বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৪  |   ২১ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কচুয়ায় ওসির অপসারণের দাবিতে সড়ক অবরোধ
  •   ভারত-মিয়ানমার থেকে ৮৯৮ কোটি টাকার চাল কিনবে সরকার
  •   মেয়াদোত্তীর্ণ বীজ ও কীটনাশক পাওয়ায় দুই প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা
  •   মশার উপদ্রবে চাঁদপুর পৌরবাসী ॥ বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী
  •   শাহরাস্তিতে সিএনজি অটোরিকশা মালিক ও চালকদের সাথে পুলিশের মতবিনিময়

প্রকাশ : ০৫ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০

ইতেকাফ অবস্থায় করণীয় ও বর্জণীয়

আবদুল্লাহ আল কাফি
ইতেকাফ অবস্থায় করণীয় ও বর্জণীয়

ইতিকাফ শব্দটি আরবি। যার অর্থ অবস্থান করা, স্থির থাকা, নিজেকে কোনো স্থানে আবদ্ধ রাখা ইত্যাদি। শরিয়তের পরিভাষায়, আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি হাসিলের জন্য জাগতিক কাজকর্ম ও পরিবার-পরিজন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ২০ রমজানের সূর্য অস্ত যাওয়ার পূর্ব মুহূর্ত থেকে শাওয়াল মাসের চাঁদ ওঠা পর্যন্ত মসজিদে অবস্থান করাকে ইতেকাফ বলে। যা মুসলমানদের জন্য সুন্নাতে মুয়াক্কাদা কিফায়া। জামে মসজিদের অধিভুক্ত গ্ৰাম বা মহল্লাবাসীর পক্ষে কোনো একজন কিংবা একাধিক ব্যক্তি ইতেকাফ করলে তা সবার পক্ষ থেকে আদায় করা হয়ে যাবে।রমজান মাসের শেষ ১০ দিন ইতেকাফ করার অনেক গুরুত্ব ও মর্যাদা রয়েছে। বরকতপূর্ণ রাত লাইলাতুল কদর প্রাপ্তি, গুনাহ মুক্ত জীবন গঠন, সংগোপনে মহান রবের ইবাদত, আত্মিক উন্নতি সাধন করা। জীবনের অপ্রাপ্তি গুলো রবের দরবারে উপস্থাপন করা। ইবনে উমার (রাঃ) বর্ণনা করেন,'রমজানের শেষ দশকে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইতেকাফ করতেন। (মুসলিম, হাদিস নং : ১১৭১)

আবু হুরায়রা (রাঃ) বর্ণনা করেন,'প্রতি রমজানের ১০ দিন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইতেকাফ করেন।' (বুখারী, হাদিস নং:১৯০৩) আয়শা (রাঃ) বলেন,'যখন রমজানের শেষ দশকে আগমন করত রাসূল (সাঃ) তাঁর কোমর বেঁধে ইবাদত করতেন,রাত জাগতেন আর তাঁর পরিবারের সদস্যদের ও জানাতেন।' (ইবনে খুজাইমা)

ইতেকাফ অবস্থায় যা করণীয় :

১. অধিক পরিমাণে নফল নামাজ আদায় করা।

২. পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করা।

৩. জিকির আজকার করা।

৪. দোয়া করা।

৫. ইস্তেগফার ও হাদিসে বর্ণিত সকাল-সন্ধ্যার দোয়াগুলো পাঠ করা।

৬. বিশেষ করে কদরের রাত্রিগুলোতে অর্থাৎ বিজোড় রাত্রিগুলোকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে সব ধরনের নফল আমল করার চেষ্টা করা।

৭. কুরআনুল কারীম বেশি বেশি পাঠ করা।

ইতেকাফ অবস্থায় যা বর্জণীয় :

১. চুপচাপ বসে থাকা।

২. গীবত বা পরনিন্দা করা।

৩. জিনিসপত্র মসজিদে এনে বেচাকেনা করা।

৪.ঝগড়া করা।

৫. অনর্থক কথাবার্তা বলা।

৬. অপ্রয়োজনীয় গল্প জুড়ে দেওয়া।

ইতেকাফ অবস্থায় যেসব কাজ বৈধ :

১. মসজিদে আহার করা।

২. পেশাব-পায়খানার জন্য বাইরে যাওয়া।

৩. আজান দেওয়া জন্য বাইরে যাওয়া।

৪. গোসলের জন্য বাইরে যাওয়া।

৫. জুমার নামাজের জন্য এতটুকু সময় নিয়ে বের হওয়া যাতে নিকটবর্তী জামে মসজিদে গিয়ে খুতবার পূর্বে ২/৪ রাকাত সুন্নাত আদায় করা যায়।

যেসব কারণে ইতেকাফ ভেঙে যায় :

১. ওজর বশত বের হয়ে প্রয়োজনের অতিরিক্ত বিলম্ব করা।

২. বিনা কারণে মসজিদের বাহিরে যাওয়া।

৩. স্ত্রী সহবাস করা।

৪. ভয়ের কারণে মসজিদ থেকে বের হয়ে যাওয়া।

ইতেকাফ বিশুদ্ধ হওয়ার শর্তাবলী হলো, মুসলিম হওয়া, বোধশক্তিসম্পন্ন হওয়া, হায়িজ-নিফাস থেকে পবিত্র থাকা।

বান্দার নিকট লাইলাতুল কদর প্রাপ্তি ও এ রাতের ঘোষিত ফজিলত লাভে ইতেকাফের চেয়ে উত্তম কোনো আমল নেই। তাই এই সুযোগকে মূল্যায়ন করে যথাযথ কল্যাণ লাভের চেষ্টা করা উচিত।

লেখক : আবদুল্লাহ আল কাফি, শিক্ষার্থী, দাওয়াহ অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ।

সদস্য, বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম। ইমেইল : [email protected]

মোবাইল ফোন : ০১৯৭৫০৮৫২৯০

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়