প্রকাশ : ২১ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০
কারো ব্যক্তিত্বের প্রতি যতোক্ষণ পর্যন্ত মুহাব্বত না হবে ততোক্ষণ পর্যন্ত তাঁর শান-শওকত, আযমত হৃদয়ে গাঁথবে না। তাঁর প্রতি আদব-শিষ্টাচারের আন্তরিকতা সৃষ্টি হবে না। আল্লাহ তা’আলা যাঁর মুহাব্বতকে মানদ- হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। এতে তাঁর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) শান-মান, মর্যাদার স্তর অনুমান করা যায়।
নিজের জানের চেয়ে তাঁর প্রতি মুহাব্বতকে ঈমানের এক নম্বর শর্ত ঘোষণা দিয়েছেন। আল্লাহ তা’আলা ফিরিশতাদের অন্তরে হযরত আদম আলাইহিস্ সালাম-এর মর্যাদা ও মাহাত্ম্যের নকশা এঁকে দিয়েছেন। ফলে তারা সবাই তাঁকে সাজদাহ্ করার মাধ্যমে সম্মান প্রদর্শন করেছেন। হযরত ইউসুফ আলাইহিস্ সালামের ভাইদের অন্তরে হযরত ইউসুফ আলাইহিস সালাম-এর মর্যাদা ও মাহাত্ম্য অংকন করে দিয়েছেন। ফলে তারা সবাই তাঁর প্রতি সাজদায় অবনত হলেন। কিন্তু ইবলিস শয়তান হযরত আদম আলাইহিস্ সালামকে শুধু একজন সাধারণ মানুষ মনে করে তাঁকে সম্মান করার জন্যে প্রস্তুত ছিলো না। ফলে সে সবসময়ের জন্যে লাঞ্ছিত ও অপমানিত হলো।
মুহাব্বত ও ভালোবাসা, চিন্তা-চেতনায় ও দৃষ্টিভঙ্গিতে বিরাট পরিবর্তন এনে দেয়। যদি এই পরিবর্তন না আসে তাহলে শয়তানের পরিণতিই অনিবার্য। আমাদের উচিত চিন্তা-চেতনা ও দৃষ্টিভঙ্গির হেফাযত করা। কোনো মুসলমান নবীগণ (আলাইহিমুস সালাম)কে শুধুমাত্র বাশার বা সাধারণ মানুষ মনে করেন না। কেননা এ ধরনের মনে করা ইবলিসের বৈশিষ্ট্য। ইহুদি, নমরুদের, কাফির ও মুশরিকদের খেয়াল। যা সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে বার বার বলা হয়েছে।
আল্লাহ তা’আলা শুধুমাত্র একবার নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মাধ্যমে বলেছেন, ‘‘আপনি বলুন, আমি তোমাদের মতো মানুষ। এটা তাঁর প্রকাশ্যরূপ কিন্তু তাঁর উপর তো আল্লাহর পক্ষ থেকে ওহী আসে। অতএব, তাঁকে কিভাবে তারা তোমাদের মত বশর বলতে পারে?
আল্লাহ তা’আলা প্রথমত নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মুহাব্বতের নকশা অন্তরে একত্রিত করে দিয়েছেন; অতঃপর অন্তরে তাঁর বড়ত্ব ও মাহাত্ম্যর নকশা অংকন করে দিয়েছেন যখন আদব বা শিষ্টাচারের কথা আসবে তখন তা অন্তরে চলে আসবে।
তাঁর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এ মর্যাদার জন্যে অল্লাহ্ তা’আলা এরশাদ করেছেন,
১) আমার রাসূলের উপর ঈমান আনো এবং তাঁকে সম্মান করো।
২) এ সম্মানিত রাসূলের উপর ঈমান আনো এবং তাঁকে সম্মান ও তা’যীম করো।
৩) যে ব্যক্তি তাঁর উপর ঈমান আনবে এবং তাঁকে সম্মান করবে।
ঈমান গ্রহণের পর পরই সম্মান প্রদর্শনের কথা বলা হয়েছে। অতঃপর জান-মাল ও অন্তর দিয়ে সাহায্য-সহযোগিতার কথা বলা হয়েছে। অতঃপর আনুগত্য ও অনুসরণের কথা বলা হয়েছে। তারপর শুভ সংবাদ প্রদান করা হয়েছে যে, ঈমান আনয়নকারী, তাঁকে সম্মান প্রদর্শনকারী, তাঁর সাহায্যকারী, তাঁর আনুগত্য ও অনুসরণকারীই সফলকাম। নিশ্চয় উভয় জাহানের সফলতার জন্যে এ পন্থায় যথেষ্ট সহায়ক যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর ঈমান আনয়ন করবে এবং তাঁকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জান-মাল ও অন্তর দিয়ে সম্মান করবে। ওই সম্মান ও আদব আপন কথা ও কাজের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করবে। প্রকাশ করবে। মুহাব্বতের সুগন্ধ না ছড়িয়ে পারে না। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সম্মান ও মাহাত্ম, শান ও শওকত এভাবে আল্লাহ তা’আলা প্রকাশ করেছেন, যেখানে আনুগত্যের কথা বলেছেন। ওখানে আপন প্রিয় হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আনুগত্যের কথা উল্লেখ করেছেন। যেখানে তাঁর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নাফরমানিকে আল্লাহর সাথে নাফরমানী হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়েছে।
যে ব্যক্তি রাসূলের আনুগত্য করল সে আল্লাহর আনুগত্য করলো। এখানে উদ্দেশ্য একটাই তাঁর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) প্রতি মুহাব্বত ও আনুগত্য করা, যে ব্যক্তি তাঁকে মুহাব্বত করলো সে আল্লাহকে মুহাব্বত করলো। আর যে ব্যক্তি তাঁর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আনুগত্য করলো তিনি আল্লাহর প্রিয় মাহবুব হয়ে গেছেন। আল্লাহ তা’আলা আপন মাহবুব প্রিয় বান্দাদের ব্যবহার্য জিনিসপত্র ও নিদর্শনাবলীকে তা’যীম-সম্মান করার জন্যে নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রিয় মাহবুবের সাথে সম্বন্ধিত জিনিসও প্রিয় হয়। আর এটাই হলো মুহাব্বতের স্বভাব। কোনো ব্যক্তিত্বের শান-মান বাড়ানোর এটা একটা বৈশিষ্ট্য যে, তার শুভাগমনের স্মরণ করা হবে অথচ তাঁর নাম উল্লেখ করা হবে না। আল্লাহ লাখো কোটি বছর পূর্বে আম্বিয়া আলাইহিমুস্ সালামকে একত্রিত করে তাঁদের থেকে এ ওয়াদা নিয়েছেন যে, তিনি যখন শুভাগমন করবেন, তখন আপনারা সকলে তাঁর উপর ঈমান আনয়ন করবেন। জান-মাল ও অন্তর দিয়ে সর্বাত্মক সাহায্য-সহযোগিতা করবেন এটা সাধারণ কোনো ঘটনা নয় বরং অনেক বড় আযীমুশ্শান ব্যাপার। হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম এবং ইসমাঈল আলাইহিস সালাম বায়তুল্লাহ শরীফের ভিত্তি স্থাপন করে আল্লাহ তা’আলার আলীশান দরবারে দু হাত তুলে পরবর্তীতে আগমনকারী ওই মহান রসূলের ব্যাপারে দো’আ করেন। তারপর নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শুভাগমনের ৫৭০ বছর পূর্বে হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম একটি মহতী সভায় খুৎবা প্রদানকালে তাঁর পরে শুভাগমনকারী মহান নবীর সুসংবাদ প্রদান করেন। আর বলেন, সমস্ত উম্মত যাঁর জন্যে অপেক্ষমান, যাঁর ওসীলায় বিজয় ও সাহায্য আসত তাঁর শুভাগমন হবে। (সূরা বাক্বারা, আয়াত নং-৮৯) এবং বলেছেন, আমার পরে একজন সম্মানিত রসূল শুভাগমন করবেন যাঁর মুবারক নাম হবে আহমদ এ তাঁর মহান মর্যাদা ও শান যা সমগ্র পৃথিবীবাসীকে দেখানো হয়েছে। যাতে তাঁর শান-মানের প্রচার ও প্রসার হয়ে যায়। তারঃপর তাঁর শুভাগমনের এ ঘোষণা কম-বেশি করেছেন। এ ঘোষণা হঠাৎ করে দেয়া হয়নি বরং প্রত্যেক যুগে যুগে এ মহান নূরের শুভাগমনের কথা প্রচার করা হয়েছে। তাঁকে সমগ্র সৃষ্টির উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। সম্মানিত