রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৪ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ০৫ জুলাই ২০২৪, ০০:০০

লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক

সম্প্রীতির বন্ধন বাইতুল্লাহ, জন্মভূমি থেকে পুণ্যভূমি মক্কা ও মদিনা

শেখ মুহাঃ জয়নাল আবদিন
সম্প্রীতির বন্ধন বাইতুল্লাহ, জন্মভূমি থেকে পুণ্যভূমি মক্কা ও মদিনা

হজ ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। শারীরিক এবং আর্থিকভাবে সক্ষম ব্যক্তি জীবনে একবার হজ করা ফরজ। হজ একটি নির্দিষ্ট সময়ের আমল, যা বাইতুল্লায় এসে আল্লাহর মেহমান হতে হয় এবং নির্দিষ্ট নিয়মে তা সম্পন্ন করতে হয়। হজের সফর একটি কষ্টের সফর যার ফলাফলও আল্লাহ অফুরন্ত দিয়ে থাকেন।

কাবা ঘরের সংক্ষিপ্ত পরিচয় :

পবিত্র কাবাঘরকে আরবিতে বলা হয় বাইতুল্লাহ, যার বাংলা অর্থ হলো আল্লাহর ঘর। মহান আল্লাহপাক তাঁর ঘরকে লক্ষ্য করে বলেন নিঃসন্দেহে সর্বপ্রথম এ ঘর মানুষের জন্যে নির্ধারিত হয়েছে, যা মক্কায় অবস্থিত এবং সারা জাহানের মানুষের জন্যে হেদায়েত ও বরকতময়। (সূরা আল ইমরান-৯৬)

হযরত আদম (আঃ) ও হযরত হাওয়া (আঃ)-এর পৃথিবীতে মিলন হলে তারা উভয়ে আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং ইবাদতের জন্যে একটি মসজিদ হযরত আদম (আঃ) আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন। আল্লাহ তাদের দোয়া কবুল করেন এবং আরশে মহল্লায় অবস্থিত বাইতুল মামুরের আকৃতিতে পবিত্র কাবাঘর স্থাপন করেন।

এখানে হযরত আদম (আঃ) সন্তুষ্টচিত্তে আল্লাহর ইবাদত করতে থাকেন। অনেক তফসিরবিদদের মতে, মানব সৃষ্টির বহু আগে মহান আল্লাহ তায়ালা কাবাঘর সৃষ্টি করেছেন।

‘আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বাইতুল্লাহর স্থানকে সমগ্র ভূপৃষ্ঠ থেকে দু হাজার বছর আগে সৃষ্টি করেন। হযরত আবু যর গিফারী (রাঃ) হতে বর্ণিত হয়েছে, রাসূল (সাঃ) তাঁর একটি প্রশ্নের উত্তরে বলেছিলেন, ‘বিশ্বের সর্বপ্রথম মসজিদ হলো মসজিদুল হারাম। এর পরের মসজিদ হলো মসজিদুল আকসা। মসজিদুল হারাম নির্মাণের ৪০ বছর পর মসজিদুল আকসা নির্মিত হয়।

হজরত আদম (আঃ) কাবাঘর আল্লাহর আদেশে পুনঃনির্মাণ করেন। এরপর শত শত বছর অতিবাহিত হলো। আল্লাহর বান্দারা কাবাঘরে সমবেত হয়ে হাজিরা দিতো। আর মুখে উচ্চারণ করত ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা, লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা-শারিকালাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা’অননিঈমাতা লাকাঅল মুলক, লা-শারিকালাক’ এভাবে গত হতে থাকলো। এরপর হজরত শীষ (আঃ) কাবাঘর পুনঃনির্মাণ করলেন। দিন দিন একত্ববাদীদের সংখ্যা বাড়তে থাকলো।

হযরত নূহ (আঃ)-এর সময়ে প্লাবণে এ ঘরকে আল্লাহ উঠাইয়া নেন। অতঃপর সমস্ত আম্বিয়ায়ে কেরামের জন্যে সেই স্থানে তাওয়াফের কোন ঘর ছিল না। তারপর হযরত ইব্রাহীম (আঃ)কে আল্লাহ স্থান দেখাইয়া দেন এবং ঘর নির্মাণের নির্দেশ দেন। (তারগীবে মোনযেরী)

হযরত ইব্রাহিম (আঃ) ও তার ছেলে হযরত ইসমাঈল (আঃ)-কে সঙ্গে নিয়ে কাবাঘর পুনঃনির্মাণ করেন। হযরত ইব্রাহিম (আঃ) কাবাঘর নির্মাণ করে আল্লাহর দরবারে দোয়া করলেন। হে আমার প্রতিপালক!

