রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১, ৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬  |   ২৯ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   বয়ারচর সংযোগ ব্রিজ ও বেড়িবাঁধ রক্ষায় এলাকাবাসীর মানববন্ধন
  •   জার্মানিতে কঠিন হচ্ছে রাজনৈতিক আশ্রয়
  •   ইতালির দ্বীপে নৌকাডুবিতে নিখোঁজ ২১
  •   অভিভাবকহীনতায় দিশেহারা চাঁদপুরের আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা
  •   আহতদের দেখতে নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে প্রধান উপদেষ্টা

প্রকাশ : ১৭ জুলাই ২০২৪, ০০:০০

আশুরা ও কারবালার ঘটনা

মুফতি মুহাঃ আবু বকর বিন ফারুক
আশুরা ও কারবালার ঘটনা

আশারা থেকে আশুরা। মহররম মাসের ১০ তারিখকে আশুরা বলা হয়। ইসলামের ইতিহাসে আশুরার তাৎপর্য ও গুরুত্ব রয়েছে। সৃষ্টির শুরু থেকে কেয়ামত পর্যন্ত আশুরায় বিভিন্ন ঘটনা সংঘটিত হয়েছে এবং হবে। মুসলমানদের নিকট আশুরা সবচেয়ে বেশি পরিচিত হওয়ার কারণ হলো-মহররম মাসের ১০ তারিখ আশুরার দিন ইরাকের কারবালার ফুরাত নদীর তীরে ইমাম হোসাইন (রাঃ) এজিদ বাহিনীর হাতে নির্মমভাবে শাহাদাত বরণ করেন। এজন্য মুসলমানদের নিকট ১০ মহররম অত্যাধিক পরিচিত ও গুরুত্বপূর্ণ দিন।

যুগে যুগে আশুরা দিন বিভিন্ন ঘটনা সংঘটিত হলেও প্রিয় নবী মুহাম্মাদূর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রিয় নাতি ইমাম হোসেন রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু কারবালার ময়দানে শাহাদাত বরণ, এটাই মুসলমানদের কাছে অতি স্মরণীয় এবং শিক্ষনীয় ঘটনা।

কারবালার ঘটনার মাধ্যমে একটি বিষয় পরিলক্ষিত হয়। মুসলমান বেষধারী-লেবাসধারী একদল মানুষ ও মুনাফিক হতে পারে। তাদের দ্বারাও ধর্মের অনেক ক্ষতি হতে পারে। শুধু মুখে মুসলমান বললেই হবে না বরং বাস্তবেই আহলে বাইতের অনুগত হতে হবে।

আশুরার উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটনা নি¤েœ তুলে ধরা হলো-আল্লাহ তায়ালা এই দিনেই লাওহে মাহফুজ ও প্রাণীকূলের প্রাণ সৃষ্টি করিয়াছেন। দুনিয়ার সমস্ত সমুদ্র-মহাসমুদ্র এবং পাহাড়-পর্বত এই দিনই সৃষ্টি করিয়াছেন। হযরত আদম (আঃ)কে আল্লাহ তা’আলা এই তারিখে সৃষ্টি করিয়া এই তারিখেই বেহেস্তে প্রবেশ করিয়েছেন ও একই তারিখে পৃথিবীতে অবতরণ করিয়েছেন। হযরত ইব্রাহিম (আঃ)কে আল্লাহ তায়ালা এই তারিখে সৃষ্টি করিয়াছেন, এই তারিখে নমরুদের অগ্নিকুণ্ড হতে মুক্তি পেয়েছিলেন এবং এই তারিখে তাহার পুত্র ইসমাইল (আঃ)কে আল্লাহর হুকুমে কুরবানির উদ্যোগ গ্রহণ করা হইয়াছিল। হযরত দাউদ (আঃ)-এর জালুত বাহিনীর ওপর বিজয় লাভ করিয়াছিলেন এই তারিখেই। হজরত আইয়ুব (আঃ)-এর ১৮ বছর অসুস্থতার পর রোগমুক্ত হয়েছিলেন এই তারিখেই। হযরত ঈসা (আঃ)কে আল্লাহ তায়ালা আসমানে তুলে নিয়ে ছিলেন এই তারিখে। ফেরাউন হযরত মুসা (আঃ)-এর পশ্চাদপন করিয়া লোহিত সাগরে ডুবিয়া প্রাণ হারাইয়াছিল। এই তারিখে হযরত ঈসা (আঃ) দুনিয়ায় আগমন করিয়াছিলেন। এই তারিখে আখেরি পয়গম্বর মুহাম্মাদূর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রিয় দৌহিত্র ইমাম হোসাইন (রাঃ) কারবালার ময়দানে প্রায় সমস্ত পরিবার পরিজনসহ শাহাদাত বরণ করেন। এই মাসের ১০ তারিখের ঐতিহাসিক নাম ইয়ামে আশুরা।

মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনুল কারীমে এরশাদ করেন, ‘নিশ্চয়ই আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকে আল্লাহর বিধানে মাস গণনায় বারটি। এর মধ্যে বিশেষ রূপে চারটি মাস হচ্ছে সম্মানিত।’ (১০ পারা, ৯ সূরা,তওবাহ -৩৬)

পবিত্র কোরআনে ‘অতিসম্মানিত ও মর্যাদাপূর্ণ চার মাস’ বলতে জিলকদ, জিলহজ, মহররম ও রজব— এই চার মাসকে বোঝানো হয়েছে। (তাফসিরে মাজহারি, সুরা-৯ তওবা, আয়াত: ৩৬)।

হযরত আবু বকর (রাঃ) বলেনঃ নাবী কারীম (সাঃ) বলেছেন, বছরে বার মাসে। তন্মধ্যে চারটি সম্মানিত। তিনটি লাগাতার, তা হলো, যুলকা'দাহ, যুল হিজ্জাহ এবং মুহাররাম। আর একটি হলো রজব মাস তা জমাদিউসসানী ও শাবানের মধ্যখানে। (বুখারী: ৪৪০৬)

হাদিস শরিফে মহররমকে ‘শাহরুল্লাহ’ বা ‘আল্লাহর মাস’ বলে অভিহিত করা হয়েছে।

হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন - রাসূল (সাঃ) মক্কা হতে মদিনায় হিজরত সূত্রে আগমন করলেন তখন তিনি সেখানকার ইয়াহুদীগণকে আশুরার দিন রোজা রাখতে দেখলেন। তিনি তাদেরকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা এই দিনে রোজা রাখছ কেন? তারা উত্তর করলো, এটা এক বিরাট সম্মানিত দিন। এই দিনে আল্লাহ পাক হযরত মূসা (আঃ) এবং তার উম্মতকে নাজাত দিয়েছিলেন এবং ফেরাউন ও তার বাহিনীকে লোহিত সাগরে পানিতে ডুবে ধ্বংস করে দেন। তাই, হযরত মূসা (আঃ) উহার কৃতজ্ঞতা স্বরূপ এই দিনে রোজা পালন করেন বিধায় আমরা এই দিনে রোজা রাখি।এতশ্রবণে হযরত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, হযরত মূসা আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নাজাতে কৃতজ্ঞতা আদায়ের ক্ষেত্রে আমরা তোমাদের চেয়ে বেশি উপযুক্ত ও অধিক হকদার। অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে ঐ আশুরার দিন রোজা রাখেন এবং মুমিনদেরকে রোজা রাখার হুকুম প্রদান করেন।( বুখারী ও মুসলিম শরীফ)

আশুরার রোজা

হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন যখন হযরত রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আশুরা রোজা রাখেন এবং সাহাবায়ে কেরামকে রোজা রাখার হুকুম প্রদান করেন, তখন তারা আরজ করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! এ দিনটি এমন, যেদিনের প্রতি ইহুদি খ্রিস্টান জাতির লোকেরা সম্মান প্রদর্শন করে থাকে। (অথচ আমরা তাদের বিরোধিতা করার জন্য আর্দিষ্ট) এতশ্রবণে হযরত রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘আমি যদি আগামী বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকি তাহলে মুহাররমের ৯ তারিখ ও রোজা রাখব। (মুসলিম শরীফ)

