বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২২ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জে সংবাদকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের
  •   লক্ষ্মীপুরে মাদকসহ বাবা ও দুই ছেলে আটক
  •   চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন মামলার ৮ আসামী আটক
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার

প্রকাশ : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০

সমাজ গঠনে সাক্ষরতার প্রসার
মাছুম বিল্লাহ

৮ সেপ্টেম্বর ছিলো আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস। ইউনেস্কো কর্তৃক নির্ধারিত এ বছর সাক্ষরতা দিবসের প্রতিপাদ্য ‘পরিবর্তন ও শান্তিপূর্ণ সমাজ গঠনে সাক্ষরতার প্রসার’। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বর্তমানে দেশে সাক্ষরতার হার ৭৬ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। ২০২২ খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বরে এ হার ছিলো ৭৪ দশমিক ৬৬ শতাংশ। আর এক যুগ আগে দেশের সাক্ষরতার হার ছিলো ৫১ দশমিক ৭৭ শতাংশ। ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশ সরকারের যে সংবিধান প্রণীত হয় তার ১৭ নং অনুচেছদ দেশ থেকে নিরক্ষরতা দূরীকরণ এবং শিক্ষাকে অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক হিসেবে ঘোষণা করা হয়। সাক্ষরতা বিস্তারে ১৯৭২-এ স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো সাক্ষরতা দিবস উদযাপিত হয়। ১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দে ঠাকুরগাঁওয়ে সাক্ষরতা অভিযান শুরু হয়। ১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দে আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবসের প্রধান অনুষ্ঠানটি হয় ঠাকুরগাঁওয়ে। ওইদিন ঠাকুরগাঁওয়ের কচুবাড়ী-কৃষ্টপুর গ্রামকে বাংলাদেশের প্রথম নিরক্ষরতামুক্ত গ্রাম হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত মানুষদের সাক্ষরতা দানের উদ্দেশ্যেই ৮ সেপ্টেম্বর সাক্ষরতা দিবস পালিত হয়ে আসছে। এর সূত্রপাত হয়েছিলো সেই ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দের ৮-১৯ সেপ্টেম্বর ইরানের রাজধানী তেহরানে বিশ্ব সাক্ষরতা সম্মেলনে। ১৯৯১ সালে সাক্ষরতার হার ছিলো ৩৫ দশমিক ৩ শতাংশ। এ সময় দেশব্যাপী শিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে সমন্বিত উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা বিস্তার কার্যক্রম বা ইনফেপ নামে একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। তারপর ২০০১-এ সাক্ষরতার হার বেড়ে দাঁড়ায় ৪৭ দশমিক ৯ শতাংশ। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মৌলিক সাক্ষরতা প্রকল্পটি ২০১৪ খ্রিস্টাব্দে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের অনুমোদন পায়। আনুষ্ঠানিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষার মাধ্যমে সাক্ষরতা লাভ করানো এর উদ্দেশ্য। তবে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন উদ্যোগে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শতভাগ শিশুকে শিক্ষার আওতায় আনার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। দেশে বর্তমানে সাক্ষরতার হার ৭৩ দশমিক ৯ শতাংশ। প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ঝড়ে পড়া শিক্ষার্থীদের সেকেন্ড চান্স হিসেবে দশ লাখ শিশুকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া শেখানোর পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে ২০১৭ খ্রিস্টাব্দে পাইলটিং হিসেবে ছয় উপজেলার এক লাখ শিশুকে এর আওতায় আনা হয়েছে। পরবর্তীকালে ২৫০ উপজেলা ও ১৫টি শহরে পর্যায়ক্রমে আরও ৯ লাখ শিশুকে প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় আনা হবে। এগুলো সবই শতভাগ সাক্ষরতা অর্জনের প্রচেষ্টারই অংশ।