তোমার ঘর নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। আল্লাহ পাকের তরফ হইতে হুকুম হইল হজ পালনের জন্য সারা বিশ্ববাসীকে ঘোষণা করিয়া দিন। হে আল্লাহ! আমার এ আওয়াজ কিভাবে পৌঁছবে? আল্লাহপাক বললেন আওয়াজ পৌঁছানো আমার দায়িত্ব। হযরত ইব্রাহিম আঃ ঘোষণা করে দিলেন আর আল্লাহ পাকের কুদরতে আসমান জমিনের সকল মাখলুকের কাছে আওয়াজ পৌঁছে গেল।

অন্য হাদীসে আসিয়াছে সেই ঘোষণাপত্র প্রত্যেক ব্যক্তিরাই শুনিয়াছে এবং লাব্বাইক বলিয়াছে। যাহার অর্থ হইল আমি হাজির আছি।হাজীগন এহরাম বাঁধার পর সেই লাব্বাইক'ই বলিয়া থাকেন।

অন্য হাদিসে আসছে ওই আহবানে সাড়া দিয়ে যারা লাব্বাইক বলিয়াছে তাদের হজ নসিব হইয়াছে ।এমনকি রুহের জগত থেকে যারা এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে লাব্বাইক বলিয়াছে একবার বলার কারণে একবার হজ নসিব হইয়াছে, দুইবার বলার কারনে দুইবার হজ নসিব হইয়াছে এভাবে যতবার লাব্বাইক বলিয়াছে ততবার তার জীবনে হজ নসিব হইয়াছে। কত সৌভাগ্যবান সেই রূহ যেই রূহ লাব্বাইক বারবার বলিয়াছে। তাহারাই আজ হজের পর হজ করিতেছে বা করিবে।

হযরত ইব্রাহিম আঃ আরেকটি দোয়া করেছিলেন হে আমার প্রতিপালক! আমাদের বংশ থেকেই তাদের কাছে একজন পয়গাম্বর প্রেরণ করুন। আল্লাহ তার দোয়া কবুল করেন এবং হযরত ইব্রাহিম (আঃ) ও হযরত ইসমাঈল (আঃ) এর বংশ হতে হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ)-কে শেষ নবী ও রাসূল হিসেবে পৃথিবীতে প্রেরণ করেন।

শতাব্দীর পর শতাব্দী অতিবাহিত হলো। মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর নবুয়ত প্রাপ্তির ৫ বছর আগে কাবাঘর সংস্কার করেন মক্কার বিখ্যাত কোরাইশ বংশ। এ কুরাইশ বংশেই মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ৫৭০ খৃস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। কুরাইশরা কাবা শরিফ সংস্কারের পর হাজরে আসওয়াদ স্থাপন নিয়ে মতভেদ দেখা দেয়। সবার সম্মতিক্রমে আল্লাহর রাসূল (সাঃ) কাবা গৃহে হাজরে আসওয়াদ স্থাপন করেন। মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) জীবিত অবস্থায় ৬ হিজরিতে আব্দুল্লাহ ইবনে জোবায়ের (রাঃ) কাবা শরিফ সংস্কার করেন। সর্বশেষ হাজ্জাজ বিন ইউসুফ ৭৪ হিজরীতে কাবা শরিফ সংস্কার করেন। সুদীর্ঘ ১৪শ’ বছরে কাবাগৃহে কোনো সংস্কারের প্রয়োজন হয়নি। শুধুমাত্র কাবাঘরের চারপাশে অবস্থিত মসজিদে হারামের পরিবর্ধন, সংস্কার বা সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা হয়েছে।

কাবা এমন একটি বরকতময় ঘর যেখানে প্রতিদিন ১২০টি রহমত নাযিল হয় এর মধ্যে তাওয়াফকারীদের জন্য ৬০ নামায আদায়কারীর জন্য ৪০ এবং যারা বায়তুল্লাহর দিকে তাকিয়ে থাকে তাদের জন্য ২০টি রহমত বন্টিত হয়।

