শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২০ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।
  •   রাষ্ট্রীয় পদে আসীন হচ্ছেন খবরে আসামিপক্ষে শুনানি করলেন না সমাজী।

প্রকাশ : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০০:০০

মাসবুকের নামাজ আদায়ের নিয়ম
মুফতি মুহাঃ আবু বকর বিন ফারুক

ইসলামে পঞ্চম রুকুর মধ্যে দ্বিতীয় নামাজ। নামাজে জামাত আদায়ের ক্ষেত্রে অনেক সময় জামাতে এক রাকয়াত বা কয়েক রাকাত না পাওয়ায় নামাজ কীভাবে পড়বো সে বিষয়টুকু আমাদের জানা জরুরি। জামায়াতে এক রাকয়াত বা কয়েক রাকয়াত না পেয়ে জামাতে শরীক হওয়া হলো মাসবুকের নামাজ। এ বিষয়ে আলমগীরী কিতাবে এসেছে, ইমামের এক রাকয়াত পড়ার পর যে কোনো রাকয়াতে বা শেষ বৈঠকে নামাজে দাখিল হইলে তাহাকে মাসবুক বলে।

তরিকুল ইসলাম, আলমগীরী ও অন্যান্য কিতাব হইতে মাসবুকের নামাজ সম্পর্কে কতক মাসয়ালা তুলে ধরা হলো।

১। ইমাম যখন সজোরে কিরাত পড়ে, এমতাবস্থায় নামাজে দাখিল হইলে মাসবুক মুক্তাদী ছানা পড়িবে না। যদি সে বধির (কানে না শোনে) হয় কিংবা ইমাম হইতে দূরে থাকার দরুণ কিরাত শুনিতে না পায় তবুও ছানা পড়িবে না, ইহাই ছহীহ। যদি ইমাম চুপে কিরাত পড়ে তাহা হইলে ছানা পড়িয়া লইবে। (আলমগীরী)

২। চুপে কিরাতের নামাজ হউক কি প্রকাশ্য কিরাতের নামাজ হউক, ইমামকে যদি রুকূ কিংবা সিজদাতে পায় ও বিবেচনা করে যে, ছানা পড়িয়া ইমামকে রুকূ কিংবা সিজদাতে পাইবে, তাহা হইলে ছানা পড়িবে, নচেৎ ছানা না পড়িয়া ইমামের সহিত রুকূ কিংবা সিজদায় শামিল হইবে। এমনকি ইমামকে তাশাহুদ পড়ার মধ্যে পাইলে ছানা পড়ার প্রতি লক্ষ্য না করিয়া দাঁড়ান অবস্থায় তাকবীরে তাহরীমা বলিয়া নিয়তকরতঃ তাকবীর বলিয়া ইমামের সহিত বসিয়া যাইবে।

৩। ইমামকে নামাজের মধ্যে দেখিয়া ইমামের যাহা পড়া হইয়াছে তাহা পূর্ণ করার মানষে যদি মাসবুক মুক্তাদী ঐ নামাজ পড়িয়া জামায়াতে শামিল হয় ও ইমামের সহিত বাকি নামাজ পড়িয়া শেষ করে, তাহা হইলে ছহীহ্ কওল মতে ঐ মাসবুকের নামাজ ফাসেদ হইবে।

৪। ইমামের তাশাহুদ পাঠের পর সালাম ফিরাইবার পূর্বে মাসবুক মুক্তাদীর বাকি নামাজ পড়ার জন্য দাঁড়াইয়া যাওয়া জায়েজ নাই। কিন্তু মোযা মাছহের মুদ্দৎ শেষ হইবার আশঙ্কায়, মাযুর ব্যক্তি ওয়াক্ত ফৌত হইবার ভয়ে, জুমআর নামাজে আসরের ওয়াক্ত আসিয়া পড়ার আশঙ্কায়, ঈদের নামাজে জোহরের ওয়াক্ত আসিয়া পড়ার ভয়ে, ফজরের নামাজে সূর্য উদয় হইয়া পড়ার আশঙ্কায় কিংবা ওজু নষ্ট হইবার ভয় থাকিলে দাঁড়াইয়া বাকি নামাজ আদায় করা জায়েজ হইবে। উপরোক্ত কারণসমূহ ব্যতীত ইমামের সালাম ফিরানের পূর্বে দাঁড়াইয়া নামাজ আদায় করিলে মাকরূহ তাহরীম হইবে। (আলমগীরী)

