বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২১ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জে সংবাদকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের
  •   লক্ষ্মীপুরে মাদকসহ বাবা ও দুই ছেলে আটক
  •   চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন মামলার ৮ আসামী আটক
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার

প্রকাশ : ১০ মে ২০২৩, ০০:০০

একজন আদর্শিক মানুষ শহীদ উল্লাহ স্যার
অনলাইন ডেস্ক

সালটা ২০০৯। চাঁদপুর সরকারি কলেজের সামনে আকবরী হোটেলের দোতালায় মাঝে মাঝেই আসা-যাওয়া আমার। এই জীবনে যা কিছু প্রাপ্তি আনুষ্ঠানিক শুরু ওখানেই হয়েছিল। পত্রিকায় লেখালেখি করছি ২০০৭-এর শুরু থেকে। বর্তমান নাম নয় অপর একটি নামে। চাঁদপুর-০৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়ার মালিকানাধীন ‘দৈনিক চাঁদপুর’ পত্রিকায় ফুলটাইম সাংবাদিকতা করার ইচ্ছা নিয়েই সেখানে আমার আনাগোনা। সাধারণত স্থানীয় পত্রিকায় সাংবাদিকতা করতে হলে নিয়োগপত্র প্রয়োজন হয় না। মৌখিক স্বীকৃতি আর একটা পরিচয়পত্র হলেই ওই প্রতিষ্ঠানের লোক হয়ে যাওয়া যায়। ন্যূনতম সম্মানীতে আমিও যুক্ত হলাম ‘দৈনিক চাঁদপুর’ পত্রিকার ফুলটাইম সাংবাদিক হিসেবে। পত্রিকাটির প্রধান সম্পাদক ছিলেন শহীদ উল্লাহ মাস্টার। চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রবীণ ও প্রাজ্ঞ রাজনৈতিক। তিনি ধীরলয়ে হাঁটতেন। চলাফেরা ছিল একজন আদর্শ শিক্ষকের মতই। বোধ করি আমার মত স্যারকে সবাই সম্মান করতেন।

পরিচয়টা পত্রিকা অফিসেই। তিনি তখন ‘সুপ্রভাত চাঁদপুর’ নামে নিয়মিত একটা কলাম লিখতেন। অফিসে বসেই কাগজ-কলম নিয়ে লিখতে বসতেন। কখনো কখনো বার্ধক্যের কারণে অফিসে আসতে পারতেন না। সেদিন ‘সুপ্রভাত চাঁদপুর’ প্রকাশ হতো না। আমি নিয়মিতই কলামটি পড়তাম এবং চাঁদপুর সম্পর্কে জানতাম। তাঁর লেখনীর ভাষা শব্দ বুনন এবং তথ্য উপস্থাপন ছিল অসাধারণ। কিভাবে যেন তিনি আমায় স্নেহের মায়ায় জড়িয়ে নিলেন। ঠিক মনে করতে পারছি না। তবে আমাকে অসীম স্নেহে আবদ্ধ করে রাখতেন বিষয়টি এখনো মনে পড়ে। হয়তো তিনি জানতেন তাঁর লেখা কলাম আমি নিয়মিত পড়তাম। মাঝে মাঝে আমাকে ডাকতেন কিন্তু খুব বেশি কিছু বলতেন না। দু-একবার কিছু তথ্য চেয়েছিলেন আমি সাধ্যের মধ্যে চেষ্টা করেছি তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করার। এরপর মাঝে মাঝে দেখা হতো- কথা হতো খুব কম। আমি ভালো আছি কি না? কেমন চলছে সাংবাদিকতা? কেমন লাগছে এসব প্রশ্নের মধ্যেই সব জিজ্ঞাসা সীমাবদ্ধ ছিল । একজন প্রবীণ রাজনৈতিক এর কাছ থেকে এর বেশি কিছু আমার প্রত্যাশাও ছিল না। এরপর বেশ কয়েকবছর দৈনিক চাঁদপুর পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ ছিল। শহীদ উল্ল্যাহ স্যারকে আর পত্রিকা অফিসে দেখা গেল না। মাঝে মাঝে জেলা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা হতো শুধু জানতে চাইতো কেমন আছি? আমি সালাম দিয়ে শুধু স্যারের স্বাস্থ্য সম্পর্কে জানতে চাইতাম। স্যার অসুস্থ ছিলেন কিন্তু মুখের চওড়া হাসি কখনো মলিন হতে দেখিনি। আমার চোখের আয়নায় এখনো স্যারের চুলহীন মাথা, গোলাকৃতি মুখ একজন নিরেট ভদ্র মানুষের অবয়ব ভেসে ওঠে। একদিন শুনি স্যার চলে গেছেন পরপারে। প্রস্থানের খবর আমাকে খুব বিষণ্ন করল। মন খারাপ হলো। অল্প কিছু সময়ের বাঁধনে জমানো স্মৃতি বারবার মনের জানালায় আলতো করে পরশ বুলিয়ে গেল। স্যারের জন্য দোয়া এবং শ্রদ্ধা জানানো ছাড়া আমার যে আর কিছু করার সাধ্য ছিল না। স্যারকে পরম শ্রদ্ধা। স্যার ভালো থাকুক পরপারে।

কাদের পলাশ : কবি ও গল্পকার; প্রকাশিত গ্রন্থ : ৬টি।

সম্পাদক ও প্রকাশক, দৈনিক শপথ; সাধারণ সম্পাদক, চাঁদপুর টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরাম।

* শিক্ষাঙ্গনে লেখা পাঠানোর ই-মেইল : [email protected]

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়