আশুরার রোযার ফযিলত

হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন -হযরত রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, রমজানের ফরজ রোজার পর উৎকৃষ্ট রোজা মহররম মাসের আশুরার রোজা। (মুসলিম শরীফ)

হযরত আবু কাতাদা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন - হযরত রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আশুরার রোজা পালনে আমি আল্লাহ পাকের দরবারে আশা করি যে, তিনি বিগত বছরের গুনাহ রাশি ক্ষমা করে দিবেন। (মুসলিম শরীফ)

আশুরার রোজা ২টি

হযরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, তোমরা ৯ ও ১০ মহররম রোজা পালন করে ইয়াহুদীদের বিরোধিতা কর। (তিরমিজী শরীফ)

আশুরার দিন পরিবারের জন্য খরচ করা

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আশুরার দিনে পরিবারের ব্যয়বৃদ্ধি করবে, ভালো খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন করবে, আল্লাহ তাআলা সারা বছরের জন্য তার প্রাচুর্য বাড়িয়ে দেবেন।’ বিশিষ্ট তাবিয়ি হযরত সুফিয়ান ছাওরি (রহ.) বলেন, ‘আমরা এটি পরীক্ষা করেছি এবং এর যথার্থতা পেয়েছি।’ (মিশকাত: ১৭০; ফয়জুল কালাম: ৫০১, পৃষ্ঠা: ৩৪৯; বায়হাকি ও রাজিন)।

আশুরা ও কারবালা

আশুরা মুসলমানদের কাছে সবচেয়ে বেশি পরিচিত এজন্যই যে কারবালার ময়দানে ইমাম হোসাইন (রাঃ) আশুরার দিন শাহাদাত বরণ করেন।

নি¤েœ এ বিষয়টি তুলে ধরা হলো -

৬১ হিজরী সনের ১০ মহররম মোতাবেক ৬৮০ খ্রিস্টাব্দের ১০ অক্টোবর। ইরাকের ফোরাত নদীর তীর কারবালার প্রান্তরে ইমাম হুসাইন (রাঃ) ৭২ জন সঙ্গী সাথী সহ শাহাদাত বরণ করেন।

পাপিষ্ট এজিদের বশ্যতা স্বীকার করতে ইমাম হোসেন রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু কে বারবার চাপ প্রয়োগ করেন ইমাম হোসেন রাদিয়াল্লাহু তা'আলা পাপিষ্ট এজিদের বসতা স্বীকার করতে রাজি না হওয়ায় কারবালার প্রান্তরে ইমাম হুসাইন রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু কে শাহাদাত বরণ করতে হয়েছিল।

রাসূল (সাঃ)-এর ইন্তেকালের পর হযরত আবু বকর (রাঃ) প্রায় আড়াই বছর। ওমর (রাঃ) ১০ বছর। হযরত ওসমান (রাঃ) ১২ বছর। হযরত আলী (রাঃ) ২ বছর। হযরত হাসান (রাঃ) ছয় মাস খিলাফাতে অধিষ্ঠিত ছিলেন।