৫। যদি কোনো মাসবুক, ইমামের সালামের পূর্বে দাঁড়াইয়া বাকি নামাজ আদায়করত পুনঃইমামের সহিত দাখিল হইয়া সালাম ফিরায় তাহা হইলে নামাজ জায়েজ হইবে কি না তাহাতে মতভেদ আছে। কিন্তু ছহীহ কওল মতে, নামাজ ফাসেদ হইবে না। (আলমগীরী)

৬। ইমাম দুই সালাম ফিরাইবা মাত্রই মাসবুক বাকি নামাজ আদায়ের জন্য দাঁড়াইয়া যাইবে না, সামান্য বিলম্ব করিবে যেন ছোহ-সিজদাহ্ থাকিলে আদায়ের সময় পায় বা মেহরাব হইতে বাহির হইয়া যায় কিংবা সুন্নাত পড়িতে দাঁড়ায় অথবা স্থান পরিবর্তন করে। এমতাবস্থা ঘটিলেই মাসবুক দাঁড়াইয়া বাকি নামাজ আদায় করিবে।

৭। তাশাহুদের পর মাসবুক ইমামের সহিত দরূদ ও দোয়া পড়িবে না। তখন কি করিবে তৎসম্বন্ধে মতভেদ আছে। এবনেশুজা বলিয়াছেন, ঐ সময় বার বার আশহাদু আল-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ পড়িতে থাকিবে। গিয়াছিয়া কিতাবে এই কথা ভালো বলিয়া গ্রহণ করিয়াছেন। পক্ষান্তরে ওয়াজীয কারদারী, ফতোয়ায়ে কাজীখান, খোলাছা, ফতহুল কাদীর প্রভৃতি কিতাবে লিখিয়াছেন যে, মাসবুক এমনভাবে পড়িবে যেন ইমামের সালাম ফিরাইবার পূর্বক্ষণে তাশাহহুদ পড়া শেষ হয়। (আলমগীরী)

৮। যদি কোন মাসবুক ইমামের সহিত কিংবা ইমামের পূর্বে ভুলে সালাম ফিরায় তাহা হইলে তজ্জন্য ছোহ-সিজদাহ করিতে হইবে না। যদি ইমামের সালামের বাদে ভুলে সালাম ফিরায় তাহা হইলে ছোহ্-সিজদাহ করিতে হইবে। ইমামের সহিত সালাম ফিরান উচিত বিবেচনায় যদি সালাম ফিরায়, তাহা হইলে নামাজ ফাসেদ হইবে; কেননা ইচ্ছাপূর্বক সালাম ফিরাইয়াছে। ইমামের সহিত ভুলে সালাম ফিরাইয়া যদি মনে করে যে, নামাজ ফাসেদ হইয়াছে ও সেই ধারণায় নূতন ভাবে নামাজ আরম্ভ করে তাহা হইলে প্রথম নামাজ বেকার হইয়া যাইবে।

যদি একা নামাজী ঐরূপ ভুলে সালাম ফিরাইয়া পুনঃতাকবীর বলিয়া নূতনভাবে আরম্ভ করে তাহা হইলে পূর্বের পঠিত নামাজ নষ্ট হইবে না। ঐ নামাজ জায়েজ হইয়া যাইবে। (আলমগীরী)

৯। মাসবুক মুক্তাদী ইমামের সহিত শেষ রাকয়াত পাইলে অতঃপর যে রাকয়াত হইতে আরম্ভ করিবে সেই রাকয়াতই পহেলা নামাজ মনে করিতে হইবে। যে রাকয়াত পাইয়াছে উহা নামাজের শেষ রাকয়াত মনে করিবে। অর্থাৎ কিরাত প্রথম রাকয়াত হিসাবে পড়িবে কিন্তু তাশাহহুদের বেলায় প্রথম রাকয়াত গণনা করিয়া দ্বিতীয় রাকয়াতে বসিবে।