কা’বার চারদিকে আরো কিছু বরকতম স্থান আছে যেখানে দোয়া কবুল হয় এর মধ্যে রুকনে ইয়ামিন,হযরে আসওয়াদ, মাকামে ইব্রাহিম, হাতিমেকাবা, কা'বার দরজা, মিজাবে রহমত,জমজম কূপ এবং সাফা মারওয়াসহ আরো গুরুত্বপূর্ণ স্থান।

এছাড়া মক্কার আশপাশে ইসলামের নিদর্শনস্বরূপ ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান সমূহের মধ্যে রয়েছে : হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাড়ি, জান্নাতুল মুয়াল্লা, জাবালে নূর, জাবালে ছাওর, আরাফার ময়দান, জাবালে রহমত, মসজিদে নামিরা,মসজিদে মাশ'আরিল হারাম,মিনা,জামরাত , জ্বিন মসজিদ এবং মসজিদে খাইফ।

এবার হজের আলোচনা হজ কাকে বলে :

হজের আভিধানিক অর্থ হলো সংকল্প বা প্রতিজ্ঞা করা। আল্লাহ তা’আলার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে শরীয়ত-প্রদত্ত নিয়ম অনুসারে ইহরাম বাঁধার পর পবিত্র মক্কা মুকাররমায় উপস্থিত হয়ে নির্দিষ্ট তারিখ ও সময়ে বিশেষ কিছু কাজ করাকে হজ বলে। রদ্দুল মুহতার :৩/৫১৬ রশীদিয়া।

কার উপর হজ ফরজ

যার মালিকানায় নিত্যপ্রয়োজনীয় আসবাবপত্র এবং নিজের ও পরিবারের ভরণ-পোষণের খরচের অতিরিক্ত এই পরিমাণ টাকা-পয়সা বা সম্পত্তি আছে, যা দ্বারা হজে যাওয়া-আসার ব্যয় এবং হজকালীন সাংসারিক খরচ হয়ে যায়, তার উপর হজ করা ফরয। (আদ্দুরুল মুখতার মা‘আ রদ্দিল মুহতার ২/৪৫৮)

* নামাজের ওয়াক্ত হলে যেভাবে নামাজ সময়মতো আদায় করতে হয় ঠিক হজ যে বছর ফরয হয় সে বছরই তা আদায় করা ওয়াজিব। গ্রহণযোগ্য কোনো ওযর ছাড়া হজ বিলম্বিত করলে গুনাহ হবে। তবে পরবর্তীতে হজ আদায় করে নিলে এই গুনাহ মাফ হয়ে যাবে। (রদ্দুল মুহতার ৩/৫১৭ রশীদিয়া, কিতাবুল মাসাইল ৩/৭৬)

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ পাক বলেন 'আর তোমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে পরিপূর্ণভাবে হজ ও ওমরা পালন করো। (সূরা বাকারা আয়াত ১৯৬)

হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন যারা একাগ্রতার সাথে আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে হজ করবে এবং অশ্লীল কথাবার্তা ও পাপ কাজের সাথে সম্পৃক্ত না হয়ে হজের কার্যক্রম সম্পন্ন করবে সে ওই দিনের মতো নিষ্পাপ হয়ে হজ থেকে প্রত্যাবর্তন করবে যেদিন সে মায়ের গর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ হয়েছিল। সহীহ বুখারী ১৫২১ সহীহ মুসলিম ১৩৫০

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন তোমরা হজ ও ওমরা একটার পর অপরটা করো কেননা হজ ও ওমরাহ দারিদ্র বিমোচন ও গুনাহকে দূর করে দেয় সেভাবে, যেভাবে হাঁপরের আগুন লোহা, সোনা কিংবা রূপা থেকে ময়লা দূর করে দেয়। (তিরমিজি ৮১০)

হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন এক ওমরা থেকে আরেক ওমরার মধ্যবর্তী গুনাহের জন্য কাফফারা স্বরূপ। আর হজে মাবরুরের প্রতিদান শুধুই জান্নাত। (সহীহ বুখারী ১৭৭৩ সহীহ মুসলিম ১৩৪৯)

হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন হাজী যার জন্য ক্ষমা চায় তাকে মাফ করে দেয়া হয়। (সহীহ ইবনে খুজাইমা ২৫১৬)

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন কোন ব্যক্তির বাহ্যিক প্রয়োজন, অত্যাচারী বাদশা কিংবা মারাত্মক অসুস্থতা কারণে যদি হজে যাওয়ার প্রতিবন্ধকতা না হয় আর সে হজ না করেই মারা যায় ,তাহলে সে যেন ইহুদী-খ্রিস্টান হয়ে মরে । এতে আমি রাসুল তার প্রতি কোনো পরোয়া নেই। (সুনানে দারেমী ১৭৮৬)

