প্রকাশ : ২০ জুলাই ২০২৩, ০০:০০
চাঁদপুর শহরের সংস্কৃতিমনা পরিবারে জন্ম এক খুদে নৃত্য ও সংগীতশিল্পীর নাম সুরঞ্জনা দত্ত কুহু। কুহুর স্বপ্ন নিজেকে একজন প্রতিষ্ঠিত শিল্পী হিসেবে গড়ে তোলার। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে এবং বাবা-মায়ের স্বপ্নপূরণে সংগীত ও নৃত্যে সমানতালে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্যে শিশুকাল থেকে চেষ্টা করে যাচ্ছে কুহু। ইতিমধ্যে সে শিশুশিল্পী হিসেবে চাঁদপুর জেলায় বেশ সুনাম অর্জন করেছে। জেলা থেকে বিভাগীয় এবং জাতীয় পর্যায়ে বেশ ক’টি পুরস্কারও লাভ করেছে।
কুহুর জন্ম ২০০৯ সালের ২৮ মে চাঁদপুর শহরে। পিতা মৃত সুমন দত্ত, যার চাঁদপুরের সংস্কৃতি অঙ্গনে নিবেদিত কর্মী হিসেবে বেশ পরিচিতি ছিলো। মা সোমা দত্ত চাঁদপুরের খ্যাতিমান নৃত্যশিল্পী এবং ‘নৃত্যধারা’র অধ্যক্ষ।
কুহুর বাবার স্বপ্ন ছিলো মেয়েকে সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে গড়ে তোলা। বাবার স্বপ্নপূরণে চাঁদপুরের খ্যাতিমান সংগীতশিল্পী ইতু চক্রবর্তীর নিকট সংগীতে তার হাতেখড়ি। আর মা যেহেতু নৃত্যশিল্পী, তাই নৃত্যের হাতেখড়ি মা সোমা দত্তের কাছেই। পড়াশোনা শুরু করেন নবারুণ আদর্শ বিদ্যালয়ে। এরপর হাসান আলী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা। বর্তমানে মাতৃপীঠ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা হিসেবে কুহু ছোটবেলা থেকে চাঁদপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমির ছাত্রী। সে সংগীত ও নৃত্যে যে সকল শিক্ষকের কাছে তালিম নিয়েছে তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন শংকর আচার্য্য, মৃণাল সরকার, অনিতা কর্মকার ও খালেক বিশ্বাস। এছাড়া সংগীত ও নৃত্যে ভারতের মধুমিতা শীল ও সুমন মণ্ডলের কাছ থেকেও তালিম গ্রহণ করে।
কুহুর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নৃত্য বা সংগীতে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করে চাঁদপুরকে একটি সাংস্কৃতিক নগর হিসেবে গড়ে তোলা। কুহু বলেন, সবাই তো উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে চিকিৎসক বা ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়, আমি একটু ব্যতিক্রম হতে চাই।
এই শিশুশিল্পীর জীবনে প্রথম মঞ্চে উঠা এবং প্রথম প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার অনুষ্ঠানটি হচ্ছে চাঁদপুরের প্রসিদ্ধ চতুরঙ্গ সাংস্কৃতিক সংগঠনের আয়োজনে জাতীয় ইলিশ উৎসবের নৃত্য প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা এবং পুরস্কার অর্জন।
শিশুশিল্পী হিসেবে কুহু বঙ্গবন্ধু শিশু-কিশোর মেলার আয়োজনে সাধারণ ও সৃজনশীল নৃত্যে অংশ নিয়ে জেলা পর্যায় থেকে জাতীয় পর্যায়ে বেশ ক’বার পুরস্কার লাভ করে। তন্মধ্যে ২০১৬ সালে বঙ্গবন্ধু শিশু-কিশোর মেলার আয়োজনে চাঁদপুর জেলায় সেরা হয়ে সাধারণ নৃত্যে রৌপ্য, ২০১৭ সালে রৌপ্য ও ২০১৮ সালে ব্রোঞ্জ পদক লাভ করে। এছাড়াও জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ উপলক্ষে জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতায় ২০২২ ও ২০২৩ সালে সৃজনশীল ও সাধারণ নৃত্যে চট্টগ্রাম বিভাগীয় পর্যায়ে দুবার রানারআপ হয়। ২০১৮ সালে নিশা সওদাগরের মনপুরি পদক লাভ করে। সুরঞ্জনা কুহু চাঁদপুরে আয়োজিত নানা প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে কৃতিত্বের স্বাক্ষর অব্যাহত রেখে চলছে। আগামীর পথচলায় সে সকলের নিকট আশীর্বাদ কামনা করেছে।