বিশ্বের ১৮৫টি দেশের ১৫৪ কোটি ২৪ লাখ ১২ হাজার শিক্ষার্থী করোনা মহামারির কারণে বিদ্যালয়ে যেতে পারেননি আঠারো মাস যার প্রভাব তাদের জীবনে এখনো প্রতীয়মান। ওই তালিকায় চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশে ভার্চুয়াল ক্লাস অর্থাৎ বিকল্প উপায়ে পাঠদানের প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হয়। যদিও এটি কোনোভাবেই সরাসারি পাঠদানের বিকল্প নয়। ব্র্যাক তার নিজস্ব উদ্ভাবনী পদ্ধতিতে প্রত্যন্ত অঞ্চলের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর শিশুদের বইয়ের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করার চেষ্টা করেছে। এভাবে কোভিড-১৯ মহামারি বিশ্বব্যাপী প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা পুনর্নির্মাণ করছে। জেনেভাভিত্তিক ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম বলছে, চীনের প্রায় ১২ কোটি শিক্ষার্থী সরাসরি টেলিভিশন সম্প্রচার থেকে বাড়িতে বসেই তাদের শেখার উপাদানগুলো পেয়েছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের একটি শীর্ষস্থানীয় শিক্ষামূলক উদ্ভাবক মিনার্ভা প্রজেক্টের কর্মকর্তা গ্লোরিয়া ট্যাম বলেন, করোনাভাইরাসের ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্তগুলো লাখ লাখ শিক্ষার্থীকে অস্থায়ী হোম স্কুলিংয়ের পরিস্থিতিতে নিয়ে গেছে। বিশেষ করে চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, ইতালি ও ইরানের মতো প্রবল আকারে ভাইরাস প্রভাবিত দেশগুলোকে। এ পরিবর্তন অবশ্যই কিছুটা অসুবিধার কারণ হয়েছে তবে, শিক্ষার নতুন এ উদ্ভাবনকে আমরা উৎসাহিত করছি। বিশ্বের প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষের ডিজিটাল অ্যকসেস ছিলো যা ডিজিটাল শিখন প্রক্রিয়ার বড় বাধা। কারণ, চল্লিশ শতাংশকে আমরা ছুঁতে পারিনি অর্থাৎ ডিজিটাল শিখনের আওতায় আনা যায়নি। বর্তমানে পরিস্থিতির অনেকটাই উন্নতি হয়েছে ডিজিটাল অ্যাকসেসের ক্ষেত্রে। আর করোনা তো বিদায় হয়েছেই। কিন্তু সে অনুযায়ী কি আমরা সাক্ষরতাসহ শিক্ষার মানে আগাতে পেরেছি?

বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় সাক্ষরতার ভূমিকা ব্যাপক, এটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মানবীয় অধিকার। ব্যক্তিগত ক্ষমতায়ন এবং সামাজিক ও মানবীয় উন্নয়নের হাতিয়ার হিসেবে গ্রহণযোগ্য। শিক্ষার সুযোগের বিষয়টি পুরোপুরি নির্ভর করে সাক্ষরতার ওপর। সাক্ষরতা হচ্ছে মৌলিক শিক্ষার ভিত্তি। ১৯৬৭ খ্রিস্টাব্দে ইউনেস্কো প্রথম সাক্ষরতার সংজ্ঞা দিলেও প্রতি দশকেই এই সংজ্ঞা পাল্টাতে হয়েছে, এটিই স্বাভাবিক। ১৯৯৩ খ্রিস্টাব্দে ইউনেস্কো এই সংজ্ঞাটি নির্ধারণ করে যে, ব্যক্তি নিজ ভাষায় সহজ ও ছোট বাক্য পড়তে পারবে, সহজ ও ছোট বাক্য লিখতে পারবে এবং দৈনন্দিন জীবনে সাধারণ হিসাব-নিকাশ করতে পারবে। কিন্তু এই সংজ্ঞাটিও এখন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। তার প্রমাণ আমরা কোভিড পরিস্থিতিতে পেয়ে গেছি। একজন ব্যক্তি ভালোভাবে বাংলা পড়তে পারলেন, সাধারণ যোগ-বিয়োগ পারলেন কিন্তু বর্তমানযুগের ডিজিটাল ডিভাইসগুলোর সঙ্গে পরিচিত নন, ব্যবহার করতে জানেন না, তাকে আমরা এই পরিস্থিতিতে সাক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন বলবো কি না তা ভেবে দেখার সময় এসেছে। একজন মানুষকে সাক্ষর বলা মানে তাকে একটি সার্টিফিকেট দেয়া যে, বর্তমান যুগের সঙ্গে তিনি তাল মেলাতে পারছেন। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে তিনি পারছেন না। কাজেই সাক্ষরতার সংজ্ঞা পাল্টে যাবে। আমাদের জীবন পাল্টে গেছে, শিক্ষাদানের পদ্ধতি, শিক্ষাগ্রহণের পদ্ধতিও অনেকটাই পাল্টে গেছে। আরো একটি বিষয় এখানে চলে আসে। সেটি হচ্ছে বৈশ্বিক এই প্রেক্ষাপটে শুধু নিজের দেশের ভাষায় যদি একজন লোক সাক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন হন, তাতে কিন্তু গ্লোবাল ভিলেজের নাগরিক হিসেবে প্রকৃত অর্থে তিনি সাক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন নন। কারণ, যেসব প্রয়োজনীয় তথ্য একজন ব্যক্তির ব্যক্তিগত, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক সেটি স্বাস্থ্য সম্পর্কিতই হোক আর নিরাপত্তা সম্পর্কিতই হোক তাকে কিন্তু জানতে হচ্ছে। আর সেটি জানার জন্য একটি গ্লোবাল ল্যাংগুয়েজের সঙ্গে পরিচিত তাকে হতে হচ্ছে। যেমন- এখন ফেসবুক, ইউটিউব, মেসেঞ্জার ইত্যাদি সামাজিক মাধ্যমে যা কিছু শেয়ার করা হয় সেই সাক্ষরতা কিন্তু ইংরেজিতেই করতে হয়। শুধু বাংলায় করলে নির্দিষ্ট গোষ্ঠী কিংবা রিজিয়ন কিংবা দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। কাজেই সাক্ষরতার সংজ্ঞা এখন ব্যাপক ও বিস্তৃত হতে বাধ্য।

