শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২১ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।
  •   রাষ্ট্রীয় পদে আসীন হচ্ছেন খবরে আসামিপক্ষে শুনানি করলেন না সমাজী।

প্রকাশ : ১২ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০

ইসলামে ঈদে মিলাদুন্নবী ও জশনে জুলুস উদযাপনের গুরুত্ব-তাৎপর্য
মাওলানা মুহাম্মদ বোরহান উদ্দীন কাদেরী

আল্লাহর নামে শুরু করছি,যিনি পরম দয়ালু ও করুনাময় এবং সকল প্রশংসা মহান রব তাঁরই জন্য। আর অসংখ্য দরূদ ও সালামের নাজরানা পেশ করছি সৃষ্টি কুলের সর্দার দু’জাহানের বাদশা নবী রাহমাতুল্লীল আলামীনের দরবারে। যাঁর পবিত্র বেলাদত বা শুভাগমন ঘটে ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দে ১২ই রবিউল আউয়াল সোমবার মা আমেনা ও হযরত বাবা আব্দুল্লাহর কোলে। যিনি সমস্ত সৃষ্টির জন্য রহমত হিসেবে এ ধরাবুকে শুভাগমন করেছেন বলে এই মাস ও দিন অত্যন্ত গুরুত্ববহ, ফজিলতময়। এই কারণেই প্রিয় নবীর পবিত্র বেলাদত শরীফে আনন্দ ও খুশি সমগ্র সৃষ্টিকুল। বিশেষ করে বিশ্ব মুমিন মুসলিম।

এ মাস ও দিনে জশনে জুলুসসহ শোভাযাত্রা, মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামার শান-মান সর্ম্পর্কীয় আলোচনা সভা, সেমিনার, দান-সাদকাহ, খয়রাত এবং জাক-জমকপূর্ণ আয়োজন করে দরূদ শরীফ পাঠ, দোয়া-মুনাজাত, হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামার শুভাগমনের সময়কার অলৌকিক ঘটনাবলী ও কল্যাণদির ছড়াছড়িত্বের বিবরণ দেয়া, প্রিয়নবীর হাকিকত ও মর্যাদা , আদর্শ এবং বরকতময় জীবনী আলোচনা ইত্যাদির মাধ্যমে পবিত্র ঈদ-এ- মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উদযাপন করা হয়। বস্তুত এই ধরণের আয়োজনের পক্ষে পবিত্র কুরআন, হাদিস, সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ), পূর্ববর্তী ইমামগণ এবং বিজ্ঞ আলেম সামজের রয়েছে পূর্ণ সমর্থন। নির্ভরযোগ্য দলীলাদির ভিত্তিতে পবিত্র ঈদ-এ-মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উদযাপনের তাৎপর্য আলোকপাত করার প্রয়াস পাচ্ছি।

পবিত্র ঈদ-এ-মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উদযাপন প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনুল হাকীমের অসংখ্য আয়াতে কারীমায় মহান আল্লাহ পাক নির্দেশনা ও নির্দেশ প্রদান করেছেন। যেমন ইরশাদ করেছেন- হে নবী আপনি বলে দিন, আল্লাহর অনুগ্রহ ও রহমতের উপর খুশী পালন কর; যা তোমাদের সমস্ত ধন-দৌলত অপেক্ষা শ্রেয়। এই আয়াতে আল্লাহ তাআলা মুসলমানগণকে তাঁর ফজল ও রহমত প্রাপ্তির উপর খুশী পালন করার হুকুম বা নির্দেশ দিয়েছেন। (সূরা- ইউনুস, আয়াত নং- ৫৮)

অন্য আয়াতে ইরশাদ করেছেন:-এবং যদি তোমাদের উপর আল্লাহর রহমত ও দয়া না হত তাহলে তোমাদের মুষ্টিমেয় ছাড়া অন্যরা সবাই শয়তানের অনুসরণ করতে । (সূরা নিসা, আয়াত- ৮৩) তাফসীরের ইমাম তথা মুফাসসিরিনে কেরামগণ এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেছেন- এ আয়াতে আল্লাহর রহমত এবং দয়া একসাথে উল্লেখ করেছেন। এখানে বা রহমত দ্বারা মূলত হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বুঝানো হয়েছে। আর মুসলমানদেরকে আল্লাহ পাক সম্বোধন করে এরশাদ করেছেন-‘যদি প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামার আগমন না হতো, তাহলে তোমাদের অধিকাংশই গোমরাহ হয়ে যেতে। ফলে তারা শয়তানের অনুগত হয়ে ধ্বংস হয়ে যেত।

নবীজি রহমত হওয়া সম্পর্কে কুরআনে পাকের ঘোষণা - হে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমি আপনাকে সমগ্র জাহানের জন্য একমাত্র রহমত হিসাবে প্রেরণ করেছি। (সূরা- আম্বিয়া, আয়াত নং- ১০৭)

অর্থাৎ রসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামার শুভাগমন সমগ্র বিশ্বের মানব-দানব ও মুমিনের জন্য সবচাইতে বড় নেয়ামত ও দয়া।

আর আল্লাহ পাক তাঁর রহমত ও দয়া প্রাপ্তিতে শুকরিয়া করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন- তোমরা আমাকে স্মরণ কর আমি তোমাদের স্মরণ করব আর আমার (নেয়ামতের) শুকরিয়া আদায় কর এবং আমার নেয়ামতের অস্বীকার কর না। (সূরা- বাকারা, আয়াত নং- ১৫২)

তাই আল্লাহর অনুগ্রহ ও রহমতের জন্য যারা আনন্দ প্রকাশ করে আল্লাহ ঈমানদারদের শ্রমফল বিনষ্ট করেন না।

তাছাড়া সামান্য নেয়ামত লাভ করলেও তার জন্য ঈদ বা আনন্দোৎসব করার দৃষ্টান্ত আমরা কুরআনে পাকেও দেখতে পাই। যেমন ইরশাদ হচ্ছে- ‘ঈসা ইবনে মরিয়াম আলাইহিস সালাম বললেন, হে আল্লাহ, হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের জন্য আকাশ থেকে খাদ্য ভর্তি খাঞ্ছা নাযিল করুন, যা আমাদের পূর্ববর্তী ও আমাদের পরবর্তী সকলের জন্য ঈদ তথা আনন্দ (উৎসবের কারণ) হবে। আর আপনার পক্ষ থেকে অন্যতম নিদর্শন এবং আপনিতো সর্বোত্তম জীবিকা দাতা। (সূরা- মায়েদা-১১৪)

এই আয়াতে পাক হতে প্রতীয়মান হয় যে, হযরত ঈসা আলাইহিস সালামের যুগে আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে খাঞ্ছা ভরা আসমান থেকে খাদ্য আসলে, তা যদি হযরত ঈসা আলাইহিস সালামের ভাষায় সৃষ্টির আদি হতে অন্ত পর্যন্ত সকলের জন্য ঈদ তথা আনন্দ উৎসবের উসিলা ও আল্লাহর নিদর্শন হয়। তাহলে আকা মাওলা রাহমাতুল্লীল আলামীন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামার

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়