শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২১ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।
  •   রাষ্ট্রীয় পদে আসীন হচ্ছেন খবরে আসামিপক্ষে শুনানি করলেন না সমাজী।

প্রকাশ : ১৩ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

মৃত্যু নিয়ে ভাবনা
অনলাইন ডেস্ক

মৃত্যু কতই না যন্ত্রণাদায়ক। সবার জন্য অনিবার্য একটি বাস্তবতা। ভাবলেই গাঁ শিউরে ওঠে। প্রায় প্রতিদিনই জানাজা আসে মাদ্রাসায়। ফজরের পর জানাজা পড়লাম। যোহরের পর আরেক জানাজা। এভাবেই একের পর এক সবাই নিজ ঠিকানায় চলে যাচ্ছে। ইচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায়। কেউ সৎকর্ম করে রবের সান্নিধ্য লাভ করছে। কেউ মন্দ কাজ করে আজাবের উপযুক্ত হচ্ছে। কারো মৃত্যুতে আত্মা শান্তি পায়। কারো মৃত্যুতে দুনিয়াবাসী স্বস্থি লাভ করে। এটি ব্যাক্তিগত বুলি নয়। হাদিস।

"একবার রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর পাশ দিয়ে একটি জানাযা নিয়ে যাওয়া হলো। তিনি বললেন, সে সুখী অথবা অন্য লোকেরা তার থেকে শান্তি লাভকারী।

লোকেরা জিজ্ঞেস করলো, হে আল্লাহ্র রাসূল! ‘মুস্তারিহ’ ও 'মুস্তারাহ মিনহু’-এর অর্থ কি? তিনি বললেনঃ মু’মিন বান্দা দুনিয়ার কষ্ট ও যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেয়ে আল্লাহ্র রহমতের দিকে পৌঁছে শান্তি প্রাপ্ত হয়। আর গুনাহগার বান্দার আচার-আচরণ থেকে সকল মানুষ, শহর-বন্দর, বৃক্ষলতা ও জীবজন্তু শান্তিপ্রাপ্ত হয়।" - সহীহ বুখারী ৬৫১২।

একবার চিন্তা করুন তো। যদি আজ এই মুহূর্তে আমার ডাক চলে আসে, আমি কি পরকালের জন্য প্রস্তুত? আমার নেক-আমল কি পর্যাপ্ত? আমর রব কি আমার উপর সন্তুষ্ট? মনে হয় না। হ্যাঁ, এভাবেই একদিন অপ্রস্তুত অবস্থায় আজরাইল চলে আসবে। সব অহংকার ও দাপট চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে যাবে। যে দুনিয়াকে নিজের চূড়ান্ত লক্ষ্য বানিয়ে ফেলেছিলাম, তা থেকে চিরবিদায় নিতে হবে।

আল্লাহর শপথ! শয়তান মৃত্যু সম্পর্কে আমাদের উদাসীন করে রেখেছে। ক্রিকেট-ফুটবলের উন্মাদনায় ডুবিয়ে রেখেছে। সে জানে, মৃত্যুর স্মরণ মানুষকে আল্লাহভীরু বানিয়ে দেয়। গুনাহ ছাড়তে উদ্বুদ্ধ করে।

নেক কাজের অনুপ্রেরণা যোগায়। তাই শয়তান আমাদের দীর্ঘ আশা দিয়ে রেখেছে, মৃত্যু বহু দূরে। তুমি এখনো যুবক। তুমি তোমার খেয়াল-খুশি মতো চলো। ফুর্তি করো। এখনি তো সময়।

আল্লার পানাহ! না, কখনো নয়। এটা শয়তানের প্রবঞ্চনা মাত্র। তুমি দেখো, কত নওজোয়ান এক্সিডেন্টে মারা যাচ্ছে। কেউ হার্ট অ্যাটাক করে বিদায় নিচ্ছে। প্রবাস থেকে কত যুবকের লাশ আসছে। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কত তরুণ নিহত হচ্ছে। নিহত ব্যাক্তিও জানে না, ঠিক কী কারণে তাকে হত্যা করা হচ্ছে। এ তো কিয়ামতের একটি নিদর্শন, যা নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের জানিয়ে গেছেন।

প্রিয় পাঠক! একটু থামুন। গভীর চিন্তা করুন। ভাবুন। যখন মারা যাব, কী নিয়ে যাব। এখন কী করা দরকার। কীভাবে চললে মৃত্যু আমাকে পৌঁছে দিবে অনাবিল সুখণ্ডশান্তিতে। কোন পথে হাঁটলে মৃত্যু হবে আমার জন্য আশীর্বাদ। আমার থাকবে না কোন ভয়। না কোন চিন্তা বা পেরেশানি।

মৃত্যু নিয়ে উদ্বেগের কোন কারণ নেই। ঈমান ও আমলের সাথে চললে মৃত্যু সহজভাবেই হবে। হাদিসে কুদসীতে এসেছে, আল্লাহ তাআলা বলেন, "আমি কোন কাজ করতে চাইলে তাতে সংকোচ বোধ করি না, যতটা সংকোচ বোধ করি মুমীনের জান কবজের ক্ষেত্রে। সে মৃত্যুকে অপছন্দ করে আর আমিও তাকে কষ্ট দিতে অপছন্দ করি।"- সহীহ বুখারী ৬০৫২

আল্লাহর শপথ! এভাবে চলতে থাকলে সে দিন আপনার কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হবেন। নামাজ না পড়ার কারণে আফসোস করবেন।

দীনের পথে না চলার কারণে আক্ষেপ করবেন। এ আক্ষেপ ও অনুতাপ সেদিন কোন কাজে আসবে না। অনুতাপ করার এখনই প্রকৃত সময়। ফিরে আসুন, আপনার রবের দিকে। আঁকড়ে ধরুন তাঁর দীনকে।

আরবী প্রবাদ আছে, ওয়াজের জন্য মৃত্যুর স্মরণই যথেষ্ট। রাসূলে আরাবী (সা.) আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন,

"তোমরা সকল স্বাদ বিনষ্টকারী মৃত্যুকে অধিক পরিমাণে স্মরণ করো।"- তিরমিযী -২৩০৭।

তাই আসুন, মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি নেই। নেক আমলের পাল্লা ভারী করি। অসৎ কর্ম থেকে ফিরে আসি।

জ্ঞানীদের বুঝাতে হয় না। তারা বুঝে নেয়।

লেখক : এম কাউছার হামিদ, শিক্ষার্থী, ফতোয়া ও গবেষণা বিভাগ, জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়া, যাত্রাবাড়ী।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়