবে, তখন এক মুহুর্তও বিলম্বিত কিংবা তরান্বিত করতে পারবে না। [সূরা নাহল-৬১]

হে মুমিনগণ! তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি যেন তোমাদেরকে আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফেল না করে। যারা এ কারণে গাফেল হয়, তারাই তো ক্ষতিগ্রস্ত। আমি তোমাদেরকে যা দিয়েছি, তা থেকে মৃত্যু আসার আগেই ব্যয় কর। অন্যথায় সে বলবেঃ হে আমার পালনকর্তা, আমাকে আরও কিছুকাল অবকাশ দিলে না কেন? তাহলে আমি সদকা করতাম এবং সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত হতাম।প্রত্যেক ব্যক্তির নির্ধারিত সময় যখন উপস্থিত হবে, তখন আল্লাহ কাউকে অবকাশ দেবেন না। তোমরা যা কর, আল্লাহ সে বিষয়ে খবর রাখেন। [সূরা মুনাফিকুন:৯-১১]

যখন তাদের কারও কাছে মৃত্যু আসে, তখন সে বলে,”হে আমার পালনকর্তা! আমাকে পুনরায় (দুনিয়াতে ) প্রেরণ করুন। যাতে আমি সৎকর্ম করতে পারি, যা আমি করিনি।

কখনই নয়, এ তো তার একটি কথার কথা মাত্র। তাদের সামনে পর্দা আছে পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত।অতঃপর যখন শিংগায় ফুৎকার দেয়া হবে, সেদিন তাদের পারস্পরিক আত্নীয়তার বন্ধন থাকবে না এবং একে অপরকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে না।যাদের পাল্লা ভারী হবে, তারাই হবে সফলকাম, এবং যাদের পাল্লা হাল্কা হবে তারাই নিজেদের ক্ষতিসাধন করেছে, তারা দোযখেই চিরকাল বসবাস করবে।আগুন তাদের মুখমন্ডল দগ্ধ করবে এবং তারা তাতে বীভৎস আকার ধারন করবে। [সূরা মুমিনুন:৯৯-১০৪]

মুমিনদের জন্য কি এখনো সে সময় আসে নি যে তাদের হৃদয় আল্লাহর স্মরণে বিগলিত হবে? তারা তাদের মত যেন না হয়, যাদেরকে পূর্বে কিতাব দেয়া হয়েছিল। তাদের উপর সুদীর্ঘকাল অতিক্রান্ত হয়েছে, অতঃপর তাদের অন্তঃকরণ কঠিন হয়ে গেছে। তাদের অধিকাংশই পাপাচারী। [সূরা হাদীদণ্ড১৬]

এবং কেউ জানে না কোন দেশে সে মৃত্যুবরণ করবে। [সূরা লোকমান -৩৪]

আল-হাদীস

ইবনে উমার (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) থেকে বর্ণিত।

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমার কাঁধ ধরে বললেন: “দুনিয়াতে এভাবে কাটাও যেন তুমি একজন মুসাফির বা পথিক।”

ইবনে উমার (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) বলতেন, “তুমি সন্ধ্যায় উপনীত হয়ে সকাল বেলার অপেক্ষা (আশা) করো না এবং সকালে উপনীত হয়ে সন্ধ্যা বেলার অপেক্ষা করো না। সুস্বাস্থ্যের দিনগুলোতে রোগব্যাধির (দিনগুলোর) জন্য প্রস্তুতি নাও এবং জীবদ্দশায় মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করো।” (বুখারী) রিয়াদুস সলিহীন:৫৭৫