করে সৃষ্টি করেছেন মহান আল্লাহ তা’আলা। তাঁর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) শান ও আযমত প্রকাশ করার জন্যে আল্লাহ তার পূর্বপুরুষদের শপথ করেছেন। আপন হাবীব (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)’র জীবন মোবারকের শপথ খেয়েছেন। আপন হাবীব (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম)’র জন্মভূমি পবিত্র মক্কা নগরীর শপথ করেছেন। তাঁর সর্বোত্তম মহান চরিত্রের আলোচনা করেছেন। তাঁর (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম) পবিত্র অভ্যাস মোবারকে উল্লেখ করেছেন। তাঁর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইল্ম ও ফদ্বলের আলোচনা করেছেন। তাঁর রহমত সর্বসাধারণের জন্যে প্রযোজ্য।
তাঁর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নবূয়ত ও রিসালতের শান হলো তা ক্বিয়ামত পর্যন্ত তাঁর ফুয়ূযাত অবশিষ্ট থাকবে। তাঁর পরে কোনো নবী-রাসূল আগমন করবেন না। ক্বিয়ামতের দিন আরশ আযীমের ডান পার্শ্বে শুধু তাঁর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)জন্য সিংহাসন রাখা হবে। (তিরমিযী শরীফ : কিতাবুল মানাকিব)। এ কথা গুলো সে জন্য বলা হয়েছে যাতে করে শ্রোতা-পাঠকের অন্তরে তাঁর শান-আযমতের তথা মহানত্বের একটি চিত্র অংকিত হয়। কেউ যাতে তাঁকে দেখে নিজের মতো বাশার মনে না করে। এধরনের মনে করলে তার দুনিয়া-আখিরাত বরবাদ হয়ে যাবে। সে উভয় জাহানে লাঞ্ছিত ও অপমানিত হবে। যেভাবে কাফির-মুশরিক, ইহুদি-নাসারগণ লাঞ্ছিত ও অপদস্ত হয়েছে। পবিত্র ক্বোরআন মাজীদে নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর মাহাত্ম্য ও মর্যাদা, শান-মান ও বড়ত্বের মণি-মুক্তা দ্বারা পরিপূর্ণ। দেখা ও অনুধাবনের জন্য গভীর দৃষ্টির প্রয়োজন। অন্তর দৃষ্টির প্রশস্থতা এগুলো দেখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। আল্লাহু আকবর! আর মহান আল্লাহ তা’আলা মুমিনের শাহ রগের চেয়েও নিকটবর্তী হুযুর পুরনূর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মুমিনের জানের চেয়েও নিকটবর্তী। এ বিষয়ে স্বয়ং নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এরশাদ করেছেন, কোন মুমিন এমন নেই যার কাছে আমি দুনিয়া-আখিরাতে অধিক নিকটবর্তী না হই। তাঁর কি শান আমরা বর্ণনা করব, সমগ্র উম্মতের ব্যাপারে তাঁকে সাক্ষী বানানো হয়েছে। তাঁর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) উপর এমন একটি ক্বোরআন অবতীর্ণ করা হয়েছে, যাতে প্রত্যেক বস্তুর আলোকজ্জ্বল ও বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে। তাঁকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ লাইলাতুল ক্বদর দান করা হয়েছে, তাঁকে প্রশংসিত স্থান-মক্বামে মাহমুদের সুসংবাদ দেয়া হয়েছে। তাঁর শান-মানে উচ্চতা মানুষের ধারনার বাইরে, খেয়ালের বাইরে। তাঁর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য মহান আল্লাহ ক্বিবলা পরিবর্তনের মতো মহা ঘটনা সংঘটন করেছেন। (সূরা বাক্বারা, আয়াত নং-১৪৪) নিশ্চয় তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যেদিকে, মহান