আমিরে মুয়াবিয়ার ইন্তেকালের পর সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের সিংহাসনে পাপিষ্ট এজিদ ক্ষমতা দখল করে বসেন। ইমাম হোসাইন (রাঃ) তখন মদিনায় ছিলেন। বারবার ইমাম হোসাইন (রাঃ)কে এজিদের বশ্যতা স্বীকারের জন্য তলব করা হয় কিন্তু ফাসেক এজিদের বশ্যতা স্বীকার করতে ইমাম হোসাইন (রাঃ) রাজি ছিলেন না। বরং তিনি স্ব- পরিবারে মদিনা থেকে মক্কায় চলে গেলেন। যাতে নিরাপদে ইবাদতে সময় কাঁটাতে পারেন। ইরাকের কুফা নগরী থেকে ইমাম হোসাইন (রাঃ)-এর কাছে প্রায় ১২শ’ চিঠি পাঠানো হয়েছিল। যাতে লেখা ছিল হে হোসাইন! আপনি কুফায় চলে আসুন। ফাসিক এজিদের হাতে আমরা বশ্যতা স্বীকার করতে রাজি না। ইমাম হোসাইন (রাঃ) সকলের পরামর্শক্রমে মুসলিম বিন আকিলকে কুফায় প্রেরণ করেন। মুসলিম বিন আকিলের হাতে প্রথমত হাজার হাজার মুসলমান ইমাম হোসাইনের নামে বায়াত গ্রহণ করেন। ইমাম হোসাইনকে কুফায় আসার জন্য মুসলিম বিন আকিল চিঠি লিখেন। কুফার গভর্ণর নোমান বিন বশিরের নমনীয়তায় এজিদ, ওবায়দুল্লাহ ইবনে জিহাদকে কুফার গভর্নর নিযুক্ত করেন। ওবায়দুল্লাহ ইবনে জিহাদ মুসলিম বিন আকিলকে আটক করে হত্যা করেন। মুসলিম বিন আকিল কুফাবাসীর প্রতারণার কথা লিখে ইমাম হোসাইন (রাঃ)কে কুফায় না আসতে চিঠি লিখেন। ইমাম হোসাইন (রাঃ) প্রথম চিঠি পেয়ে কুফায় রওনা দিলেন। কারবালা নামক প্রান্তরে তাঁকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। ফোরাত নদীর পানি থেকে তাদেরকে বঞ্চিত করা হয়। ইমাম হোসাইন (রাঃ) যুদ্ধ চাননি। এজন্য বারবার মদিনায় অথবা অন্য কোন দিকে চলে যাওয়ার সুযোগ চেয়েছিলেন। কিন্তু তাকে কারবালাতেই থাকতে বাধ্য করা হয়েছিল। পরিশেষে ইমাম হোসাইন (রাঃ) সিনানের হাতে শাহাদাত বরণ করেন।

ইমাম হোসাইন (রাঃ)-এর শাহাদাতের পর তার খন্ডিত মস্তক দামেস্কের সিংহাসনে এজিদের কাছে নিয়ে যান। এজিদ ইমাম হোসাইন (রাঃ)-এর ঠোঁটে আঘাত করেন।

কারবালার ঘটনায় আমরা কার পক্ষ নিব

ইমাম হোসাইন (রাঃ) আহলে বাইতের অন্যতম। আমরা রাসূল প্রেম এবং আহলে বাইতের প্রেমে ইমাম হোসাইন (রাঃ)-এর পক্ষ অবলম্বন করব।

ইমাম হোসাইন (রাঃ) কেন এজিদের হাতে বায়আত গ্রহণ করেন নি

সমাজের একজন পাপাচার লোককে যদি ইমাম বানিয়ে দেয়া হয়। আপনারা কি তার পিছনে নামাজ পড়বেন?

এজিদ মূলত পাপিষ্ট, পাপাচার, ফাসিক ছিলেন। এজন্য তাঁর হাতে ইমাম হোসাইন (রাঃ)বায়াত গ্রহণ করেননি।

এজিদের হাতে বায়াত হলে কি হত

এজিদের হাতে বায়াত হলে সত্য ইসলাম ধ্বংসের পথ উন্মোচিত হয়ে যেত। পাপাচার ফাসিকদের হাতে ক্ষমতা চলে যেত। ইসলামের ভাবমূর্তি নষ্ট হতো। যুগে যুগে মানুষরা জানতো ইমাম হোসাইন (রাঃ) ফাসিকের হাতে বায়াত গ্রহণ করেছেন।

ইমাম হোসাইন (রাঃ) কি ক্ষমতার লোভে কুফাতে গেলেন

ইমাম হোসাইন (রাঃ) ক্ষমতার লোভে কুফাতে যায়নি। বরং কূফাবাসী চিঠিতে লিখেছিলেন, আপনি যদি সত্যের পথ নিয়ে আমাদের মাঝে না আসেন। তাহলে পাপিষ্ঠ এজিদের বশ্যতা স্বীকার করতেই হবে। এজন্য হাশরে আপনি দায়ী থাকবেন। ইমাম, আমীর, খলিফা কোন পাপিষ্ঠ হতে পারেনা। এজন্য ইমাম হোসাইন (রাঃ)-এর প্রয়োজন ছিল। দায়িত্ব ও সত্য ইসলাম প্রতিষ্ঠায় তিনি কুফাতে গিয়েছিলেন।

কারবালার শিক্ষা

কারবালার ঘটনা থেকে আমরা এ শিক্ষাই গ্রহণ করতে পারি যে। কোন ফাসেককে ইমাম, আমির বা খলিফা হিসাবে মেনে নেওয়া যায় না। ইসলামের নাম নিয়ে অনেক দল- উপদল সৃষ্টি হবে। সবাই কোরআন হাদিস দিয়ে আমাদেরকে বুঝাতে চেষ্টা করবে। কিন্তু রাসূল প্রেম আহলে বায়িতের প্রেম, মহব্বত যাদের অন্তরে রয়েছে। তাদের পথ ও মত মত আমাদেরকে চলতে হবে।

ওসমান ও আলী এবং হাসান, হোসাইনকে শহিদ করিয়ে দিয়েছিল। তাহলে তাঁরা কেমন মুসলমান তা অনুমেয় করা যায়।

এজন্য অলি- আউলিয়া পীর মাশায়েখদের পথ ও মত ইহদিনাস সিরাতল মুস্তাকিম এর উপর প্রতিষ্ঠিত। এ পথে সত্য, ন্যায়, মানবতা ও ইসলামের প্রকৃত উদাহরণ পাওয়া যায়। তাই আমরা তাদের আদর্শ অনুসরনে জীবন যাপন করব।তবে ভন্ড পীর থেকে সাবধান থাকতে হবে।

আশুরাতে নিষিদ্ধ কাজ

আশুরাতে চুরি, চাকু, বা কোন বস্তু দ্বারা শরীরে আঘাত করে রক্তাক্ত করা। শরিয়ত বিরোধী কোন কাজ করা।

আশুরার আমল

রোযা রাখা, দান সদকা করা, তাওবা ইস্তেগফার করা। আশুরার তাৎপর্য মানুষকে জানানোর জন্য আশুরা তাৎপর্য নিয়ে কোন সভা, সেমিনার, আলোচনা অনুষ্ঠান করা অবশ্যই জায়েজ। ইমাম হোসাইন রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু ও শাহাদাতে কারবালার স্মরণে দোয়া করা অবশ্যই জায়েজ কাজ। মিলাদ, মাহফিল, দোয়া, আলোচনা, সভা, সেমিনার অনুষ্ঠানের শেষে তাবারক ব্যবস্থা রাখা এটাও জায়েজ কাজ।

দুঃখ প্রকাশ

অনেকেই দেখা যায়, আশুরা তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা করে। কিন্তু শোহাদায়ে কারবালার স্মরণে কোন আলোচনা করেনি। বরং তাদের বিষয়ে থেকে দূরে থাকে। বরং আমাদের জন্য উচিত ছিল শোহাদায়ে কারবালার শিক্ষাকে সামনে নিয়ে আমাদের ইসলামী আদর্শ গড়ে তোলা।

রাসূল (সাঃ)কে ভালোবাসা। রাসূলের পরিবার-পরিজন, আহলে বাইত, রাসূলের নাতিদেরকে ভালোবাসা এটা ইসলামের সঠিক দিক-নির্দেশনা। লেখক : ইমাম ও খতিব, বিষ্ণুপুর মনোহরখাদী মদিনা বাজার বাইতুল আমীন জামে মসজিদ, চাঁদপুর সদর, চাঁদপুর।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়