প্রকাশ : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০
বিষ্ণুপুরে কপি চাষে সাফল্য
ফুলকপি ও বাঁধাকপি চাষ করে সাফল্য পেয়ে চলছেন চাষীরা। আগে ফুলকপি ও বাঁধাকপি চাষ করতে শীত মৌসুমের জন্যে অপেক্ষা করতে হতো। এখন যে কোনো সময়ই এ সবজি চাষ করা যায়। কিন্তু কৃষিনির্ভর চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা এখন বছরজুড়েই আবাদ করছেন ফুলকপি ও বাঁধাকপি। এতে কৃষকরা যেমন লাভবান হচ্ছেন, তেমনি কৃষি ক্ষেত্রেও সম্ভাবনার দ্বার খুলছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চাঁদপুর জেলার সদর উপজেলার বিষ্ণপুর, বাগাদী, বালিয়া ইউনিয়নের কিছু এলাকায় ফুলকপি চাষ করে সফল হয়েছেন কৃষকরা। ফুলকপি ও বাঁধাকপি চাষ করতে এক সময় শীতকালের জন্যে অপেক্ষা করতে হতো। কিন্তু এখন বছরজুড়েই আবাদ করছেন চাঁদপুর জেলার কৃষকরা। ফলে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। দিন দিন বাড়ছে কপি আবাদ।
চলতি মৌসুমে জেলার তিন উপজেলায় ৬৫ হেক্টর জমিতে ফুলকপি ও বাঁধাকপি আবাদ হয়েছে, যা এখন পর্যন্ত অসময়ে কপির সর্বোচ্চ আবাদ। এতে কৃষকরা যেমন আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন, তেমনি কৃষি ক্ষেত্রেও ঘটছে উন্নয়নের নতুন সম্ভাবনা। ফুলকপি ও বাঁধাকপিগুলো দেখতে বেশ চমৎকার এবং খেতে সুস্বাদু। বিষমুক্ত হওয়ার কারণে বাজারে এর চাহিদা বেশি। পাশাপাশি খুব বেশি কৃষক এ আবাদ না করায় ভালো দামে ব্যবসায়ীরা ক্রয় করেন। আবার অনেকে নিজেরাই স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি চট্টগ্রাম ও ঢাকাসহ বিভিন্ন মোকামে ভালো দামে বিক্রি করছেন। ফুলকপি অনেক ক্ষেত থেকেই ৬৫-৭০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। উৎপাদনে খরচ হয়েছে ২০-২৫ হাজার টাকা। এতে অল্প সময়ে ভালো লাভের মুখ দেখেছেন কৃষকরা। তবে অতিরিক্ত বর্ষা হলে ক্ষতির সম্মুখীন হন কৃষকরা। চলতি বছরে যেহেতু বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টি কম হয়েছে, তাই রোগবালাই কম হওয়ার পাশাপাশি পচার হাত থেকেও বেঁচে গেছে ক্ষেত।
কৃষি অফিস বলছে, অসময়ে ফুলকপি বাঁধাকপি চাষাবাদের জন্যে সঠিক পরামর্শ ও পরিচর্যার বিষয়ে দিক-নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন তারা। কপি মূলত শীতকালীন সবজি। তবে পরিশ্রমটা একটু বেশি করতে হয়।
চাঁদপুর সদর উপজেলার বিষ্ণপুর ইউনিয়নের দামোদরদী গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, চলতি মৌসুমে অতিরিক্ত বৃষ্টি না হওয়ায় ভালো লাভবান হয়েছেন তিনি। ১০ বিঘা জমিতে ফুলকপির আবাদ করেন চলতি মৌসুমে। প্রতি বিঘা কপি ক্ষেত থেকে তিনি প্রায় ৭০-৭২ হাজার টাকায় বিক্রি করেন আশা করছেন। বিঘাপ্রতি ৪০ হাজার টাকার ওপরে লাভ হবে তার।
ওই মাঠের আরেক কৃষক ফারুক হোসেন জানিয়েছেন, বিঘাপ্রতি ২০-২২ হাজার টাকা খরচ করে মাত্র ৯০ দিনের এ আবাদে ৬৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। অন্য যে কোনো ফসল আবাদের চেয়ে কপি লাভজনক বলে তিনি মনে করছেন। কারণ অল্প সময়ে, কম খরচে ঝামেলাহীনভাবে বেশি টাকা আয় করা যায়।
স্থানীয় ক্ষেত থেকে কপি ক্রয় করে জেলার বিভিন্ন বাজারে বিক্রয় করা ব্যবসায়ী মজিবুর রহমান জানান, ফুলকপি আবাদ সারা দেশে হয় না। আমি কপি কাটা শুরু হওয়ার আগেই এক বিঘা কপি ৬৪ হাজার টাকায় ক্রয় করি।