গোটা পৃথিবীতে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ৭০ শতাংশের বেশি মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংযুক্ত। তরুণদের মধ্যে এ হার আরো বেশি, প্রায় ৯০ শতাংশ। বাংলাদেশে যারা ইন্টারনেট ব্যবহার করেন তাদের মধ্যে ৮০ শতাংশ মানুষের রয়েছে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট। ১৩ থেকে ১৭ বছরের ছেলে-মেয়েদের মধ্যে ৬০ শতাংশের বেশি অন্তত একটি সামাজিক যোগাযোগ প্রোফাইল রয়েছে। তারা দিনে দু ঘণ্টার বেশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যয় করে। ছাত্র-শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, শিশু-কিশোর, গৃহিণী, পেশাজীবী- এদের বেশির ভাগেরই এখন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। বিশ্বব্যাপী ইউটিউব ব্যবহারকারী মানুষের সংখ্যা ১৫০ কোটির বেশি, হোয়াটস্অ্যাপ ১২০ কোটির বেশি। আমরা ফেসবুক ব্যবহার করছি কেন? এর উত্তর খুব সহজ। অলস দেহে সোফায় বসে কিংবা বিছানায় গা এলিয়ে দিয়ে, ফ্যানের বাতাসে কিংবা এসির মধ্যে অথবা শীতের রাতে কাঁথা কম্বলের মধ্যে লুকিয়ে ফেসবুকে চাপ দিয়ে দেখতে পাচ্ছি কানাডা কিংবা অস্ট্রেলিয়ার কোন বন্ধু কী করছেন। সেখানকার আবহাওয়া, রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আমেরিকায় রাস্তায় কী হচ্ছে ইত্যাদি থেকে শুরু করে দেশের কোন জেলায় কী হচ্ছে। রাজধানীর কোন এলাকায় কী হচ্ছে, কোনো সন্ত্রাসী ধরা পড়েছে, কেন পড়েছে, কীভাবে ধরা পড়েছে। কোন আত্মীয় বা বন্ধু-বান্ধবের কী কী সুসংবাদ এসেছে, কী কী দুঃসংবাদ হলো, সবই এখন হাতের মুঠোয় দেখতে পাচ্ছি ফেসবুকের কল্যাণে। এ বিষয়গুলোকে সাক্ষরতার অবিচ্ছেদ্য অংশ ধরে নিলে সাক্ষরতার হার কতো হবে সে হিসেব নিশ্চয়ই আমাদের কোথাও সেভাবে নেই।

