প্রকাশ : ১৭ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০
প্রাত্যহিক ভোরের ঘুম ভেঙ্গে ব্ল্যাক কফিতে চুমুক দিতে হঠাৎ করেই ড্রয়িং রুমের বুক সেলফে অনেক গল্প-উপন্যাসের বইগুলোর মাঝে দেখি একটি ম্যাগাজিন। ম্যাগাজিনটি দেখেই বুকের ভেতর এক অদ্ভুত অনুভূতি। আর তখনই ম্যাগাজিনটা নিয়ে বারান্দাতে বসলাম। ম্যাগাজিনের পাতা উল্টাতেই দেখি আমার প্রিয় ক্যাম্পাসের ছবি। আমাদের প্রিয় চাঁদপুর সরকারি কলেজ।
আর তখনই মনে পড়ে গেলো ঠিক ৪ বছর আগে ক্যাম্পাসের প্রথম দিনের কথা, সেই প্রথম দিন ফুটপাতের পথচারীরা রাস্তা পারাপারের সময় যেভাবে সাইনবোর্ড, বড় বড় দালান-কোঠা দেখে আমিও ঠিক তেমনিভাবে ক্যাম্পাসের এদিক-ওদিক দেখছি। একটু ভয়, একটু অস্বস্তি নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে একটি ভবনের সিঁড়ি বেয়ে উঠতেই দেখলাম ব্যবস্থাপনা বিভাগ।
দেখতে পেলাম একটি কক্ষ, আর কিছু অজানা মানুষ। অথচ কে জানতো এই কক্ষটি আর মানুষগুলো হয়ে যাবে সুন্দর স্মৃতির অংশ। সময়ের স্রোতে পেলাম প্রিয় শিক্ষকদের সান্নিধ্য আর কিছু ভালো বন্ধু।
প্রিয় স্যাররা পড়াশোনার পাশাপাশি শিখিয়েছেন কীভাবে দেশ ও মানুষের কাজে নিজেকে নিয়োজিত করা যায়। শিখিয়েছেন জীবনে হতাশ হলে চলবে না। পৃথিবীর সব কিছুর মধ্যে আনন্দ আছে যদি ওই আনন্দটা নিজের মধ্যে থাকে, আর দিয়েছেন অনেক উৎসাহ ছিলেন সবসময় পাশে।
আর ক্লাসের সেই অপরিচিত মানুষগুলোর সাথে আনন্দ, দুষ্টামি, একজন আরেকজনের সাথে মজা করতে করতে কবেই যে বন্ধু হয়ে গেলো বুঝতে পারলাম না। আসলেই পৃথিবীর সকল জিনিস পুরোনো হলে নষ্ট হয় কিন্তু বন্ধুত্ব এমন একটি জিনিস যত পুরানো হবে ততই গভীর হবে। এভাবেই ৪ বছর কীভাবে শেষ হয়ে গেলো বুঝতেই পারলাম না।
আমার আজও মনে পড়ে যেদিন আমার ক্যাম্পাসের শেষ দিন ছিলো, সেদিন মনে হলো কিছু মনে হয় ছেড়ে চলে যাচ্ছি। আসলেই ছেড়ে চলে যাচ্ছি প্রিয় ক্যাম্পাসের স্মৃতিময় দিনগুলো। আর ভাবছিলাম সময়টা থমকে গেলেই পারতো।
আজ হয়তো সেই ক্যাম্পাসের অনেকটা সময় ছেড়ে চলে এসেছি, কিন্তু সেই দিনগুলো এখনো স্মৃতির পাতায় সাজানো। ম্যাগাজিনের পাতায় প্রিয় স্যারদের এবং বন্ধুদের ছবি দেখে মনের ভেতরে এক প্রশান্তি। এই মানুষগুলোর সাথে কেটেছিলো জীবনের সুন্দরতম সময়। আর আমাদের প্রিয় ক্যাম্পাসের দিনগুলো বাঁধা থাকবে মনের ফ্রেমে আর লেখা থাকবে স্মৃতির পাতায়।