১০। মাগরিবের নামাজের শেষ রাকয়াত ইমামের সহিত পাইলে বাকি দুই রাকয়াতের প্রথম রাকয়াতে ফাতিহা ও সূরা পড়িয়া রুকু সিজদাহকরতঃ বসিয়া তাশাহহুদ পড়িবে; পুনঃদাঁড়াইয়া ঐরূপ ফাতিহা ও কিরাত পড়িয়া বসিয়া তাশাহহুদ ও দোয়া পড়িয়া সালাম ফিরাইবে।

১১। চারি রাকয়াতবিশিষ্ট নামাজের শেষ রাকয়াতে ইমামের সহিত শামিল হইলে বাকি নামাজের প্রথম রাকয়াতে ফাতিহা ও কিরাত পড়িয়া রুকু সিজদাহকরতঃ তাশাহহুদ পড়িয়া পুনঃদাঁড়াইয়া তৃতীয় রাকয়াতেও ফাতিহা ও কিরাত পড়িবে। বাকি চতুর্থ রাকয়াতে ফাতিহা পড়া সম্বন্ধে দুইটি মত আছে-১। ফাতিহা পড়া বা ২। ফাতিহা না পড়িলেও নামাজ জায়েজ হইবে কিন্তু পড়াই উত্তম। (আলমগীরী)

১২। ইমামের সহিত দুই রাকয়াত পাইলে বাকি দুই রাকয়াত কিরাতের সহিত আদায় করিবে। যদি এক রাকয়াতেও কিরাত ছাড়িয়া দেয়, তাহা হইলে নামাজ ফাসেদ হইয়া যাইবে।

যদি ইমাম প্রথম দুই রাকয়াতে কিরাত ছাড়িয়া দিয়া থাকে ও তৃতীয় এবং চতুর্থ রাকয়াতে উহা পূর্ণ করে, এমতাবস্থায় মাসবুক বাকি নামাজ আদায়কালীন প্রত্যেক রাকয়াতে ফাতিহা ও কিরাত পড়িবে। নচেৎ মাসবুকের নামাজ ফাসেদ হইবে।

১৩। ইমাম ছোহ-সিজদাহ ওয়াজিব হইয়াছে মনে করিয়া এক সালামের পর ছোহ-সিজদাহ আদায় করিল। তৎসঙ্গে মাসবুকও ইমামের তাবেদারী করার পর উভয়ে জানিতে পারিল যে, ছোহ-সিজদাহ ওয়াজিব ছিল না। মাসবুক এরূপ ইমামের তাবেদারী করিলে প্রকাশ্য মতে মাসবুকের নামাজ বাতিল হইবে। ফকিহ আবুল লাইছ বলিয়াছেন বর্তমান যামানায় ঐরূপ ছোহ-সিজদায় তাবেদারী করিলে মাসবুকের নামাজ বাতিল হইবে। আর যদি মাসবুক না জানিয়া ছোহ-সিজদাহর তাবেদারী করে তবে সকল ইমামের মতে মাসবুকের নামাজ বাতিল হইবে না। (আলমগীরী)

১৪। ইমাম চারি রাকয়াত পড়িয়া শেষ রাকয়াতে তাশাহহুদ পরিমাণ বসিয়া যদি পঞ্চম রাকয়াতের জন্য দাঁড়াইয়া যায় ও মাসবুক ঐ ইমামের তাবেদারী করে তাহা হইলে মাসবুকের নামাজ বাতিল হইবে। ইমাম তাশাহহুদ পরিমাণ না বসিয়া পঞ্চম রাকয়াতে দাঁড়াইলে, সিজদাহ না করা পর্যন্ত কাহারও নামাজ ফাসেদ হইবে না। যদি সিজদাহ্ করে তবে ইমাম, মুক্তাদী ও মাসবুকের সকলের নামাজ বাতিল হইবে। (আলমগীরী)