হজের ধারাবাহিক প্রক্রিয়া

হজের জন্য এক নাম্বরে বিশুদ্ধ নিয়ত করতে হবে দুনিয়ার প্রতিপত্তি বা গুণবাচক লকব লাগানোর জন্য নয় বরং একমাত্র আল্লাহকে রাজি খুশি করার উদ্দেশ্যে নিয়ত করতে হবে।

প্রাক নিবন্ধন

প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য জন্ম নিবন্ধনের মাধ্যমে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত হজ এজেন্সির মাধ্যমে প্রাক নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হয়। জাতীয় হজ নীতির আলোকে প্রাক নিবন্ধন নম্বর চলতি বছরে হজে যাওয়ার জন্য নির্বাচিত হলে হজ যাত্রীর মোবাইলে এসএমএস দেয়া হবে। এসএমএস পাওয়ার পর ফাইনাল নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হবে এক্ষেত্রে হজ যাত্রীর ডিজিটাল পাসপোর্ট অবশ্যই এজেন্সিকে জমা দিতে হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হজ অফিস/সংশ্লিষ্ট এজেন্সি নিশ্চিত করলে পিলগ্রিম চওউ তৈরি হবে। সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করলে হজ যাত্রীদের মোবাইল নাম্বারে এসএমএস প্রেরণ করে পিআইডি নিশ্চিত করা হবে। হজে যাওয়ার জন্য পিলগ্রিম আইডি অত্যাবশ্যক।

হজ যাত্রীকে প্রদত্ত প্রাক নিবন্ধনের সিরিয়াল নাম্বার কোনভাবেই পরিবর্তনযোগ্য নয় হজে যাওয়ার প্রথম ধাপ প্রাক নিবন্ধন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তবে এক এজেন্সিতে নিবন্ধন করলেও অন্য এজেন্সিতে হস্তান্তর করে বাকি কার্যক্রম সম্পন্ন করা যাবে।

তওবা ও ঋণ পরিশোধ করা

হজে যাওয়ার পূর্বে আল্লাহর নিকট বিগত দিনের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে আগামীতে সর্বপ্রকার গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করতে হবে। পাওনাদারদের পাওনা পরিশোধ করে দিতে হবে এবং কারো মনে কষ্ট দিয়ে থাকলে তার কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে।

ভালো সফরসঙ্গী খুঁজে নেয়া

হজের মত একটি গুরুত্বপূর্ণ এবাদতের সফরে আপনি কার সফরসঙ্গী হচ্ছেন তা অবশ্যই আপনাকে যাচাই করে নিতে হবে। এটা কোন আনন্দ ভ্রমণ বা বিনোদনমূলক সফর নয় যে, কোন লোকের সাথে করলেই হয়ে গেল। আর এটা কোন দৈনন্দিন আমলের মতো এবাদত নয় যে নিয়মিত করা হয়। কারো জীবনের স্বপ্ন থাকে একবার হলেও মক্কা-মদিনায় জিয়ারত করা আর সেই লালিত স্বপ্নের বাস্তবায়ন হলো হজ বা ওমরা করা। তাই এ সফর এমন সাথীদের সাথে করতে হবে যিনি আপনার সফরের কাজে সহযোগিতা করতে পারেন এবং অসুস্থ হলে আপনার সেবা করতে পারেন।

হজের গুরুত্বপূর্ণ মাসায়েল

নামাজ রোজার মত হজ ও ওমরাতে ফরজ ওয়াজিব সুন্নত এবং নিষিদ্ধ কিছু কাজ রয়েছে যা আপনাকে অবশ্যই জেনে নিতে হবে। মনে রাখতে হবে যে এবাদত ফরজ তার এলেম অর্জন করা ফরজ, যে এবাদত ওয়াজিব তার এলেম অর্জন করাও ওয়াজিব,যে এবাদত সুন্নত তার তার এলেম অর্জন করাও সুন্নত। আপনি আগে একাদিকবার ওমরা করে থাকলেও হজের উদ্দেশ্যে আসলে সর্বপ্রথম আপনাকে অবশ্যই ওমরা করতেই হবে। তাই সংক্ষিপ্ত আকারে হজ ও ওমরার ফরজ ওয়াজিব ও সুন্নতসমূহ তুলে ধরা হলো।

