শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২২ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ২৮ অক্টোবর ২০২২, ০০:০০

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
অনলাইন ডেস্ক

"ইয়া নবী সালাম আলাইকা

ইয়া রাসূল সালাম আলাইকা,

ইয়া হাবিব সালাম আলাইকা

সালাওয়াতুল্লাহ আলাইকা"।

৫৭০ খ্রিস্টাব্দের ১২ রবিউল আউয়াল সোমবার সুবহে সাদিকের সময় মানবতার মুক্তিদূত প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ পৃথিবীতে শুভাগমনের আনন্দকেই ‘ঈদে মিলাদুন্নবী’ বলা হয়। যাঁর নূরের আলোয় সারা পৃথিবী আলোকিত হয়েছিল। তাঁর ওপরই নাজিল হয়েছে আসমানি গ্রন্থ আল কোরআন। তিনি এসেছেন আল্লাহর পক্ষ থেকে হেদায়েতের আলো হয়ে। হজরত ইরবাদ ইবনে সারিয়াহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তখন থেকে আমি আল্লাহর প্রিয় বান্দা ও নবীকুলের সর্বশেষ নবী, যখন আদম (আঃ) মাটির সঙ্গে মিশ্রিত ছিলেন। আমি তোমাদের আরও জানাচ্ছি যে, আমি হাবিব আমার পিতা নবী হজরত ইবরাহিম (আঃ)-এর দোয়ার ফসল এবং নাবী হজরত ঈসা (আঃ)-এর সুসংবাদ, আর আমার মাতা (আমিনার) স্বপ্ন। নবীদের মাতাগণ এভাবেই স্বপ্ন দেখতেন।

রাসুল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লামের মাতা তাঁকে প্রসবের সময় এমন এক নূর প্রকাশ পেতে দেখলেন যার আলোয় সিরিয়ার প্রাসাদগুলো দেখা যাচ্ছিল। (ইবনু হিব্বান আস সহিহ-৬৪০৪, আল মুসতাদরাক -৩৫৬৬,তাবারানি)। রাসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লামের আগমনের উৎসব পবিত্র আল কোরআন দ্বারা স্বীকৃত। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হে রাসূল! আপনি বলুন, তোমরা আল্লাহর অনুগ্রহ এবং তাঁর দয়াপ্রাপ্ত হয়ে আনন্দ প্রকাশ কর। এটি উত্তম সে সমুদয় থেকে যা তারা সঞ্চয় করেছে।’ (সূরা ইউনুস, আয়াত ৫৮)। হজরত ইবনে আব্বাস (রাঃ)-এর মতে এখানে ফজল ও রহমত দ্বারা রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুভাগমন উদ্দেশ্য।

রাসুল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি সোমবার রোজা পালনের মাধ্যমে মিলাদুন্নবী পালন করতেন। হজরত কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে সোমবার দিন রোজা পালন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে, তিনি উত্তরে বললেন, ‘এই দিনে আমি জন্মগ্রহণ করেছি এবং এই দিনে আমার প্রতি কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে।’ (মুসলিম -১১৬২)। মনে প্রশ্ন জাগতে পারে হাদিসে কি মিলাদুন্নবীর কথা আছে? জি, আমরা দেখতে পাই তিরমিজি দ্বিতীয় খন্ডে ২০৩ পৃষ্ঠায় মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামে একটি অধ্যায়ই রয়েছে। অনুরূপভাবে ইমাম বায়হাকি (রহ.)-এর দালায়েলুন নবুওয়াত প্রথম খন্ডের ৪৯ পৃষ্ঠায় ফি মিলাদে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম শীর্ষক একটি অধ্যায় ও রয়েছে। সাহাবিরাও মিলাদুন্নবী উদযাপন করেছেন। হজরত আবু দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একদা তিনি রাসুল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে হজরত আমির আনসারি (রাঃ)-এর ঘরে উপস্থিত হয়ে দেখতে পেলেন, তিনি রাসুল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিলাদত উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করে সন্তানাদি এবং আত্মীয়স্বজন, জ্ঞাতি-গোষ্ঠী, পাড়া-প্রতিবেশীদের নিয়ে রাসুল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লামের আগমনের ঘটনাগুলো শোনাচ্ছেন এবং বলছেন এই দিবস এই দিবস অর্থাৎ এই দিবসে রাসুল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম জমিনে তাশরিফ এনেছেন এবং ইত্যাদি ইত্যাদি ঘটেছে। তখন রাসুল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুনে খুশি হয়ে বললেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা তোমার জন্য রহমতের দরজা খুলে দিয়েছেন এবং সকল ফেরেশতা ক্ষমা প্রার্থনা করছেন এবং যে কেউ তোমার মতো এরূপ কাজ করবে, সেও নাজাত লাভ করবে। (আত তানবির ফি মাওলিদিল বাশির ওয়ান নাজির, সুবুলুল হুদা ফি মাওলিদিল মুস্তফা (সা.); জালালুদ্দিন সুয়ুতি, হাকিকতে মুহাম্মদী মিলাদে আহমদী)

তাই আসুন, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উপলক্ষে আমরা পবিত্র কুরআন তিলাওয়াত করি, পবিরারের জন্য উত্তম খাবারের ব্যবস্থা করি, মিলাদ মাহফিল, জশনে জুলুস, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবনী ও সুন্নাতের আলোচনা অনুস্বরণের মাধ্যমে আমরা আমাদের জীবনকে রাসূলের পথে পরিচালিত করি, বিশ্বের বুক থেকে সকল অনাচার পাপাচার বিদুরিত হয়ে প্রিয় নবীজির আগমনের উসিলায় আসুক.. শান্তির সুবাস।

মহান আল্লাহ তায়ালা সকলকে কবুল করুন,আমিন।

লেখক : বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ ইমাম খতিব, ইসলামি স্কলার, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, আরবি প্রভাষক, আউশপাড়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদরাসা লাকসাম, কুমিল্লা। খতিব, মনিপুর বায়তুল আশরাফ (মাইকওয়ালা) জামে মসজিদ মিরপুর-২ ঢাকা।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়