১৫। মাসবুক যদি ইমামের ছোহ-সিজদাহ ব্যতীত সালাম, তাকবীর ও লাব্বায়েক বলার সময় ইমামের তাবেদারী করে, তবে মাসবুকের নামাজ নষ্ট হইয়া যাইবে। যদি নিজে মাসবুক একথা স্মরণ থাকা সত্ত্বেও তাকবীরের তাবেদারী করে তবে তাহার নামাজ ভঙ্গ হইবে না। প্রকাশ থাকে যে, উহা তাকবীরে তাশরীক। (আলমগীরী)

১৬। ইমামের সিজদাহ তেলাওয়াত আদায়ের পূর্বে মাসবুক বাকি নামাজের জন্য দাঁড়াইয়া গেলে ও সিজদাহ্ করার পূর্বে ইমামকে সিজদাহ্ করিতে দেখিলে, মাসবুক ইমামের সঙ্গে তেলাওয়াতে সিজদাহ্ বা ছোহ-সিজদার তাবেদারী করিবে, নচেৎ মাসবুকের নামাজ ফাসেদ হইয়া যাইবে। যদি বাকি নামাজের এক সিজদার পর ইমামের তাবেদারী করে, তাহা হইলে মাসবুকের নামাজ নষ্ট হইয়া যাইবে। পক্ষান্তরে ফতহুল কাদীর, বাদায়ে, তাতারখানিয়া, তাহতাবী, মোজমেরাত, শরহে মাবসুত, ছোরখছী, সিরাজুল-ওহহাজ খোলাছা প্রভৃতি কিতাবে লিখিত আছে-মাসবুক এক সিজদাহর পর ইমামকে ঐ সিজদাহ আদায় করিতে দেখিয়া ইমামের তাবেদারী না করিলেও নামাজ বাতিল হইয়া যাইবে। (আলমগীরী)

১৭। মাসবুক ও একা নামাজীর অবস্থা একই প্রকার কিন্তু চারটি মাসয়ালায় ব্যতিক্রম আছে,

যথা : (ক) মাসবুকের সহিত কাহারও এক্তেদা করা জায়েজ নাই। সেও কাহারও সহিত এক্তেদা করিবে না। এমনকি এক মাসবুক অন্য মাসবুকের সহিত এক্তেদা করিবে না, যে এক্তেদা করিবে তাহার নামাজ বাতিল হইয়া যাইবে। যদি দুইজন লোক এক সময় মাসবুক হয় ও একজনের স্মরণ না থাকে যে কত রাকয়াত পড়িতে হইবে, তাহা হইলে ঐ লোকের দেখাদেখি বাকি নামাজ বিনা এক্তেদায় আদায় করিলে নামাজ ফাসেদ হইবে না।

(খ) মাসবুক নামাজের মধ্যে থাকিয়া যদি পুনঃনামাজ আরম্ভের নিয়তে তাকবীর বলে, তাহা হইলে পিছনের নামাজ বাতিল হইয়া যাইবে। কিন্তু একা নামাজী নামাজের মধ্যে তাকবীর বলিয়া পুনঃনূতনভাবে নামাজ আরম্ভ করিলে পিছনের নামাজ বাতিল হয় না।

(গ) ইমামের প্রতি ছোহ-সিজদাহ্ ওয়াজিব হওয়ার পর যদি মাসবুক নামাজে শরীক হয় ও ইমামের সালামের পর ছোহ-সিজদাহ্ আদায় করার পূর্বে বাকি নামাজ আদায়ের জন্য দাঁড়াইয়া যায়, তাহা হইলে সিজদাহ্ করার পূর্বে ইমামের সহিত বসিয়া ছোহ-সিজদাহ্ আদায় করিবে। যদি তাহা না করে তবে নামাজ শেষ করিয়া ছোহ-সিজদাহ্ আদায় করিতে হইবে। কিন্তু একা নামাজীকে অন্যের ছোহ-সিজদাহ আদায় করিতে হয় না। (আলমগীরী)।