* ওমরার ফরজ দুইটি

১. এহরাম বাঁধা ২. তাওয়াফ করা।

* ওমরার ওয়াজিব দুইটি

১. সাফা মারওয়ার মাঝে সায়ী করা

২. মাথার চুল ছাঁটা বা মুণ্ডানো

* হজের ফরজ তিনটি

১. হজের নিয়তে এহরাম বাঁধা।

২. ৯ জিলহজ আরাফার ময়দানে অবস্থান করা।

৩. তাওয়াফে জিয়ারা করা।

* হজের ওয়াজিব ছয়টি

১. মুজদালিফায় অবস্থান করা।

২. সাফা মারওয়ায় সাত বার সায়ী করা।

৩. মিনায় স্থিত জামারাতে কংকর নিক্ষেপ করা।

৪. হজে কিরাণ ও হজে তামাত্তু আদায় কারীর জন্য দমে শোকর বা কোরবানি করা।

৫. মাথার চুল ছাঁটা অথবা মুন্ডানো।

৬. মক্কার বাইরের লোকদের জন্য তাওয়াফে জিয়ারা করা।

দিনওয়ারী হজের কার্যক্রম

৮ জিলহজ

* মক্কা থেকে এহরাম বেঁধে জোহরের নামাজের পূর্বে মিনায় গমন করা সুন্নত।

* ৮ তারিখ যোহর থেকে ৯ তারিখ ফজর পর্যন্ত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মিনায় আদায় করা সুন্নত।

* মিনায় রাত যাপন করা সুন্নত।

৯ জিলহজ

* সূর্য উদয়ের পর আরাফার ময়দানে গমন করা সুন্নত।

* সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফার ময়দানে অবস্থান (কিছু সময়ের জন্য) ফরজ ।

* সূর্যাস্তের পর মাগরিবের নামাজ আদায় না করে মুজদালিফায় গমন করার সুন্নত।

* মুজদালিফায় এরশার ওয়াক্তে মাগরিব ও এশার নামাজ একত্রে আদায় করা ওয়াজিব।

*মুজদালিফায় রাত যাপন করা সুন্নত।

১০ জিলহজ

* সুবহে সাদিকের পর কিছু সময় মুজদালিফায় অবস্থান করা ওয়াজিব।

* সূর্য উদয়ের পূর্বে মিনার উদ্দেশ্যে রওনা করা সুন্নত।

*শুধুমাত্র ঐদিন বড় জামরায় কংকর নিক্ষেপ করা ওয়াজিব।

* কোরবানি বা দমে শুকুর আদায় করা ওয়াজিব।

* মাথার চুল ছোট বা মুন্ডানোর পর এহরাম থেকে হালাল হওয়া ওয়াজিব।

* তাওয়াফে জিয়ারা করা ফরজ।

* সায়ী করা ওয়াজিব।

* মিনায় এসে রাত যাপন করা সুন্নত।

১১ জিলহজ

* সূর্য ঢলার পর তিনজামরায় সাতটি করে মোট ২১ টি কংকর নিক্ষেপ করা ওয়াজিব।

* মিনায় রাত যাপন করা সুন্নত।

১২ জিলহজ

* সূর্য ঢলার পর তিনজামরায় সাতটি করে মোট ২১ টি কংকর নিক্ষেপ করা ওয়াজিব।

* সূর্যাস্তের পূর্বে মিনা ত্যাগ করা জায়েজ।

এহরাম অবস্থায় নিষিদ্ধ কাজসমূহ

১. খুশবু বা সুগন্ধি ব্যবহার করা

২. সুগন্ধিযুক্ত তেল বা সাবান ব্যবহার করা

৩. পুরুষের জন্য সেলাইযুক্ত কাপড় পরিধান করা

৪. পুরুষের মাথা ও পা আবৃত্ত রাখা ও মহিলাদের মাথা খোলা রাখা

৫. পায়ের পাতার উপরের হাড্ডি জুতা বা মোজা দ্বারা আবৃত্ত করা

৬. স্ত্রী সহবাস করা

৭. যৌন উত্তেজক আলোচনা করা

৮. পশুপাখি শিকার করা বা শিকারে সাহায্য করা।

৯. মাথা বা শরীর হতে উকুন অপসারণ বা নিধন করা

১০. শরীরের যে কোন অঙ্গের চুল কাটা ছেঁড়া বা পরিষ্কার করা

১১. হাত ও পায়ের নখ কাটা

১২. হারামের পশু পাখি শিকার করা বা তাদের কষ্ট দেয়া

১৩. হারামের এরিয়ার গাছপালা বা ঘাস কর্তন করা।

১৪. ঝগড়া বিবাদ ও গিবত শেকায়েতে লিপ্ত হওয়া এবং অন্যের মাল অনুমতি ব্যতীত ব্যবহার করা।