আল্লাহ তা’আলাও সেদিকে আছেন। তাঁর সন্তুষ্টিও নবীর সন্তুষ্টির উপর নির্ভরশীল। আল্লাহ তা’আলা আপন মাহবূব প্রিয় বান্দাদের প্রতি খুব মুহাব্বত রাখেন। শুধু তাই নয়, মাহবূব বান্দাদের সাথে যে সব বস্তুর নিসবত আছে বা হয়েছে সেগুলোতে আল্লাহ তা’আলা মুহাব্বত করে থাকেন। তার গোপন রহস্য খুব নিবিড়ভাবে পর্যালোচনা করা দরকার। গাছের ঐ বাক্স যাতে হযরত মূসা আলাইহিস্ সালাম ও হযরত হারুন আলাইহিস্ সালাম-এর ব্যবহার্য বস্তু ছিল, কুরআন মাজীদ এটাকে ‘প্রশান্তিময়’ বলেছেন। আর ফিরিশতাগণ এটাকে উত্তোলন করেছেন। হযরত ইবরাহীম আলাইহিস্ সালাম এর কদম মোবারকের নকশা বায়তুল্লাহর সামনে রেখে দিয়েছেন, আর তাকে আপন নিদর্শন হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। হযরত হাজেরা সাফা-মারওয়া দৌঁড়াদৌঁড়ি করেছেন এটা আল্লাহর কাছে ভাল লেগেছে তাই হাজী সাহেবানদের উপর এ দুটির প্রদক্ষিণ করা ওয়াজিব করে দিয়েছেন। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আপন সুউচ্চ নিমাতের কারণে তিনটি মসজিদকে মনোনীত করেছেন।, দূর-দুরান্ত থেকে আগতরা এখানে নামায পড়বে, যিয়ারত করবে, অসীম সাওয়াবের ভাগিদার হবে। এখানে গূঢ় রহস্য আছে। সে রহস্যটা কি ? আর সে রহস্যটা হল মুহাব্বত-ভালবাসা।
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীগণের সামনে হউন অথবা না হউন তাঁরা তাঁর প্রতি তা’যীম ও সম্মান প্রদর্শনে কোন সময় কার্পণ্য করেননি। তাঁদের হৃদয়ে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আদব মযবুতভাবে, পাকাপোক্তভাবে, স্থান করে নিয়েছিল। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামেরশাদ করেছেন, তোমরা যখন নামাযের জন্য দ-ায়মান হবে তখন সামনের দিকে থুথু ফেলবে না। কেন ফেলবে না? যেহেতু সেদিকে বায়তুল্লাহ, আল্লাহর ঘর রয়েছে। বায়তুল্লাহর সামনে হউন বা না হউন একে সম্মান করা, তা’যীম করা প্রত্যেক মুসলমানদের উপর অবশ্যই কর্তব্য। একবার এক সাহাবী ক্বিবলার দিকে থুথু নিক্ষেপ করেন যা নবী করীম নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রত্যক্ষ করেন। তখন তিনি (নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঘোষণা করলেন, ঐ ব্যক্তি আগামীতে নামাযের ইমামতি করতে পারবেন না। সে ব্যক্তি আর নামাযের ইমামতি করতে পারেননি। হযরত সায়িব ইবন খাল্লাদ (রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু) এটাও বর্ণনা করেছেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামেরশাদ করেছেন, ওহে! তুমি আল্লাহ ও রসূলকে কষ্ট দিয়েছ। নিজের কোন কথা ও কাজে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কষ্ট দেয়া যাবে না। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সম্মান করা, ইজ্জত করার উদ্দেশ্য হলো সম্মানিত জীবন লাভ করা, আল্লাহ তা’আলার সন্তুষ্টি অর্জন করা। যার অন্তর নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মুহাব্বত, আদব ও তা’যীম থেকে শুন্য সে ঈমান থেকে বঞ্চিত। এটি কুরআন মাজীদের ফয়সালা। আপন ঈমান সংরক্ষণ করবেন, এটি মণি-মুক্তার চাইতেও অধিক মূল্যবান। একাকী থাকবেন না, সত্যবাদীদের সাথেই থাকুন। সত্যবাদী তিনিই যাঁর সুহবতে থাকলে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি মুহাব্বত-ভালবাসা, আদব ও তা’যীম পয়দা হয়। আর যাদের সুহবতে থাকলে নবীজীর প্রেম শুন্য হয়ে যায় ঐ ব্যক্তি থেকে সেরূপ বেঁচে থাকবে, দূরে থাকবে। যেরূপ পশু থেকে মানুষ দূরে থাকে। বরং এর চেয়ে অধিক সাবধান থাকে। পশু থেকে শুধু প্রাণের ভয় থাকে, কিন্তু ঐসব গোস্তাখে রসূল থেকে ঈমানের ভয় থাকে আর মানুষের জীবনে ঈমানই অমূল্য সম্পদ। এটি যদি লুট হয়ে যায় তাহলে সব কিছু নষ্ট হয়ে যায়। ওহে মাওলা! আমাদের ক্বলবে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মুহাব্বত, ভালবাসা, আযমত-বড়ত্বের নকশা এঁেক দিন। তাঁর (নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) প্রতি সর্বদা বা’আদব-তথা শিষ্টাচার সমৃদ্ধ রাখুন, দুঃশ্চিন্তা ও জবান দরাজী থেকে মাহফুজ রাখুন! আ-মী-ন।
মোটকথা, সে ব্যক্তি সফলকাম যিনি তাঁর (নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) প্রতি মুহাব্বত ও আদব তা’যীমের রজ্জুকে আঁকড়ে ধরেছেন।
টিকা : আল্লাহ তা’আলা বলেন, “এবং তোমাদের পছন্দের বাসস্থান-এসব বস্তু আল্লাহ তা’আলা ও তাঁর রসূল এবং আল্লাহর পথে যুদ্ধ করা অপেক্ষা তোমাদের নিকট প্রিয় হয়।” সূরা তাওবা, আয়াত-২৪, কানযুল ঈমান, পৃ. ৩৫১। আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন, “এবং আপন মাতা-পিতাকে তার সিংহাসনে বসালো এবং সবাই তার সামনে সাজদাহ করলো।” সূরা ইউসূফ, আয়াত-১০০, কানযূল ঈমান, প. ৪৫১। আল্লাহ তা’আলা এরশাদ করেন, “এবং (স্মরণ করুন!) যখন আমি ফিরিশতাদেরকে নির্দেশ দিয়েছিলাম, ‘তোমরা আদমকে সাজদাহ্ করো।’ তখন সবাই সাজদাহ্ করেছিলে ইবলীস ব্যতীত; সে অমান্যকারী হলো ও অহংকার করলো এবং কাফির হয়ে গেলো।” সূরা বাক্বারা, আয়াত-৩৪, কানযুল ঈমান, পৃ. ১৭। আল্লাহ তা’আলা বলেন, “এবং নিশ্চয় আমি তাদেরকে সৃষ্টি করেছি, অতঃপর তোমাদের নমুনা তৈরি করেছি। অতঃপর আমি ফিরিশতাদেরকে বলেছি ‘আদমকে সাজদা করো।’ তখন তাদের সকলেই সাজদারত হলো, কিন্তু ইবলীস্; সে সাজদাকারীদের অন্তর্ভূক্ত হলো না। ১২) (তিনি) বললেন “কোন বস্তু তোমাকে নিবৃত্ত করলো যে, তুমি সাজদ্া করলে না, যখন আমি তোমাকে নির্দেশ দিয়েছিলাম?’ (সে) বললো, আমি তার চেয়ে শ্রেষ্ঠ, আপনি আমাকে আগুন হতে সৃষ্টি করেছেন এবং তাঁকে মাটি হতে সৃষ্টি করেছেন। ১৩) বললেন, ‘তুমি এখান থেকে যাও! তোমার জন্য এটা শোভা পায় না যে, এখানে থেকে অহংকার করবে। সুতরাং বের হয়ে যাও! তুমি হও লঞ্ছিতদের অর্ন্তভূক্ত।’ সূরা আ‘রাফ, আয়াত-১১-১৩, কানযুল ঈমান, পৃ. ২৮১-২৮২। ক. ‘তারা বললো, তোমরা তো আমাদের মতই মানুষ।” সূরা ইবরাহীম, আয়াত-১০, কান্যুল ঈমান, পৃ. ৪৬৭। খ. ‘ইনি কে? একজন তোমাদেরই মতো মানুষ মাত্র।” সূরা আম্বিয়া, আয়াত-৩, কান্যুল ঈমান, পৃ. ৫৮৯। গ. ‘অতঃপর তার সম্প্রদায়ের সে সব সরদার কুফুর করেছে, তারা বললো, এতো নয়, কিন্তু তোমাদের মতো মানুষ।” সূরা মু’মিনূন, আয়াত-২৪, কান্যুল ঈমান, পৃ. ৬২৩। আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন, আপনি বলূন! (প্রকাশ্য মানবীয় আকৃতিতে তো) আমি তোমাদেও