ইবনে মাসঊদ (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একটি বর্গক্ষেত্র আঁকলেন, তার মাঝ বরাবর কয়েকটি সরল রেখা টানলেন যা বর্গক্ষেত্র ভেদ করে বাইরে চলে গেছে। তিনি মধ্যবর্তী এ রেখাটির সাথে যুক্ত আরো কতগুলো ছোট ছোট সরল রেখা (আড়াআড়ি ভাবে) টানলেন, তারপর বলেন: “এটা হল মানুষ এবং এটা তার মৃত্যু যা তাকে বেষ্টন করে আছে। (বর্গক্ষেত্র ভেদ করে) বাইরে বেরিয়ে যাওয়া রেখাটুকু হচ্ছে তার আশা-আকাঙ্ক্ষা। ছোট ছোট রেখাগুলো হল তার জীবনের বিপদাপদ। একটি বিপদ থেকে ছুটতে পারলে অপর বিপদ এসে তাকে বিচলিত করে।। আবার দ্বিতীয়টি থেকে রেহাই পেলে তৃতীয়টি তাকে নিষ্পেষিত করে।” (বুখারী) রিয়াদুস সলিহীন:৫৭৮

আবু হুরাইরা (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন: “সাতটি জিনিস প্রকাশ পাওয়ার পূর্বেই তোমরা নেক কাজের দিকে সত্ত্বর অগ্রসর হও।

(১) তোমরা কি অপেক্ষা করছো এমন দরিদ্র্যের যা অমনোযোগী (অক্ষম) করে দেয়,

(২) অথবা এমন প্রাচুর্যের যা ধর্মদ্রোহী বানায়,

(৩) অথবা এরূপ রোগ-ব্যাধির যা (দৈহিক সামর্থ্যকে) তছনছ করে দেয়,

(৪) অথবা এমন বৃদ্ধাবস্থার যা জ্ঞান-বুদ্ধিকে লোপ করে দেয়,

(৫) অথবা এমন মৃত্যুর যা অলক্ষ্যেই উপস্থিত হয়,

(৬) কিংবা দাজ্জালের, যা অপেক্ষামাণ নিকৃষ্ট অনুপস্থিত বস্তু,

(৭) অথবা কিয়ামাতের যা অত্যন্ত বিভীষিকাময় ও তিক্ত।”

ইমাম তিরমিযী হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, এটি হাসান হাদীস। রিয়াদুস সলিহীন:৫৭৯

আবু হুরাইরা (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন: “তোমরা (দুনিয়ার) স্বাদণ্ডআহলাদ নিঃশেষকারী মৃত্যুকে বেশি বেশি স্মরণ করো।”

ইমাম তিরমিযী এ হাদীস বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেন, এটি হাসান হাদীস।

মৃত্যু যন্ত্রনা সম্পর্কে নবী করিম (সাঃ) এরশাদ করেন, হযরত হাসান বসরী বর্ননা করেন নবী করীম সাঃ বলেন, মুমিনের মৃত্যু যন্ত্রনা ও কষ্ট ৩০০ বার তলোয়ারের আঘাতের সমান। মৃত্যু সম্পর্কে যার এ বিশ্বাস রয়েছে তার উচিত নেক কাজ করে ও পাপ কাজ পরিত্যগ করে মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি নেয়া। কারন মানুষ জানে না যে মৃত্যু কখন আসবে।

একদিন হযরত উমর রাঃ কা’ব রাঃ কে বললেন- হে কা’ব মৃত্যু সম্পর্কে বলুন। তিনি বললনে যে মৃত্যু হল একটি কাঁটাযুক্ত গাছের ন্যায়। সে গাছটি আদম সন্তানের পেটে প্রবেশ করিয়ে দিলে তার প্রতিটি কাঁটা শিরা উপশিরায় গেঁথে গেল। অতঃপর কোন শক্তিশালী ব্যাক্তি সেটা ধরে টান দিলে তার কিছু অংশ ছিঁড়ে চলে এল আর কিছু অংশ রয়ে গেল।

হে আল্লাহ, মৃত্যুর সময় তুমি আমাদেরকে দয়া করে ঈমান এবং ভালো আমলের সাথে মৃত্যু দান করিও। আমিন। ইয়া রব্বাল আলামিন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়