মহিলাদের ইহরাম সম্পর্কিত মাসায়েল

ইহরামের প্রস্তুতির জন্য পুরুষরা যা যা করে মহিলারাও সেগুলো করবে। পার্থক্য শুধু এতটুকু যে, গোসলের পর মহিলারা নিজেদের স্বাভাবিক কাপড় তথা ঢিলেঢালা ফুল হাতার কামিজ ও সেলোয়ার পরবে। এরপর এমন বোরকা পরবে যা চেহারা আবৃত করে । কারণ, পরপুরুষের সামনে চেহারা খোলা রাখা হারাম। (যে-সব মহিলা চেহারা খোলা রাখবে এবং যে-সব পুরুষ ইচ্ছাকৃত তাদের দিকে তাকাবে, তাদের গুনাহ হবে। ফলে তাদের ‘হজে মাবরুর’ নসীব হবে না।) কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে মুখ ঢাকার জন্য যে নেকাব পরা হবে, তা যেন চেহারায় লেগে না থাকে। সেজন্য আমাদের দেশে- বাইতুল মুকাররামসহ আরো অনেক জায়গায় ক্যাপের মত একটা জিনিষ পাওয়া যায়, দেখতে অনেকটা ২/৩ তারিখের চাঁদের মত সেটা পরে তার উপর দিয়ে নেকাব পরবে। তাহলে পর্দাও হয়ে যাবে আবার নেকাব চেহারার সাথে লেগেও থাকবে না। মহিলারা হজ বা উমরার নিয়তের পরে তালবিয়া পুরুষদের মতই তিনবার পড়বে, তবে উচ্চ স্বরে নয়, নিম্ন স্বরে। মহিলারা হায়েয-নেফাস অবস্থায়ও ইহরাম বাঁধতে পারবে। তবে তখন পরিচ্ছন্নতা অর্জনের জন্য গোসল করা ভালো। (মানাসিকে মোল্লা আলী কারী পৃ.৯০)

অনেকে মনে করেন যে, ইহরাম অবস্থায় মেয়েদের চেহারা খোলা রাখতে হয়। এটা মারাত্মক ভুল। এক ফরয আদায় করতে গিয়ে আরেক ফরয তরক করার শামিল। তাই আমরা যেভাবে চেহারা ঢাকার কথা বলেছি সেভাবে ঢাকতে হবে। অন্যথায় গুনাহ হবে।

নাবালেগের হজের হুকুম

নাবালেগ যদি পিতা-মাতা বা অন্য কারো সাথে হজ করে তাহলে তার এই হজ নফল বলে গণ্য হবে। বালেগ হওয়ার পর হজ ফরয হলে তাকে আবার হজ করতে হবে। অন্যথায় হজের ফরয আদায় হবে না। (রদ্দুল মুহতার ২/৪৬৬)

মদীনার উদ্দেশ্যে সফরের প্রস্তুতি

* গোসল করে সুন্নতী লেবাস পরিধান করবে। এবং সুগন্ধি ব্যবহার করবে।

* নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ত্তয়াসাল্লাম এর সুন্নাত অনুযায়ী জীবন গড়ার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করবে।

* দাড়ি না রেখে থাকলে এখন থেকে দাড়ি রাখার প্রতিজ্ঞা করবে। প্রত্যেকের চিন্তা করা উচিত, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ত্তয়াসাল্লাম যদি জীবিত অবস্থায় দাড়ি ছাড়া আমাকে দেখতেন, তাহলে আমার দিকে কোন দৃষ্টিতে তাকাতেন? তিনি কি দাড়ি ছাড়া আমাকে দেখে মোটেও খুশি হতে পারতেন। আর আমিও কি তাঁর অসন্তুষ্টির কাজ করতে সাহস পেতাম ?