(ঘ) মাসবুক বাকি নামাজ আদায় করিয়া তাকবীরে তাশরীক বলিবে, ইহাতে কোন ইমামের মতভেদ নাই। কিন্তু ইমাম সাহেবের মতে একা নামাজীরও প্রত্যেক নামাজের পর তাকবীরে তাশরীক বলা ওয়াজিব। ছহীহ রেওয়ায়েত মতে একা নামাজী এমনকি স্ত্রীলোকেরও তাকবীরে তাশরীক বলিতে হইবে। (তাহতাবী, আলমগীরী) তরীকুল ইসলাম ২য় খ- পৃষ্ঠা : ৩৩,৩৪,৩৫,৩৬

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) একবার ফজরের সালাতের দুই রাকয়াতের মধ্যে জামাতে এক রাকয়াত পেলেন এবং অন্য রাকয়াত নিজে পড়ে নিলেন নি¤েœ হাদিসটি তুলে ধরা হলো-

মুগীরাহ্ ইবনু শু’বাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে তাবূক যুদ্ধে শরীক হয়েছিলেন। মুগীরাহ্ বলেন, একদিন ফজরের সালাতের আগে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পায়খানার (হাজতের) উদ্দেশ্যে বের হলেন। আর আমি তাঁর পেছনে একটি পানির পাত্র বহন করে গেলাম। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বেরিয়ে আসার পর আমি তাঁর দুই হাতের কব্জির উপর পানি ঢালতে লাগলাম। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর দুই হাত ও চেহারা ধুলেন। তখন তাঁর গায়ে একটি পশমের জুববাহ্ ছিল। তিনি তাঁর (জুববার আস্তিন গুটিয়ে) হাত দুটি খুলতে চাইলেন। কিন্তু জুববার আস্তিন খুব চিকন ছিল। তাই জুববার ভেতর দিক দিয়েই তাঁর হাত দুটি বের করে নিজের দুই কাঁধের উপর রেখে দিলেন এবং হাত দুটি (কনুই পর্যন্ত) ধুলেন। অতঃপর মাথার সামনের দিক (কপাল) ও পাগড়ীর উপর মাসাহ করলেন। তারপর আমি তাঁর মোজাগুলো খুলতে চাইলাম। তিনি বললেন, এগুলো এভাবে থাকতে দাও, আমি এগুলো পবিত্রাবস্থায় (অর্থাৎ ওযু করে) পরেছি। তিনি এগুলোর উপর মাসাহ করলেন। অতঃপর তিনি সওয়ারীর উপর আরোহণ করলেন, আমিও আরোহণ করলাম এবং আমরা একটা দলের কাছে পৌঁছে গেলাম। তখন তারা সালাতে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন, আর ‘আবদুর রহমান ইবন ‘আওফ (রাঃ) তাদের সালাতের ইমামাত করছিলেন এবং তাদের নিয়ে এক রাক্’আত সালাত আদায়ও করে ফেলেছিলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আগমন বুঝতে পেরে তিনি পেছনে সরে আসতে চাইলেন। কিন্তু নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে তার স্থানে (স্থির থাকতে) ইশারা করলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সাথে দুই রাক্’আতের মধ্যে এক রাক্‘আত সালাত পেলেন। তিনি সালাম ফিরালে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে গেলেন এবং আমিও তাঁর সাথে দাঁড়িয়ে গেলাম। আর এক রাক্’আত ছুটে যাওয়া সালাত আমরা আদায় করলাম। (মুসলিম শরীফ ২৭৪, নাসায়ী ১০৮, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৫১৪৩, ইবনু মাজাহ্ ১২৩৬।)

পরিশেষে বলবো, মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সালাতের মাসয়ালা মাসায়েল জেনে সঠিকভাবে সালাত আদায়ের তাওফিক দান করুক। আমিন।

লেখক : ইমাম ও খতিব, বিষ্ণুপুর মদিনাবাজার বাইতুল আমিন জামে মসজিদ, চাঁদপুর সদর।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়