মতো, আমার নিকট ওহী আসে সে তোমাদের মা’বুদ একমাত্র মা’বুদই। সূরা কাহাফ, আয়াত-১১০, কান্যুল ঈমান, পৃ. ৫৫৫। আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন, “আমার রসূলগণের উপর ঈমান আনো, তাঁদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করো।” সূরা মায়িদা, আয়াত-১২, কান্যুল ঈমান, পৃ. ২১০। আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন, “যাতে হে লোকেরা! তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের উপর ঈমান আনো এবং রসূলের মহত্ব বর্ণনা ও তাঁর সম্মান প্রদর্শন করো আর সকাল-সন্ধ্যা আল্লাহর পবিত্রতা ঘেষণা করো।” সূরা ফাতহ, আয়াত-৯, কান্যুল ঈমান, পৃ. ৯১৪। আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন, “তখন তোমরা নিশ্চয় নিশ্চয় তাঁর উপর ঈমান আনবে এবং নিশ্চয় নিশ্চয় তাঁকে সাহায্য করবে।” সূরা আল ইমরান, আয়াত-৮১, কান্যুল ঈমান, পৃ. ১২৬। আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন, “এবং নিশ্চয় যদি তোমরা আল্লাহর পথে নিহত হও কিংবা মৃত্যুবরণ করো, তবে আল্লাহই ক্ষমা ও অনুগ্রহ তাদের সমস্ত ধন-দৌলত অপেক্ষা শ্রেয়।” সূরা আল ইমরান, আয়াত-১৫৭, কান্যুল ঈমান, পৃ.১৪৪। আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন, “এবং আল্লাহ ও রসূলের অনুগত থাকো এ আশায় যে, তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করা হবে।” সূরা আল ইমরান, আয়াত-১৩২, কান্যুল ঈমান, পৃ. ১৩৮।) “এবং যে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের অবাধ্য হয় এবং তাঁর সমস্ত সীমা লংঘন করে আল্লাহ তাকে আগুনের মধ্যে প্রবেশ করাবেন, যার মধ্যে সর্বদা থাকবে। আর তার জন্য রয়েছে লাঞ্ছনার শাস্তি।” সূরা নিসা, আয়াত-১৪, কান্যুল ঈমান, পৃ. ১৫৯। আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন, “যে ব্যক্তি রসূলের নির্দেশ মান্য করেছে, নিঃসন্দেহে সে আল্লাহ নির্দেশ মান্য করেছে।” সূরা নিসা, আয়াত-৮০, কান্যুল ঈমান, পৃ. ১৭৭। “আপনি বলে দিন, ‘হুকুম মান্য করো আল্লাহ ও রসূলের।” সূরা আল ইমরান, আয়াত-৩২, কান্যুল ঈমান, পৃ. ১১৪। “এবং আল্লাহ ও রসূলের অনুগত থাকো এ আশায় যে, তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করা হবে।” সূরা আল ইমরান, আয়াত-১৩২, কান্যুল ঈমান, পৃ. ১৩৮। আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন, “হে মাহবুব! আপনি বলে দিন, ‘হে মানবকুল, যদি তোমরা আল্লাহ্কে ভালবেসে থাকো তবে আমার অনুসারী হয়ে যাও, আল্লাহ তোমাদেরকে ভালবাসবেন এবং আল্লাহ তোমাদের গুনাহ ক্ষমা করবেন; আর আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু।” সূরা আল ইমরান, আয়াত-৩১, কান্যুল ঈমান, পৃ. ১১৪। আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন, “যে কেউ আল্লাহ নিদর্শনাবলীকে সম্মান করে, তবে এটা হচ্ছে অন্তরগুলোর পরহেয্গারীর লক্ষণ।” সূরা হজ, আয়াত-৩২, কান্যুল ঈমান, পৃ. ৬১২। আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন, “এবং স্মরণ করুন! যখন আল্লাহ নবীগণের নিকট থেকে তাদের অঙ্গীকার নিয়েছিলেন, ‘আমি তোমাদেরকে যে কিতাব ও হিকমত প্রদান করবো, অতঃপর তাশরীফ আনবেন তোমাদের নিকট রসূল, যিনি তোমাদের কিতাবগুলোর সত্যায়ন করবেন, তখন তোমরা নিশ্চয় নিশ্চয় তাঁর উপর ঈমান আনবে এবং নিশ্চয় নিশ্চয় তাঁকে সাহায্য করবে। এরশাদ করলেন, ‘তোমরা কি স্বীকার করলে এবং এ সম্পর্কে আমার গুরুদায়িত্ব গ্রহণ করলে?’ সবাই আরয করলো, ‘আমরা স্বীকার করলাম।’ এরশাদ করলেন, ‘তবে (তোমরা) একে অপরের উপর সাক্ষী হয়ে যাও এবং আমি নিজেই তোমাদের সাথে সাক্ষীদের মধ্যে রইলাম।” সূরা আল ইমরান, আয়াত-৮১, কান্যুল ঈমান, পৃ. ১২৬। আল্লাহ তা’আলা বলেন, “হে প্রতিপালক আমাদের! এবং তাদের মধ্যে তাদেরই থেকে একজন রসূল প্রেরণ করো, যিনি তোমার আয়াতসমূহ তাদের নিকট তেলাওয়াত করবেন এবং তাদেরকে তোমার কিতাব ও পরিপক্ক জ্ঞান শিক্ষা দেবেন এবং তাদেরকে অতি পবিত্র করবেন। নিশ্চয়, তুমিই পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।” সূরা বাক্বারা, আয়াত-১২৯, কান্যুল ঈমান, পৃ. ৪৯-৫০। . আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন, “এবং স্মরণ করুন! যখন মরিয়ময় তনয় ঈসা বললো, ‘হে বনী ই¯্রাঈল! আমি তোমাদের প্রতি আল্লাহ রসূল; আমার পূর্বেকার কিতাব তাওরীতের সত্যায়নকারী এবং ওই (সম্মানিত) রসূলের সুসংবাদদাতা হয়ে, যিনি আমার পরে তাশরীফ আনবেন, তাঁর নাম ‘আহমদ’।” সূরা আস-সফ, আয়াত-৬, কান্যুল ঈমান, পৃ. ৯৯৪। . আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন, “এবং আমি আপনার জন্য আপনার স্মরণকে গমনন্নত করেছি।” সূরা ইনশিরাহ, আয়াত : ০৪, কানযুল ঈমান, পৃ. ১০৮৬। আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন, “নিশ্চয় তোমাদের নিকট আল্লাহ পক্ষ থেকে একটা ‘নূর’ এসেছে এবং স্পষ্ট কিতাব।” সূরা মায়িদা, আয়াত : ১৫, কানযুল ঈমান, পৃ. ২১১। . ইমাম মুসলিম : সহীহ মুসলিম : বাবু ফাদ্বায়িনিন্নবী (দ.); ইমাম তিরমিযী : আল জামি‘ কিতাবুত তাফসীর। আল্লাহ তা’আলা বলেন, “এবং আপনার পিতা (পিতৃ-পুরুষ) ইব্রাহীমের শপথ এবং তার বংশধরের, অর্থাৎ আপনিই।” সূরা বালাদ, আয়াত : ৩, কানযুল ঈমান, পৃ. ১০৭৯। আল্লাহ তা’আলা বলেন, “হে মাহবূব! আপনার জীবনের শপথ, নিশ্চয় তারা আপন নেশায় উদ্দেশ্যহীনভাবে বিচরণ করছে।” সূরা হিজর, আয়াত : ৭২, কানযুল ঈমান, পৃ. ৪৮৩। আল্লাহ তা’আলা বলেন, “আমায় এ শহরের শপথ, যেহেতু হে মাহবূব! আপনি এ শহরে তাশরীফ রাখছেন।” সূরা বালাদ, আয়াত : ১-২, কানযুল ঈমান, পৃ. ১০৭৯। আল্লাহ তা’আলা বলেন, “এবং নিশ্চয় আপনার চরিত্র তো মহা মর্যাদারই।” সূরা ক্বালাম, আয়াত : ৪, কানযুল ঈমান, পৃ. ১০১৭। আল্লাহ তা’আলা বলেন, “নিশ্চয় তোমাদের নিকট তাশরীফ আনয়ন তোমাদের মধ্য থেকে ওই রাসূল, যার নিকট তোমাদের কষ্টে পড়া কষ্টদায়ক, তোমাদের কল্যাণ অতিমাত্রায় কামনাকারী, মুসলমানদের উপর পূর্ণ দয়ার্দ্র, দয়ালু।” সূরা ত্বাওবা, আয়াত : ১২৮, কানযুল ঈমান, পৃ. ৩৮২। আল্লাহ তা’আলা বলেন, “এবং এ নবী অদৃশ্য বিষয় বর্ণনা করার ব্যাপারে কৃপণ নন।” সূরা তাকবীর, আয়াত : ২৪, কানযুল ঈমান, পৃ. ১০৬২। আল্লাহ তা’আলা বলেন, “এবং আমি আপনাকে সমগ্র জগতের রহমতরূপেই প্রেরণ করেছি।” সূরা আম্বিয়া, আয়াত : ১০৭, কানযুল ঈমান, পৃ. ৬০৪। আল্লাহ তা’আলা বলেন, “হ্যাঁ, আল্লাহ রসূল, এবং সমস্ত নবীর মধ্যে সর্বশেষ। আর আল্লাহ সবকিছু জানেন।” সূরা আহযাব, আয়াত : ৪০, কানযুল ঈমান, পৃ. ৭৬৪। আল্লাহ তা’আলা বলেন, “এবং হৃদয়ের শিরা অপেক্ষাও তার অধিক নিকটে আছি।” সূরা ক্বাফ, আয়াত : ১৬, কানযুল ঈমান, পৃ. ৯২৮। আল্লাহ তা’আলা বলেন, “এ নবী, মুসলমানদের, তাদের প্রাণ অপেক্ষাও বেশি মালিক, এবং তার স্ত্রীগণ তাদের মাতা। আর নিকটাতœীয়গণ আল্লাহ কিতাবের (বিধানের) মধ্যে একে অপরের চেয়েও নিকটতর অন্যান্য মুসলমান ও মুহাজিরদের তুলনায়, তবে তোমরা যদি তোমাদের বন্ধু-বান্ধবের প্রতি অনুগ্রহ প্রদর্শন করতে চাও (তবে করতে পার)। এটা কিতাবে লিপিবদ্ধ রয়েছে।” সূরা আহযাব, আয়াত : ৬, কানযুল ঈমান, পৃ. ৭৫৩। ইমাম বোখারী : আল জামি‘, কিতাবুল ইসতিক্বরাদ, খ., পৃ.; ইমাম মুসলিম : আল জামি‘, কিতাবুল জুমু’আ, খ., পৃ.। আল্লাহ তা’আলা বলেন, “হে অদৃশ্যের সংবাদদাতা (নবী) নিশ্চয় আমি আপনাকে প্রেরণ করেছি ‘উপস্থিত’ ‘পর্যবেক্ষণকারী’ হাযির-নাযির করে, সুসংবাদদাতা এবং সতর্ককারীরূপে।” সূরা আহযাব, আয়াত : ৪৫, কানযুল ঈমান, পৃ. ৭৬৫। ১)আল্লাহ তা’আলা এরশাদ করেন, “এবং প্রত্যেক বস্তু বিশদ বিবরণ আর মুসলমানদের জন্য হিদায়ত ও রহমত।” সূরা ইউসুফ, আয়াত : ১১১, কানযুল ঈমান, পৃ. ৪৫৩। ২) আল্লাহ তা’আলা বলেন, “আর আমি আপনার উপর এ ক্বোরআন অবতীর্ণ করেছি, যা প্রত্যেক বস্তুর সুস্পষ্ট বিবরণ, হিদায়ত, দয়া ও সুসংবাদ মুসলমানদের জন্য।” সূরা নাহল, আয়াত : ৮৯, কানযুল ঈমান, পৃ. ৫০১। আল্লাহ তা’আলা বলেন, “ক্বদরের রাত হাজার মাস থেকে উত্তম।” সূরা ক্বদর, আয়াত : ৩, কানযুল ঈমান, পৃ. ১০৯০। আল্লাহ তা’আলা বলেন, “এবং রাতের কিছু অংশে তাহাজ্জুদ ক্বায়েম করুন। এটা খাস আপনার জন্যে অতিরিক্ত। এ কথা নিকটে যে, আপনাকে আপনার রব এমন স্থানে দ-ায়মান করবেন যেখানে সবাই আপনার প্রশংসা করবে।” সূরা বনী ইসরাঈল, আয়াত : ৭৯, কানযুল ঈমান, পৃ. ৫২৭। আল্লাহ তা’আলা বলেন, “এবং তাদেরকে তাদের নবী বললেন, ‘তার বাদশাহীর নির্দশন এই যে, তোমাদের নিকট তাবূত আসবে, যার মধ্যে তোমাদের রবের পক্ষ থেকে চিত্ত-প্রশান্তি রয়েছে এবং কিছু অবশিষ্ট বস্তু, সম্মানিত মূসা ও সম্মানিত হারুনের পরিত্যক্ত; সেটাকে ফিরিশ্তাগণ বহন করে আনবে।’ নিঃসন্দেহে, এর মধ্যে মহান নির্দশন রয়েছে তোমাদের জন্যে যদি ঈমান রাখো।” সূরা বাক্বারা, আয়াত : ২৪৮, কানযুল ঈমান, পৃ. ৯০। প্রাগুক্ত, সূরা বাক্বারা, আয়াত : ২৪৮, কানযুল ঈমান, পৃ. ৯০। আল্লাহ তা’আলা বলেন, “আর (বলেছিলাম) ‘ইব্রাহীমের দাঁড়াবার স্থানকে নামাযের স্থানরূপে গ্রহণ করো।” সূরা বাক্বারা, আয়াত : ১২৫, কানযুল ঈমান, পৃ. ৪৮। আল্লাহ তা’আলা বলেন, “নিশ্চয় ‘সাফা’ও ‘মারওয়া’ আল্লাহ নিদর্শনগুলোর অন্তর্ভুক্ত।” সূরা বাক্বারা, আয়াত : ১৫৮, কানযুল ঈমান, পৃ. ৫৮। শাহ যুফর উদ্দিন বিহারী, জামিউর রিযভী (যা সহীহুল বিহারী নামে প্রসিদ্ধ), খ. ২, পৃ. ৩১২, সূত্র : বোখারী শরীফ, খতীবে তিবরিযী : মিশকাত, পৃ. ৬৯। খতীবে তিবরিযী : মিশকাত, পৃ. ৭১। খতীবে তিবরিযী : মিশকাত, পৃ. ৭১।
লেখক : উপাধ্যক্ষ, নূরুল উলূম কামিল মাদ্রাসা, রাঙ্গুনিয়া, চট্টগ্রাম।