* বেশি বেশি দুরূদ শরীফ পড়তে থাকবে। মদীনা সফরে দুরূদ শরীফই একমাত্র ওযীফা। মদীনার যত নিকটবর্তী হতে থাকবে দুরূদ পাঠের পরিমাণ তত বাড়িয়ে দিবে।

দুই রাকা’আত নামায পড়ে আল্লাহর কাছে দু’আ করবে, হে আল্লাহ! আমার জন্য মদীনায় প্রবেশ বরকতপূর্ণ করুন, আমাকে সবধরণের বে-আদবী থেকে হেফাযত করুন, আমাকে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ত্তয়াসাল্লাম এর পূর্ণাঙ্গ ফয়য ও বারাকাত দান করুন। এরপর মদীনার সফর শুরু করুন।

মদীনায় উপস্থিত হওয়ার পর করণীয়

প্রথমে মদীনার বাসায় গিয়ে মাল-সামান গুছিয়ে রেখে গোসল করবে এবং নতুন কিংবা পরিষ্কার পোষাক পরিধান করবে। সাদা কাপড় পরিধান করা উত্তম। খোশবু ব্যবহার করবে। খাওয়ার প্রয়োজন হলে খেয়ে নিবে। এরপর ধীরে-সুস্থে মহব্বত, ভক্তি ও শ্রদ্ধা নিয়ে মসজিদে নববীর উদ্দেশ্যে রওনা করবে।

মসজিদে নববীর ফজিলত

সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিম এর বর্ণনা অনুযায়ী মসজিদে নববীতে এক রাকা’আত নামায পড়া মসজিদে হারাম ব্যতীত অন্য মসজিদে এক হাজার রাকা’আত নামায পড়ার চেয়ে উত্তম। সহীহ বুখারী হা. নং ১১৯০, সহীহ মুসলিম হা.নং১২৯৪

সুনানে ইবনে মাজাহ-এর এক হাদীসে আছে, মসজিদে নববীতে এক রাকাদআতে পঞ্চাশ হাজার রাকাদআতের সাওয়াব পাওয়া যায়। সুনানে ইবনে মাজাহ হা.নং ১৪১৩

মসজিদে নববীতে প্রবেশ

মসজিদে নববীতে প্রবেশের সময় খুব গুরুত্বের সাথে মসজিদে প্রবেশের সুন্নাতগুলি আদায় করবে। খেয়াল রাখবে সুন্নাতওয়ালার দরবারে এসে যেন কোনো কাজ সুন্নাতের পরিপন্থী না হয়। মসজিদে প্রবেশের পর সম্ভব হলে এবং মাকরূহ ওয়াক্ত না হলে রিয়াযুল জান্নাতে দুই রাকা’আত তাহিয়্যাতুল মসজিদ পড়বে। ফরয নামাযের সময় হয়ে থাকলে আগে ফরয পড়ে নেবে।

রিয়াযুল জান্নাত

আবূ হুরাইরা (রাঃ) বলেন নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ত্তয়াসাল্লাম বলেছেন,‘ আমার ঘর ও মেম্বারের মধ্যবর্তী স্থান জান্নাতের বাগানসমূহের মধ্য থেকে একটি বাগান, আর আমার মিম্বার আমার হাউয (কাউসার) এর উপর।’ বুখারী হা.নং ১১৯৬

মদীনায় দ্বিগুণ বরকত

হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ত্তয়াসাল্লাম মদীনার জন্য এই বলে দু’আ করেছেন, ‘হে আল্লাহ! মক্কায় তুমি যে বরকত দান করেছ মদীনায় তার দ্বিগুণ দান কর।’ বুখারী ১/২৫৩

মদীনায় প্লেগ ও দাজ্জাল প্রবেশ করতে পারবে না

হযরত আবূ হুরাইরা (রাঃ) বলেন, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ত্তয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘মদীনার প্রবেশ পথসমূহে ফেরেশতাগণ পাহারায় রয়েছেন, তাই প্লেগ (সংক্রামক মহামারি) ও দাজ্জাল মদীনায় প্রবেশ করতে পারবে না।’ বুখারী ১/২৫২

মদিনায় দর্শনীয় স্থান হচ্ছে ওহুদের ময়দান, খন্দকের ময়দান,হামজা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুর কবর,মসজিদে কেবলাতাইন, মসজিদে কোবা, মসজিদে গামামা, জান্নাতুল বাকী, মসজিদে বেলাল ,মসজিদ আবু বকর ইত্যাদি।