সাক্ষরতা হচ্ছে সেই সোনালি অস্ত্র যার মাধ্যমে একজন মানুষের ক্ষমতায়ন ঘটে এবং স্বাধীনভাবে চিন্তা করার সামর্থ্য অর্জিত হয়। নাম লিখতে পারার, নিজের সম্পর্কে লিখতে পারার মধ্যে সাক্ষরতা আর আটকে নেই। ডিজিটাল সভ্যতার এই যুগে সাক্ষরতাকে ভিন্নভাবে সংজ্ঞায়িত করতে হবে। তা না হলে বৈশ্বিক অগ্রগতি সমতালে তো নয়ই বরং বহু ব্যবধান নিয়ে এগোবে। ডিজিটালি পিছিয়ে পড়া দেশগুলোকে সেদিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। গ্লোবাল বিশ্বে সাক্ষরতার গুরুত্ব অপরিসীম। এর আত্মিক গুরুত্বের বাইরেও শিক্ষা একটি অধিকার হিসেবে, সাক্ষরতা একজন মানুষকে ক্ষমতায়িত করে, জীবনমান বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং এটি টেকসই উন্নয়নের চালিকাশক্তি। আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস মানবকেন্দ্রিক পুনরুদ্ধারের শক্ত ভিত গড়তে অবদান রাখে। সাক্ষরতা ও ডিজিটাল দক্ষতা এখন প্রয়োজন নিরক্ষর যুবক ও তরুণদের। এটি আরো আবিষ্কার করবে যে টেকনোলজি সমৃদ্ধ সাক্ষরতা, কাউকে বাদ দিয়ে নয়।

বৈশ্বিক খাদ্যব্যবস্থার মুখোমুখি চ্যালেঞ্জগুলো বড় হয়ে উঠছে এবং অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে শিশুদের প্রভাবিত করছে। ইতালির রোমে এ বছরের জুলাই মাসের ২৪ থেকে ২৬ তারিখ হয়ে যাওয়া ফুড সিস্টেম সামিটে যে চিত্র উঠে এসেছে তা অত্যন্ত ভয়াবহ। সামিটে বিশ্বব্যাপী শিশুরা যে অপুষ্টিতে ভুগছে তা দূর করার জন্য বিভিন্ন দেশের প্রাক-প্রাথমিক এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে স্কুল মিল কর্মসূচি চালু করা হয় এবং মূলত এর সফলতার দিক বিবেচনায় নিয়ে দেশে বিস্তৃতভাবে এটি চালু করার জন্য জাতিসংঘের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়। পূর্ববর্তী সামিটে স্কুল মিল চালু করা সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে নিয়ে একটি স্কুল মিল কোয়ালিশন গঠন করা হয়। বাংলাদেশ স্কুল মিলস কোয়লিশন-এর ৮৫তম সদস্য রাষ্ট্র। অদ্যাবধি তিন বিলিয়ন মানুষ নিম্ন মানের খাবার গ্রহণ করছে। নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে অর্ধেকেরও বেশি কিশোরী তাদের প্রয়োজনীয় মাইক্রোনিউটিয়েন্ট চাহিদা পূরণ করছে না। তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা ১৫৩ মিলিয়ন শিশুকে প্রভাবিত করছে এবং এ সংখ্যা আক্রান্ত সব মানুষের প্রায় অর্ধেক। সামিটের তথ্য অনুযায়ী আমরা আধুনিক ইতিহাসের সবচেয়ে গভীর শিক্ষা সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে ১০ বছর বয়সীদের প্রায় ৭০ শতাংশ একটি সাধারণ বাক্য পড়তে বা লিখতে পারে না এবং নিম্ন আয়ের দেশগুলোর প্রায় ৭৩ মিলিয়ন স্কুলছাত্রী ক্ষুধার্ত অবস্থায় স্কুলে যায়। এ দুটি বিষয় আজ অন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবসে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে ব্যক্তি থেকে রাষ্ট্র, রাষ্ট্র থেকে বিশ্বকে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। শুধুমাত্র আলোচনা, বেলুন ফুটানো আর শুধুই আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে দিবসটির প্রকৃত উদ্দেশ্য ও গুরুত্ব কোনোটিই বাস্তবায়িত হবে না।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়