উল্লেখ্য, এখানে শুধুমাত্র হজ এবং ওমরার বিষয়ে মৌলিক মাসায়েল এবং সংক্ষিপ্ত ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। বাকি প্রত্যেকটা বিষয়ের উপরে সুন্নত ও মোস্তাহাব এর দীর্ঘ আলোচোনা ও মক্কা মদিনার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে যা বিজ্ঞ ওলামায়ে কেরাম অথবা হজে অভিজ্ঞ দ্বীনদার কোন ব্যক্তির কাছেও যেনে নিতে পারবেন।

হজে আসার প্রাক্কালে একজন হাজীর, যে আবেগ একাগ্রতা বা এবাদতের প্রতি মনোনিবেশ থাকে তা অনেক ক্ষেত্রে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের হাজীদের সাথে আলাপ আলোচনার পর নষ্ট হয়ে যায়। এর মূল কারণ হলো তিনটি বাক্য :

১. কত টাকা দিয়ে আসছেন ২. হোটেল কোথায় ৩. খাবার কী দেয়?

যখন দেখে তার সাথে হোটেলের গরমিল, টাকার গরমিল, খাওয়ার গরমিল তখনই শুরু হয় সমালোচনা ও বকাঝকা, যা একজন হাজির হজে মাবরুর নসিব হওয়ার ক্ষেত্রে প্রধান অন্তরায়। তাই আমার অনুরোধ থাকবে হজে আসার আগেই হজ এজেন্সি এবং এজেন্সির দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের সম্পর্কে ভালোভাবে জেনেশুনে হজে আসা উচিত। হজের মুয়াল্লেম বা আমির কে হবেন তাও জানা প্রয়োজন। যদি একজন অভিজ্ঞ পরহেজগার আলেম অথবা দ্বীনদার অভিজ্ঞ ব্যক্তি না হন তাহলেও হজের কার্যক্রমের ক্ষেত্রে যথেষ্ট ব্যঘাত ঘটবে। তাই দেশের কোন হাজীর সাথে সাক্ষাৎ হলে এ সমস্ত বিতর্কিত বিষয়ে কথা না বলে আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করা। যেভাবেই হোক আল্লাহ আমাকে তার মেহমান হিসেবে তার ঘরে নিয়ে আসছেন এটাই আমার জন্য বড় প্রাপ্তি।

আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহর কাছে শোকরিয়া আল কারিম হজ কাফেলার মাধ্যমে আমরা হজের সফরে এসেছি। আমাদের সাথে কথা এবং কাজ অনুযায়ী আমরা শতভাগ এখানে পেয়েছি এবং কাফেলার কোন লোকের কোন অভিযোগ নেই। তবে কিছু কিছু বিষয় আছে তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে সৌদি সরকারের এখতিয়ারের উপর নির্ভর করে, সে ক্ষেত্রে অনেক সুবিধা অসুবিধা হলে এজেন্সি কর্তৃপক্ষের দুর্বলতা বা অবহেলা মনে করা যাবে না।

সারা বিশ্ব থেকে কোটি কোটি মুসলমানের মধ্যে কিছু সংখ্যক ব্যক্তিকে আল্লাহপাক হজের উদ্দেশ্যে পবিত্র মক্কা মদিনা জিয়ারতের জন্য কবুল করেছেন। আমি গোনাহ্ গারও প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ থেকে বিশ্ব মুসলিম উম্মার সম্প্রীতির প্রতীক বায়তুল্লাহ'তে এ ফরজ বিধান আদায়ের লক্ষ্যে এক হতে পেরে মহান মালিকের দরবারে অসংখ্য শুকরিয়া আদায় করছি।

এ স্থান শুধু সম্প্রীতির জায়গায়ই নয় বরং প্রত্যাশা পূরণের শ্রেষ্ঠ ই'দ্বারা। তাই হজে আসার প্রাক্কালে যারা যেখান থেকে যে আবেদন করেছেন দোয়া চেয়েছেন সকলের প্রত্যাশা আল্লাহ পূরণ করুন এই দোয়া করি দেশবাসীর জন্য খাছ করে দোয়া করি, দেশের স্থায়ী শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য দোয়া করি, আর বিশেষ করে আমি দোয়া চাই আল্লাহ পাক যেন হজের সকল কার্যক্রম সহজ করে দেন, কবুল করে নেন, হজে মাবরুর নসিব করেন।

শেখ মুহাঃ জয়নাল আবদিন : সভাপতি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চাঁদপুর জেলা শাখা। ০১৮১৯-০৭৪২৭৫

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়